দেশের গণতান্ত্রিক উত্তোরণে সহায়তা করবে জার্মান সরকার
Published: 22nd, January 2025 GMT
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তোরণ প্রক্রিয়ায় জার্মান সরকার সর্বাত্মক সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে জার্মান চ্যান্সেলর এ কথা বলেন।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচি সম্পর্কে জার্মান চ্যান্সেলরকে অবহিত করেন। এসময় ওলাফ শলৎস প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, “আপনারা নিশ্চিন্ত থাকুন যে আমরা আপনাদের সমর্থন করব।”
প্রধান উপদেষ্টা জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরিতে সহায়তার লক্ষ্যে তিনি একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করেছেন। ছয়টি প্রধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই কমিশন কাজ করছে।
তিনি আরও জানান, ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর, রাজনৈতিক দলগুলো ‘জুলাই সনদ’এ সই করবে, যা জুলাই-আগস্টের ছাত্র- গণঅভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক চেতনার ভিত্তিতে তৈরি হবে। উভয় নেতা জুলাই বিপ্লবের পটভূমি, বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট এবং মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
বাংলাদেশের তরুণরা কীভাবে জুলাই বিপ্লবে যোগ দিয়ে দীর্ঘদিনের দুর্নীতিবাজ শাসককে ক্ষমতাচ্যুত করেছে বৈঠকে তা তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “১২ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী তার মা’কে একটি চিঠি লিখে আন্দোলনে যোগ দেয় এবং পরে শাহাদাত বরণ করে।”
অধ্যাপক ইউনূস দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক সম্প্রসারণের আহ্বান জানান এবং জার্মানের একটি ব্যবসায়ী দলকে ঢাকা সফরে এসে বাংলাদেশের ব্যবসায় সুযোগ খুঁজে দেখার অনুরোধ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে জার্মান বিনিয়োগ বাড়ানোরও আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ এখনও সার্কের ধারণাকে সমুন্নত রেখেছে এবং এই প্ল্যাটফর্মটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।”
নেপালের জলবিদ্যুৎ থেকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো কীভাবে লাভবান হবে এবং এটি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের ক্ষেত্রে কতটা সহায়ক হতে পারে তা তুলে ধরেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল তৈরিতে শলৎসের সমর্থন চান।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
খেলাফত মজলিসের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা শুরু
সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ নিয়ে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আজ সোমবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে সকাল ১০টার দিকে এই আলোচনা শুরু হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন, ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বৈঠকে রয়েছেন কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
বৈঠকের শুরুতে খেলাফত মজলিসকে শুভেচ্ছা জানিয়ে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য হলো জনগণের অধিকার নিশ্চিত ও দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠা করা।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধান সংস্কার, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং জনপ্রশাসন সংস্কারসংক্রান্ত প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের পরিক্রমায় আজ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘আর কোনো ফ্যাসিবাদ যাতে গড়ে উঠতে না পারে। মানুষ যেন গুম, খুন, নির্যাতন, বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার না হয়। সে রকমই এক নতুন বাংলাদেশ গড়া আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’
খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসূফ আশরাফের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেয় দলের মহাসচিব জালাল আহমেদ ও যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী।
সংস্কার কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাওলানা ইউসূফ আশরাফ বলেন, ‘আমরা এর আগে বিভিন্ন সংস্কার প্রসঙ্গে সুনির্দিষ্ট মতামত পেশ করেছি। সেগুলোর বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা হবে। আলোচনা শেষে আমরা বিস্তারিত কথা বলতে পারব।’