যুদ্ধবিরতির পর ৩ দিনে গাজায় ঢুকল আড়াই হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক
Published: 22nd, January 2025 GMT
গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয় স্থানীয় সময় গত রবিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে। এরপর ৩ দিনে অঞ্চলটিতে প্রবেশ করেছে প্রায় আড়াই হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৯০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় প্রবেশ করে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গাজা এবং পশ্চিম তীরের জন্য জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় সাহায্য কর্মকর্তা মুহান্নাদ হাদি বলেছেন, এখনও পর্যন্ত কোনো আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা দেখা যায়নি। ছোটখাটো লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে, তবে ‘আগের মতো নয়’।
আরো পড়ুন:
৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর, ঘোষণা ইসরায়েলের
মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি ছিটমহল পরিদর্শনের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এটি সংঘবদ্ধ অপরাধ নয়। খাবারের ঝুড়ি নেওয়ার চেষ্টা করে শিশুরা কিছু ট্রাকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আরো কিছু লোক ছিল (যারা) বোতলজাত পানি নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।”
“আশা করি গাজার মানুষ যখন বুঝতে পারবে যে, আমাদের সবার জন্য পর্যাপ্ত সাহায্য থাকবে, তখন কয়েক দিনের মধ্যেই এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।”
ইসরায়েল এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির গ্যারান্টার- যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাত দিয়ে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (ওসিএইচএ ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার ৮৯৭টি ত্রাণ ট্রাক গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে। এর আগের দিন সোমবার ৯১৫টি এবং যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন রবিবার ৬৩০টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছিল গাজায়।
যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ছয় সপ্তাহে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ গাজার প্রবেশের অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন, যার মধ্যে ৫০টি জ্বালানি বহনকারী ট্রাকও রয়েছে। এই ট্রাকগুলোর অর্ধেক গাজার উত্তরে যাওয়ার কথা, যেখানে দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ওসিএইচএ মঙ্গলবার বলেছে, গাজায় মানবিক অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে খাদ্য সহায়তা, বেকারি খোলা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, হাসপাতাল পুনঃস্থাপন, পানির লাইন মেরামত, আশ্রয়কেন্দ্র মেরামতের জন্য উপকরণ আনা এবং পরিবারগুলোকে পুনর্মিলন করা।
প্রসঙ্গত, ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের গাজা উপত্যকায় বসবাস করেন প্রায় ২২ লাখ ফিলিস্তিনি। উপত্যকায় বেকারত্ব প্রকট এবং বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের এক তৃতীয়াংশই জাতিসংঘ ও অন্যান্য দাতা দেশ ও সংস্থার পাঠানো খাদ্য ও অর্থ সহায়তার ওপর সরাসরি নির্ভরশীল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের হামলার পর গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ১৫ মাস ধরে চলা সেই ভয়াবহ অভিযানে গাজায় নিয়মিত ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়নি আইডিএফ।
সামরিক অভিযানের সময় আইডিএফ গাজায় ত্রাণের প্রবেশ সংকুচিত করায় মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন গাজার বাসিন্দারা। গত ১৫ মাসে গাজায় যে প্রায় অর্ধলাখ মানুষ নিহত হয়েছেন, তাদের একাংশের প্রাণহানির কারণ খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’