এইচএসসি পরীক্ষায় ফল জালিয়াতির অভিযোগে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথ ও তাঁর ছেলে নক্ষত্র দেব নাথের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার নগরীর পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড-চট্টগ্রামের সচিব অধ্যাপক ড. একেএম সামছু উদ্দিন আজাদ। মামলায় চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতার ও প্রাক্তন সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট কিবরিয়া মাসুদ খান। 

বোর্ড সূত্র জানায়, ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন নক্ষত্র দেব নাথ। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, নক্ষত্র জিপিএ ৫ পেয়েছেন, যা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে। সে সময় নক্ষত্রের বাবা নারায়ণ চন্দ্র নাথ চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ ওঠে, প্রভাব খাটিয়ে সন্তানকে জিপিএ ৫ পাইয়ে দিয়েছেন। এর পর ঘটনা থানা থেকে আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা কেন্দ্র ট্রাস্ট চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান ডা.

মাহফুজুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তদন্ত স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। এ বিষয়ে আট সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত। পরে মাউশি ও বোর্ডের আপিলে রিটের আদেশ বাতিল করা হয়। তদন্তে ফল জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণিত হলে গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বোর্ডকে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়। গত ২৪ অক্টোবর শিক্ষা বোর্ডের শৃঙ্খলা কমিটির সভায় নক্ষত্রের ফল বাতিল করা হয়। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  
অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথ চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব ও সর্বশেষ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর-চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ছিলেন। বর্তমানে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি হিসেবে কর্মরত।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ক ষ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাত কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত আলোচনা করে নেয়নি ঢাবি: শিক্ষা উপদেষ্টা

রাজধানীর সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে ঘোষণা দিয়েছে, এটা আমার সঙ্গে আলোচনা করে তো দেয়নি। তাদেরকে (সাত কলেজে) এ বছর থেকেই ভর্তি করা হবে না, এটার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। নিজেদের অধীনে সাত কলেজের ভর্তি এ বছরই বন্ধের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তার জন্য সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে 'ন্যাশনাল এডুকেশন অ্যান্ড ইনোভেশন ডায়ালগ' শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

চলতি শিক্ষাবর্ষে এসব কলেজে ভর্তি আহ্বান করা হবে কি না– এ প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমার একার মাথায় তো এই বুদ্ধি এখন আসবে না। এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। 

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণার মধ্যে ইউজিসির মাধ্যমে সাত কলেজে ভর্তি নেওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ইউজিসি তো বিশ্ববিদ্যালয় না, ইউজিসির ভর্তি করার কোনো ক্ষমতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় হতে গেলে সনদপ্রাপ্ত হতে হয়, এর আগে ভর্তি করানো সম্পূর্ণ বেআইনি।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে তো অনেক বিচার বিশ্লেষণ করতে হয়, এগুলোতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা আছে। সাধারণ বিশ্বিবদ্যালয়ে এইচএসসি শিক্ষার্থীরা থাকে না। এগুলোর শিক্ষকরা বিসিএস ক্যাডারের। কাজেই অনেকগুলো মডেল বিবেচনায় আছে। এ নিয়ে বড় কমিটি হয়েছে, যেটা ইউজিসির নেতৃত্বে হয়েছে। ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।

তিনি বলেন, এই কলেজগুলোকে সমন্বিত করে একটা নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করলে গেলে, এটা তো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নকল করে হবে না। নতুন মডেল তৈরি করতে হবে, সেটার কাজ চলছে। আইনগত বিষয় আছে, বিধিবিধান আছে- সেগুলো তৈরি করতে হয়। তারপর সনদ নিতে হয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাদের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল বলেও জানান শিক্ষা উপদেষ্টা। 

তিনি আরও বলেন, এই সমস্যা আমরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম, এখন যে অচলাবস্থা- এটার নিরসন কী করে হবে, এটা একা আমার মাথায় ঢুকবে না। আবার আলোচনা করব সব পক্ষের সাথে। শিক্ষার্থীদের তো অবহেলা করতে পারি না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাত কলেজে ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত আলোচনা করে নেয়নি ঢাবি: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • সাত কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত আলোচনা করে নেয়নি ঢাবি: শিক্ষা উপদেষ্টা