রংপুরের পীরগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে প্রায় এক একর ৫৪ শতক জমি জোর করে চাষের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ভোরে লোকজন নিয়ে উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের ঘোষপুর গ্রামের জমি চাষ করেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশফিকুর রহমান মশফি।

এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী ধনেশ্বর চন্দ্র বর্মন জানান, সোমবার ভোরে হঠাৎ পুকুরে ঝুপঝাপ শব্দ ও বাড়ির টিনের চালে ঢিলের শব্দে তাদের ঘুম ভাঙে। বাড়ির পূর্বদিকে পুকুরের ওপারে শতাধিক লোককে লাঠিসোটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। অন্যরা ট্রাক্টর দিয়ে জমিতে হালচাষ করছেন। তারা সাত দিনের মধ্যে গ্রাম না ছাড়লে যেখানে পাবেন, সেখানে মারধর করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা মশফিকুর বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমি ছিলাম না। আমার বড় ভাই মোশারফ হোসেন মকু ছিলেন। পৈতৃক জমি চাষ করা হয়েছে। দখলের অভিযোগ মিথ্যা।’

তাঁর ভাই মোশারফ হোসেন বলেন, ‘ন্যাশনাল ব্যাংক রংপুরের ঋণখেলাপি হিসেবে পঞ্চানন চন্দ্র বর্মনের ৮ একর ৯২ শতক জমি নিলামে উঠলে আমার বাবা মকবুলার রহমান, চাচা আছব উদ্দিন ও ঘোষপুরের খেরাজ উদ্দিন কিনে নেন। মাঠ রেকর্ড, পিন, পর্চা সব আমাদের নামে। দখলে না থাকায় সিংহভাগ জমি হিন্দুরা বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করেছে। বর্তমানে ১ একর ৩৯ শতক অবশিষ্ট আছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘জমি হিন্দুদের বাড়ির সঙ্গে। আমাদের বাড়ি দেড় কিলোমিটার দূরে। অতীতে চাষ করতে গেলেই বাড়ি জ্বালাও-পোড়াও মামলাসহ ভয়ভীতি দেখাতেন। এবার নিজেরা চাষ করেছি।’

পীরগঞ্জ থানার ওসি এম এ ফারুক জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ভুক্তভোগীরা মামলা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।

স্থানীয়রা জানান, পঞ্চানন চন্দ্র বর্মনের ৮ একর ৯২ শতক জমি ছিল। পৈতৃক সম্পত্তি থেকে ধনরি চন্দ্র বর্মন (ধনেশ্বর চন্দ্র বর্মনের বাবা) ১ একর ৬৮ শতক জমি পেলেও চাচা গিরিধর চন্দ্র বর্মন স্থানীয় মকবুলার রহমান ও আছব উদ্দিনের কাছে অংশ সূত্রের চেয়ে বেশি বিক্রি করেন। ১৯৮০ সালে বাটোয়ারা মামলায় ধনরি চন্দ্র বর্মন সাব জজ আদালতের রায়ে ৪ একর ৪৬ শতক জমির মালিক হন। সে সময় থেকে ধনরির সন্তানরা ভোগদখল করছেন।

পরে ১৯৯০ সালে অর্থঋণ আদালতে মামলা করেও হেরে যান মকবুলার। বিবাদী জেলা জজকোর্টে আপিল করলে ১৯৯১ সালে সেখানেও রায় বিপক্ষে যায়। ২০০৫ সালে হাইকোর্টের আপিলে রায় পক্ষে পান ধনরির উত্তরসূরিরা। তবে ১৯৯৫-৯৬ সালে মাঠ জরিপে জমি রেকর্ড হয় মকবুলার রহমানের নামে। বর্তমানে রেকর্ড সংশোধনের ল্যান্ড সার্ভে মামলা হাইকোর্টে চলমান।

এরই মধ্যে সোমবার ভোরে মকবুলার রহমানের দুই ছেলে মোশারফ হোসেন মকু ও বিএনপির সাবেক নেতা মশফিকুর রহমান, ভাতিজা মাইদুল ইসলাম, শরিফুল, রহিমসহ দেড় শতাধিক মানুষ বিরোধপূর্ণ জমি চাষ করলেন।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রগঞ জ ব এনপ প রগঞ জ চ ষ কর ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে ট্রলার থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে নেমে জয় আহমেদ (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন এলাকায় ঘাটে দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল প্রায় ৬ ঘন্টা চেষ্টা করেও ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে পারেনি ।

নিখোজ, জয় আহমেদ চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের ৬ নং ওয়ার্ডের বাস চালক মারুফ মিয়ার ছেলে। সে এবছর পিআরডি হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের পিআরডি হাইস্কুলের ৩৮ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী সরকারী মুড়াপাড়া পাইলট স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শিক্ষকদের সাথে একটি ট্রলার যোগে বাড়ী ফিরছিল।

ট্রলারটি চনপাড়াপূর্নবাসন কেন্দ্র এলাকার কাছাকাছি আসলে শিক্ষকদের নিষেধ করা সত্ত্বেও এসএসসি পরীক্ষার্থী জয় আহমেদ, ইফাজ, আসিফ, পরশ, ইসমাইল, তানভীর, আব্দুর রহমান ও রাকিব গোসল করতে নদীতে ঝাপ দেয়। এদের মধ্যে জয় আহমেদ ছাড়া বাকি সবাই তীরে উঠতে সক্ষম হয়।

এর পর থেকে নিখোঁজ জয় আহমেদ। বহু খোজাখুজির পর জয়কে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবন দেন পুলিশ। ঢাকা সিদ্দিক বাজার ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের একটি ডুবুরি দল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও উদ্ধার করতে পারেনি নিখোজ জয়ের মরদেহ। সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন ফায়ার সার্ভিস।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারে নামে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিটের অধিনায়ক হুমায়ুন কবির।

সম্পর্কিত নিবন্ধ