ভুয়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে ইউজিসির সতর্কতা
Published: 22nd, January 2025 GMT
ওয়েবসাইটে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অননুমোদিত ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটির অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনার প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির অবৈধ এমন কার্যক্রম ও ভুয়া তথ্যে প্রলুব্ধ না হতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি।
একটি বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ শাখার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তার ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি থেকে ইস্যুকৃত সনদের সঠিকতা যাচাইয়ের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়।
সরকার অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম পাওয়া না যাওয়ায় ওয়েবসাইটের (https://eaub.
মঙ্গলবার কমিশনের পাবলিক রিলেশন্স ম্যানেজমেন্টের পরিচালক ড. শামসুল আরেফিন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানান।
রাজধানীর পূর্ব মেরুল বাড্ডায় ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটির কোনো ক্যাম্পাসের অস্তিত্ব নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। ওয়েবসাইটে বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশ সরকার, ইউজিসি, ফার্মেসি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অনুমোদনপ্রাপ্ত বলে উল্লেখ করেছে। বাস্তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো প্রকার অনুমোদন না নিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, গুগল সার্চ ইঞ্জিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম টাইপ করলে স্ক্রলবারে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর নামসহ লোগো প্রদর্শিত হয়। কিন্তু ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি নামেই পেইজটি ওপেন হয়। আরও আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটির নামের ওপর ক্লিক করলে ইবাইস ইউনিভার্সিটি নামের পেইজটি ওপেন হয়।
সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে পরিদর্শন টিম তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সনদ বাণিজ্যের জন্যই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অননুমোদিত এ প্রতিষ্ঠানটি অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পরিদর্শন টিম তাদের প্রতিবেদনে প্রতারণা বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ডোমাইনটি অতি দ্রুত বন্ধের বিষয়ে বিটিসিএলে পত্র পাঠানোর সুপারিশ করেছে। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো এবং জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’