বৃষ্টির মত ঝরছে কুয়াশা, হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন
Published: 22nd, January 2025 GMT
মাঘের তীব্র শীতে আবারও স্থবির হয়ে পড়েছে জয়পুরহাটের জনজীবন। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বাতাসের সঙ্গে হাড়কাঁপানো শীত জেলার সর্বত্র জেঁকে বসেছে। ঘন কুয়াশার সঙ্গে পশ্চিমা বাতাস বাড়িয়ে দিয়েছে শীতের প্রকোপ। মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। তবুও জীবিকার প্রয়োজনে বের হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ।
মঙ্গলবার সকাল থেকে আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। এতে বস্তিবাসী ও ছিন্নমূল মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে।
বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, আজ বুধবার জয়পুরহাটসহ নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিনের তুলনায় তাপমাত্রা আজ একটু বেশি হলেও কুয়াশা বেশি। তাই কুয়াশা পড়ছে হালকা বৃষ্টির মত। এর সঙ্গে শীত বাড়তে পারে।
সদর উপজেলার ইকরগারা গ্রামের মোজাহিদ বলেন, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়া মুশকিল হয়ে গেছে। হাত-পা কাজ করছে না। কিন্তু আমাদের তো করার কিছু নেই। জীবিকার তাগিদে বের হতেই হবে।
জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাসচালক বায়েজিদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার থেকে এখন পর্যন্ত ঘন কুয়াশা। সড়কে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে বাস চালাতে হচ্ছে। যাত্রীও কম। এ অবস্থা চলতে থাকলে হয়ত বাস চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিনে হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। এছাড়া সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।