আজ থেকে শুরু ভারত-ইংল্যান্ড সাদা বলের সিরিজ। পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচ কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। গত বছর টি২০ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এই প্রথম ঘরের মাটিতে কুড়ি ওভারের ম্যাচ খেলবে ভারত।
দুই তারকাখচিত দলের ধুন্ধুমার লড়াইয়ের দিকে যে সকলেরই নজর থাকবে তা কিন্তু বলাই বাহুল্য। ভারতের নেতৃত্বে সূর্যকুমার যাদব। বিশ্বকাপ জিতেই টি২০ থেকে অবসর নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও রবীন্দ্র জাদেজা।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফেভারিট হয়েই মাঠে নামবে ভারত। তবে সব স্পটলাইট থাকবে ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামির ওপর। ইনজুরি কাটিয়ে এ ম্যাচ দিয়ে দেড় বছর পর ফিরছেন পেসার মোহাম্মদ শামি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপে সর্বশেষ খেলেছিলেন শামি। ওই আসরে সর্বোচ্চ ২৪ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি।
শামির প্রত্যাবর্তন নিয়ে ভারতের টি২০ দলের সহ-অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য সত্যিই একটি ভালো খবর। আশা করি সে বিশ্বকাপে যা করেছে সেটি ধরে রাখবে।’
এখন পর্যন্ত টি২০তে ২৪ ম্যাচ খেলেছে ভারত ও ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ভারতের জয় ১৩টিতে এবং ইংলিশদের ১১টিতে। ২০২২ সালে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ইংল্যান্ডের মাটিতে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ভারত।
এই সিরিজ দিয়ে সাদা বলের ফরম্যাটে ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম যুগে প্রবেশ করছে ইংল্যান্ড। ২০২৩ সালের ওয়ানডে ও ২০২৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় কোচের পদ থেকে ম্যাথু মটকে সরিয়ে দেয় ইংল্যান্ড। তার জায়গায় ম্যাককুলামের কাঁধে ওয়ানডে ও টি২০ ফরম্যাটের দায়িত্ব তুলে দেয় ইসিবি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের ই-কমার্স: কোথায় আছি, কোথায় যেতে চাই
পর্ব–১
একসময় বাংলাদেশের ব্যবসা মানেই ছিল দোকানপাট আর মেলায় বিকিকিনি। কিন্তু ডিজিটাল যুগের হাতছানিতে আজ সেই বাণিজ্য এসেছে মোবাইলের পর্দায়, ল্যাপটপের ক্লিকে। ই-কমার্স এখন আর বিলাসিতা নয়, এটি মানুষের নিত্যব্যবহার্য। দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা এই পরিবর্তনের প্রধান চালিকা শক্তি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এত দূর এসেও আমরা কি যথেষ্ট প্রস্তুত? আমাদের বর্তমান অবস্থান কোথায়, আর সামনে যাওয়ার পথ কী?
বাংলাদেশে ই-কমার্সের অগ্রযাত্রা
বাংলাদেশে ই-কমার্সের সূচনা হয় মূলত ২০০৯-১০ সাল থেকে। প্রথম দিকে কিছু ওয়েবসাইট–নির্ভর ব্যবসা শুরু হলেও ফেসবুকের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–নির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসার জোয়ার আসে। বর্তমানে প্রায় ২ লাখের বেশি ই-কমার্স উদ্যোগ সক্রিয়, যার মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি ফেসবুকভিত্তিক। (সূত্র: ই–ক্যাব অ্যানুয়াল রিপোর্ট ২০২৩)
মোবাইল আর্থিক সেবার ভূমিকা
ই-কমার্সের প্রসারে বিকাশ, নগদ, রকেটের মতো মোবাইল আর্থিক সেবার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, প্রতিদিন গড়ে ৫–৬ লাখ অনলাইন লেনদেন হয়, যার অধিকাংশই ই-কমার্স সম্পর্কিত। এই প্রবাহ গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত ই-কমার্স বিস্তারের রাস্তা তৈরি করেছে।
কোভিড-১৯ এবং ই-কমার্স বিপ্লব
কোভিড-১৯ মহামারিকালে যখন মানুষ ঘরবন্দী ছিল, তখন ই-কমার্সই হয়ে ওঠে প্রধান কেনাকাটার মাধ্যম। খাদ্যপণ্য, ওষুধ, পোশাক, এমনকি গৃহস্থালিসামগ্রীর চাহিদা অনলাইনে দ্রুত বেড়ে যায়। লাইটক্যাসল পার্টনারসের গবেষণামতে, কোভিড–পূর্ব সময়ের তুলনায় ই-কমার্স লেনদেন তখন ৩০–৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
অর্জন এবং সম্ভাবনা
* কর্মসংস্থান: প্রায় ২০–২৫ লাখ মানুষ সরাসরি বা পরোক্ষভাবে ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত। (ই–ক্যাব, ২০২৩)
* নারী ক্ষমতায়ন: ৫০ হাজারের বেশি নারী উদ্যোক্তা অনলাইন ব্যবসায় সক্রিয়।
* এসএমই অন্তর্ভুক্তি: প্রায় ৪০ শতাংশ ই-কমার্স উদ্যোগ এসএমই মালিকানাধীন।
* ফিনটেক বিস্তার: ৯৫ শতাংশ লেনদেন এখন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন হচ্ছে। (বাংলাদেশ ব্যাংক রিপোর্ট ২০২৩)
* লজিস্টিকস উন্নয়ন: পেপারফ্লাই, রেডএক্স, পাঠাও কুরিয়ার সেবা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
মূল চ্যালেঞ্জ
* গ্রাহক আস্থা সংকট: অনিয়মিত পণ্য সরবরাহ, ভুয়া বিজ্ঞাপন ও টাকা ফেরত (রিফান্ড) জটিলতা এখনো বড় সমস্যা।
* ডিজিটাল নিরাপত্তাঝুঁকি: সাইবার নিরাপত্তার দুর্বলতার কারণে ব্যক্তিগত তথ্য চুরির ঝুঁকি রয়েছে।
* রেজিস্ট্রেশন ও করের জটিলতা: এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসায়িক লাইসেন্স ও ট্যাক্স রেজিম সহজ নয়।
* আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের বাধা: পেপ্যাল, স্ট্রাইপের মতো বৈশ্বিক লেনদেন অনুপস্থিতি।
* দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি: ই-কমার্স পরিচালন, ডিজিটাল বিপণন ও ডেটা অ্যানালিটিকসে দক্ষতা প্রয়োজন।
মোহাম্মদ নূরুজ্জামান