গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয় স্থানীয় সময় গত রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে। এরপর ৩ দিনে অঞ্চলটিতে প্রবেশ করেছে প্রায় আড়াই হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৯০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গাজা এবং পশ্চিম তীরের জন্য জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় সাহায্য কর্মকর্তা মুহান্নাদ হাদি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত কোনো আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা যায়নি। ছোটখাটো লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, তবে ‘আগের মতো নয়’।

আরো পড়ুন:

৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিল ইসরায়েল

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ঘোষণা ইসরায়েলের

মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি ছিটমহল পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এটি সংঘবদ্ধ অপরাধ নয়। খাবারের ঝুড়ি নেওয়ার চেষ্টা করে শিশুরা কিছু ট্রাকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আরো কিছু লোক ছিল (যারা) বোতলজাত পানি নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।”

“আশা করি গাজার মানুষ যখন বুঝতে পারবে যে, আমাদের সবার জন্য পর্যাপ্ত সাহায্য থাকবে, তখন কয়েক দিনের মধ্যেই এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।” 

ইসরায়েল এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির গ্যারান্টার- যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার ৮৯৭টি ত্রাণ ট্রাক গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে। এর আগের দিন সোমবার ৯১৫টি এবং যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রবিবার ৬৩০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছিল গাজায়। 

যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ছয় সপ্তাহে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ গাজার প্রবেশের অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন, যার মধ্যে ৫০টি জ্বালানি বহনকারী ট্রাকও রয়েছে। এই ট্রাকগুলোর অর্ধেক গাজার উত্তরে যাওয়ার কথা, যেখানে দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

ওসিএইচএ মঙ্গলবার বলেছে, গাজায় মানবিক অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে খাদ্য সহায়তা, বেকারি খোলা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, হাসপাতাল পুনঃস্থাপন, পানির লাইন মেরামত, আশ্রয়কেন্দ্র মেরামতের জন্য উপকরণ আনা এবং পরিবারগুলোকে পুনর্মিলন করা।

প্রসঙ্গত, ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজা উপত্যকায় বসবাস করেন প্রায় ২২ লাখ ফিলিস্তিনি। উপত্যকায় বেকারত্ব প্রকট এবং বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের এক তৃতীয়াংশই জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার পাঠানো খাদ্য ও অর্থ সহায়তার ওপর সরাসরি নির্ভরশীল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের হামলার পর গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ১৫ মাস ধরে চলা সেই ভয়াবহ অভিযানে গাজায় নিয়মিত ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়নি আইডিএফ।

সামরিক অভিযানের সময় আইডিএফ গাজায় ত্রাণের প্রবেশ সংকুচিত করায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন গাজার বাসিন্দারা। গত ১৫ মাসে গাজায় যে প্রায় অর্ধলাখ মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের একাংশের প্রাণহানির কারণ খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

শিবগঞ্জ সীমান্তে পেট্রোল বোমা ও ককটেলের বড় চালান আটক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে বিস্ফোরকের একটি বড় চালান আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। দেশকে অস্থিতিশীল করতে চোরাইপথে ভারত থেকে আনা উপকরণ দিয়ে বানানো এসব সরঞ্জাম ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে বিজিবির।

সীমান্ত বাহিনীটির দাবি, বোমাগুলো দেশীয়ভাবে তৈরির পর তা বন্দর এলাকা থেকে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে পাচার হওয়ার আগেই গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তা আটকে দেওয়া হয়।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চকপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৯টি ককটেল এবং ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের একটি আভিযানিক দল। রাত ৮টায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।

তিনি জানান, দুটি প্লাস্টিকের ক্যারেটসহ চকপাড়া সীমান্তের ১৮৪ মেইন পিলার হতে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে কয়লাবাড়ি ট্রাক টার্মিনাল এলাকায় দুটি প্লাস্টিকের ক্যারেটসহ দুই ব্যক্তি দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় বিজিবির একটি অভিযানিক দল ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই তারা পালিয়ে গেলে একটি ক্যারেটে তল্লাশি চালিয়ে লাল স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৯৯টি ককটেল এবং অপর ক্যারেট থেকে ৪০টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে।

তিনি আরও জানান, পেট্রোল বোমাগুলো কোকাকোলা বা এ ধরনের কাঁচের বোতলে বানানো হয়েছে এবং ককটেলগুলো জর্দ্দার কোটায় দেশীয় প্রযুক্তিতে বানানো হয়েছে।

অধিনায়কের দাবি, এসব বিস্ফোরক ভারত থেকে না আনলেও গান পাউডারসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক উপকরণ সীমান্ত দিয়ে আনার পর সন্ত্রাসীরা সীমান্ত এলাকায় বোমা তৈরির পর সেগুলো সোনামসজিদ বন্দর রুট ব্যবসার করে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে ট্রাকে করে দেশের অভ্যন্তরে পাচারের চেষ্টা করছিল। তবে গোয়েন্দা নজরদারির কারণে সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এসব কাজে জড়িতদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। এ ঘটনায় জব্দকৃত বোমাগুলো শিবগঞ্জ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ