মাঘের তীব্র শীতে আবারও স্থবির হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটের জনজীবন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বাতাসের সঙ্গে হাড়কাঁপানো শীত জেলার সর্বত্র জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে পশ্চিমা বাতাস বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের প্রকোপ। মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। তবুও জীবিকার প্রয়োজনে বের হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ।

মঙ্গলবার সকাল থেকে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। এতে বস্তিবাসী ও ছিন্নমূল মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। 

বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আজ বুধবার জয়পুরহাটসহ নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা আজ একটু বেশি হলেও কুয়াশা বেশি। তাই কুয়াশা পড়ছে হালকা বৃষ্টির মত। এর সঙ্গে শীত বাড়তে পারে।

সদর উপজেলার ইকরগারা গ্রামের মোজাহিদ বলেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। হাত-পা কাজ করছে না। কিন্তু আমাদের তো করার কিছু নেই। জীবিকার তাগিদে বের হতেই হবে।

জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাসচালক বায়েজিদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার থেকে এখন পর্যন্ত ঘন কুয়াশা। সড়কে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। যাত্রীও কম। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত বাস চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।  

এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। এছাড়া সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। 

জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.

রাশেদ মোবারক জুয়েল বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শীত বাড়ায় শিশু ও বয়স্কদের ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার

কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে, কেউবা বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ ঘুরে ঘুরে দেখছেন হাজার বছরের পুরোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, আবার কেউ মুঠোফোনে সেলফি ও গ্রুপ ছবি তুলছেন। ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের এমন উপচে পড়া ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে নওগাঁর বদলগাছীতে অবস্থিত ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে হাজারো দর্শনার্থী ছুটে আসছেন ঐতিহাসিক এই স্থানে।

ঈদুল ফিতরের দিন গত সোমবার ও ঈদের পরদিন গতকাল মঙ্গলবার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে মানুষের ঢল নেমেছিল। দুই দিনেই বিক্রি হয়েছে ১৪ লাখ ৭০ হাজার টাকার টিকিট। গতবারের মতো এবারও টিকিটের মূল্য ৩০ টাকা করা হয়েছে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য টিকিট প্রয়োজন হয় না।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘর কাস্টডিয়ানের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সোমবার সকাল ১০টা থেকে দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হয়। এদিন ১৮ হাজার ৬৭৮ জন দর্শনার্থী প্রবেশ করেন এবং টিকিট বিক্রি হয় ৫ লাখ ৮০ হাজার ৩৮০ টাকার। ঈদের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল ১৫ হাজার ৯৪৮, আর টিকিট বিক্রি হয়েছে ৪ লাখ ৯০ হাজার ১৭০ টাকার। জাদুঘর কর্তৃপক্ষের ধারণা, ঈদের ছুটির তৃতীয় দিন আজ বুধবারও দর্শনার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে।

ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় অবস্থিত হলেও এটি জয়পুরহাট জেলা শহরের কাছাকাছি। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে পাহাড়পুর মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। জয়পুরহাট রেলস্টেশন থেকে দূরত্ব ১০ কিলোমিটার আর নওগাঁ জেলা শহর থেকে এটি ৩২ কিলোমিটার দূরে। এ কারণে অনেকেই সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথে জয়পুরহাট হয়ে পাহাড়পুরে যাচ্ছেন। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৌদ্ধবিহারের বিভিন্ন পয়েন্টে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া যানজট এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে ঘুরে ঘুরে আনন্দ উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার