অস্ত্রপচার শেষে গানে ফিরছেন সাবিনা ইয়াসমীন
Published: 22nd, January 2025 GMT
২০২৩ সালের পরে মঞ্চে গান গাইতে দেখা যায়নি বরেণ্য সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন। দীর্ঘদিন ওরাল ক্যান্সারে ভুগছিলেন এই শিল্পী। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুরে তার অস্ত্রোপচার হয়। এরপরে চার মাসে ৩০টি রেডিওথেরাপি নিয়েছেন তিনি। কেবল কাছের মানুষেরাই শুধু জানতেন এসব তথ্য। সাবিনা ইয়াসমীন জানান, এটা ছিল কঠিন এক যুদ্ধ। তবে তিনি মনোবল হারাননি।
চিকিৎসা শেষে গত মে মাসে ঢাকায় ফেরেন সাবিনা। ফলোআপ করাতে এরপরও একাধিকবার সিঙ্গাপুর যেতে হয়েছে। আপাতত যাওয়ার আর দরকার পড়ছে না—বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘শেষ চার মাস অনেক কঠিন সময় ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত ও দেশবাসীর দোয়ায় আমি এই অবস্থা কাটিয়ে উঠবো। ভালো মানে চিকিৎসা পেয়েছি। এ সময় আমার বন্ধু, ছোট বোন যাই বলি না কেন সে হচ্ছে মিলিয়া সাবেদ। সিঙ্গাপুরে রেডিওথেরাপির পুরোটা সময় ওর বাসায় ছিলাম। আমার জন্য ও যা করে যাচ্ছে তার ঋণ শোধ করতে পারবো না।’’
৩১ জানুয়ারি ও আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় দুটি বড় অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার কথা রয়েছে সাবিনা ইয়াসমীনের। এরপর চট্টগ্রামেও স্টেজ শো করবেন তিনি। প্রথম অনুষ্ঠানে নিজের পছন্দের গান যেমন শোনাবেন, তেমনি উপস্থিত শ্রোতাদের অনুরোধের গানও গাইবেন।
দীর্ঘ সময় পরে মঞ্চে গান গাওয়া নিয়ে এই শিল্পী জানিয়েছেন, আল্লাহর রহমতে গানে ফিরছেন। গান ছাড়া তিনি কিছু ভাবতে পারেন না। গানেই আনন্দ খুঁজে পান। মঞ্চে গান গাওয়ার পাশাপাশি নতুন গান রেকর্ডিংয়ের পরিকল্পনাও রয়েছে তার। স্টেজ শোর প্রস্তুতি হিসেবে ২৬, ২৭ ও ২৮ জানুয়ারি টানা তিন দিন যন্ত্রশিল্পীদের নিয়ে মহড়ায় অংশ নেবেন।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ সিনেমায় প্রথম গান করেন সাবিনা ইয়াসমীন। তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৩ বছর। সর্বশেষ ২০২০ সালে কবরী পরিচালিত ‘এই তুমি সেই তুমি’ ছবিতে কণ্ঠ দেন। শুধু তা-ই নয়, প্রথমবার সুরকার হিসেবে সিনেমাটির চারটি গানের সুরও করেন সাবিনা ইয়াসমীন। দীর্ঘ সংগীতজীবনে এটিই তার একমাত্র সুর ও সংগীত পরিচালনা।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আ.লীগের রাজনীতি করব না: কাঠগড়ায় কামাল মজুমদার
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, ‘আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি করব না। আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই। প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও পদত্যাগ করলাম।’
আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে কাফরুল থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়।
এদিন আদালতে তোলার পর কাঠগড়ায় রাখা হয় তাকে। এরপর সকাল ১০টা ৭ মিনিটে বিচারক এজলাসে আসেন। এরপর বিচারকের উদ্দেশ্যে কান্নাজড়িত কণ্ঠে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ‘আমি ন্যায় বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমার ৭৬ বয়স, আমি ডায়াবেটিসের রোগী। চোখের ৭০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। আমার পরিবার সম্পর্কে কোনো খোঁজ খবর নিতে পারছি না। তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আপনার (বিচারক) কাছে আমার আবেদন, আপনার কাছে সুবিচার চাই। একের পর এক মামলা দিয়ে আমাকে অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন নাতি নাতনিদের নিয়ে খেলা করার সময়। কিন্তু জেলখানায় অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন আল্লাহকে ডাকা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারা কর্তৃপক্ষ আমাকে ডিজিটাল কুরআন ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দিচ্ছে না। আমাকে ডিজিটাল কুরআন, ডায়াবেটিসের ওষুধ ও ডায়াবেটিস মাপার যন্ত্র দেওয়া হোক।’
এরপর শুরু হয় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনের ওপর শুনানি। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক কাফরুল থানার এক হত্যা মামলায় শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। গ্রেপ্তার দেখানো অন্যরা হলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অপর সাবেক আইজিপি এ. কে. এম শহিদুল হক। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
পরে কাঠগড়া থেকে নামার সময় কামাল আহমেদ মজুমদার সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘রাজনীতি থেকে একেবারে অব্যাহতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্যপদ থেকেও অব্যাহতি। আমার দলীয় কোনো পদ নেই। ৭৬ বছর বয়সে রাজনীতি করা যায় না। আমরা চাই নতুন নেতৃত্ব আসুক।’ এরপর তাকেসহ অন্যান্য আসামিদের সিএমএম আদালতের হাজতখানা প্রবেশ করানো হয়।
গত ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে বারেটার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে বিভিন্ন হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।