দাবি আদায়ের আন্দোলনে যোগ না দেওয়ায় একটি কারখানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে বহিরাগত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কামরাঙ্গাচলা এলাকার ল্যাভেন্ডার গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় ঘটনাটি ঘটে। এরপরই কারখানা ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে আইন শৃঙ্খলার রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। 

এদিকে, হামলার ঘটনায় দুই শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাদের কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে । 

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে হামলায় ৩ ডিবি পুলিশ আহত

ছাত্রদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

কারখানা কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও শ্রমিকরা জানান, উপজেলার তেলিচালা, কামরাঙ্গারচালা, মৌচাকসহ বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকরা প্রায়ই ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে। ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার ও এক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনার বিচার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। ওই সময় তেলিরচালা এলাকার এটিএস অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা আশপাশের কারখানার শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান। এ সময় শ্রমিকরা কামরাঙ্গিরচালা এলাকার ল্যাভেন্ডার গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের তাদের সঙ্গে যোগ দিতে আহ্বান জানায়। ওই কারখানার শ্রমিকরা তাদের সঙ্গে যোগ না দিয়ে উল্টো বহিরাগত শ্রমিকদের ওপর ইট নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে বহিরাগত শ্রমিকরা চলে যায়।

ওই ঘটনার জেরে তেলিরচালা এলাকার এটিএস অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ল্যাভেন্ডার গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানায় হামলা চালায়। তারা প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং কারখানার ভেতরে থাকা গার্মেন্টস ভবনের গ্লাস, মূল্যবান মালামাল, আসবাবপত্র ও যানবাহন ভাংচুর করে। 

খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। হামলায় দুই জন শ্রমিক আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ পাঠানো হয়। কারখানায় হামলা ভাঙচুরের ঘটনার পর আশপাশের কয়েকটি কারখানা আজকের জন্য ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

কারখানার নিরাপত্তাকর্মীদের সুপারভাইজার মোহাম্মদ কামাল বলেন, “গতকাল বহিরাগত শ্রমিকদের কাউন্টার অ্যাটাক করা হয়। এরই জেরে আজকে এ টিএস কারখানাসহ অন্য বহিরাগত শ্রমিকরা আমাদের কারখানায় হামলা চালিয়েছে। তাদের প্রতিহত করা হলে আমাদের ওপরও হামলা চালায়। পরে তারা গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকে। কারখানায় ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।” 

ঘটনার খবর পেয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহাম্মেদ, গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম, কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ল্যাভেন্ডার গার্মেন্টস লিমিটেড কারখানার এইচআর এডমিন মো.

আখতারুজ্জামান বলেন, “বহিরাগত শ্রমিকরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, তিন কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। ওই ঘটনার পর কারখানা ছুটি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কারখানা খোলার ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”

কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, “হামলার ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে আরো নানা ধরনের কারণও থাকতে পারে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।” 

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র উপজ ল এল ক র র ঘটন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই

দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’

এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ