জেন্ডার সমতাকে এগিয়ে নিতে ইইউর সঙ্গে ইউএন উইমেনের চুক্তি সই
Published: 21st, January 2025 GMT
বাংলাদেশে পাবলিক স্পেস, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং ইউএন উইমেন ঢাকার মধ্যে একটি অংশীদারত্ব চুক্তি সই হয়েছে। মঙ্গলবার ঢাকায় ইইউ অফিসে এ চুক্তি হয়।
এই প্রকল্পটি নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনার (২০১৮-২০৩০) লক্ষ্য অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে একটি সহিংসতামুক্ত সমাজ গড়ার প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মোকাবিলার কৌশলগুলো একীভূত করবে।
প্রকল্পটি বিশেষত পাবলিক স্পেস, কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি এবং যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করবে। এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে, ইউএন উইমেন বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক জেন্ডার সমতা এবং মানবাধিকারের মানদণ্ডের প্রতি প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তা করবে।
প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউর সুপারিশমালা, নারীর বিরুদ্ধে সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণের কনভেনশন (সিডও) এবং নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন। এর পাশাপাশি, এই প্রকল্পটি নারীদের প্রতি সকল প্রকার বৈষম্যের অবসানের জন্য টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য সূচক ৫.
ইইউর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা এবং গত পাঁচ বছর ধরে চলমান ইউএন উইমেনের জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ কর্মসূচির ওপর ভিত্তি করে এই ৪.৮ মিলিয়ন ইউরো অনুদানের প্রকল্পটি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ফোকাস করবে। সেগুলো হলো পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন ও জেন্ডার-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে নীতি ও সিস্টেমের মাধ্যমে সহায়ক পরিবেশকে শক্তিশালী করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান, সম্পদ এবং অনুশীলনের উন্নয়ন, ক্ষতিকারক সামাজিক ও জেন্ডারভিত্তিক নিয়ম এবং অভ্যাস পরিবর্তন এবং সুশীল সমাজ ও নারী অধিকার সংগঠনের এজেন্সি এবং নেতৃত্বকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব নিশ্চিতকরণ।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার বলেন, ‘জেন্ডার সমতা উন্নয়ন এবং নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা দূর করার ক্ষেত্রে প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য ইইউর প্রতিশ্রুতির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই উদ্যোগ। এটি এমন একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করবে যেখানে নারী ও মেয়েরা হয়রানি বা বৈষম্যের ভয় ছাড়াই উন্নতি করতে পারবে।
ইউএন উইমেনের সঙ্গে অংশীদার হতে পেরে এবং বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য প্রত্যাশা পূরণে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করতে পেরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন গর্বিত।’
সমর্থন ও কৌশলগত অংশীদারত্বের জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, ‘এই বছর নারী বিষয়ক চতুর্থ বিশ্ব সম্মেলন এবং বেইজিং ঘোষণা ও প্ল্যাটফর্ম গ্রহণের ৩০তম বার্ষিকী, যা নারী অধিকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, বৈষম্যমূলক নিয়মকানুন মোকাবেলা এবং সুশীল সমাজে বিনিয়োগের মাধ্যমে, বাংলাদেশে জেন্ডার সমতাকে বাস্তবে পরিণত করায় ইউএন উইমেনের কার্যক্রমকে আরো জোরদার করতে ইইউর এই সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ন ড র সমত র জন য ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ালো ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর পূর্তির একদিন আগে এ ঘোষণা এলো। আজ শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হয়। এরপর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের জয় পাচ্ছে। দেশের অনেক এলাকা এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে জান্তা বাহিনী এ বছর নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রক্সির মাধ্যমে জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একটি প্রহসন হতে পারে এ নির্বাচন। কারণ, সেনাবাহিনী ক্ষমতা ধরে রাখতে বহুবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে আবারও মেয়াদ বাড়ানো পরিস্থিতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।
রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে জরুরি অবস্থা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রচার করে বলেছে, সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এখনো আরও অনেক কাজ বাকি আছে। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রয়োজন।
নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে জান্তা সরকার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যদিও তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার লড়াইয়ে ক্লান্ত। কারণ, তারা একাধিক ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক সময় মিয়ানমারের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাজারে একটি প্রতিশ্রুতিশীল শক্তি হিসেবে দেখা হলেও এখন তা ব্যাপক চাপে রয়েছে। সামরিক বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে এবং দেশটির জনগণের ওপর চাপ দিন দিন বাড়ছে।