স্বাধীনতার পর ৫৩ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কমিশন গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রশাসন ক্যাডারের হাতে থাকায় কমিশনগুলোর মতামত ও জনকল্যাণকর সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ওপর এতটাই নির্ভরশীল হতে দেখা গেছে, তারা প্রশাসন দ্বারা প্রায় শাসিতই হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আগের নাম ছিল সংস্থাপন মন্ত্রণালয়। কিন্তু নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়! আগের সরকার কখনোই বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের লাগাম টেনে ধরার সাহস করেনি তাদের দুর্বলতার কারণে। কিন্তু ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর বর্তমান সরকার যেসব সংস্কার কমিশন গঠন করে, এর মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সবচেয়ে বেশি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই কমিশন থেকে জনগণের প্রত্যাশা বেশি। কারণ এই কমিশন মোহমুক্তভাবে জনগণের সেবার মানের বিষয় চিন্তা করে সীমাহীন ক্ষমতার প্রশাসনকে ভারসাম্যপূর্ণ ও জনবান্ধব প্রশাসনে রূপান্তরে সংস্কার করবে, এটাই সবাই বিশ্বাস করেন। সিভিল সার্ভিসের ২৬টি অংশীজন ক্যাডার থেকে সরকারের বিশেষ পদ বা সিনিয়র সার্ভিসে মেধার ভিত্তিতে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার এই সুযোগ আর কোনোদিন আসবে না। কারণ রাজনৈতিক সরকারের মতো এই সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার মতো কোনো বিনিময় প্রয়োজন নেই বলে সবাই বিশ্বাস করেন।

বাংলাদেশ সরকার জনগণের সেবা নিশ্চিতে সময় নির্ধারণ করে সিটিজেন চার্টার প্রস্তুত করলেও সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী কোনো সেবা কোনো দপ্তরে পাওয়া যায় না বললেই চলে। সৎ ও দক্ষ কর্মকর্তাদের জন্য শুদ্ধাচার চর্চার পুরস্কার প্রদান করা হলেও সততার জন্য এই পুরস্কার প্রদান না করে যেসব কর্মকর্তা বিভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলে কাজ করতেন, তাদের এই পুরস্কারে ভূষিত করা হতো। শ্রেষ্ঠ, দক্ষ ও চৌকস অফিসার পরিচয় তাদেরই মেলে, যারা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকত। নথির বিষয় যা-ই হোক, ন্যায্য কিংবা অন্যায্য; নথির পেছনের ব্যক্তি ও শক্তির পর্যালোচনা করে নথি পাস হতো। নথির শম্বুকগতির কারণে নথির প্রচলন গতি বা ডিসিশন টার্নওভারের হার অসন্তোষজনক এবং যেসব নথি তিনজন কর্মকর্তার স্বাক্ষরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব, তা পাস হতে মাঠ পর্যায়ে কমপক্ষে তিনজন, অধিদপ্তর পর্যায়ে অফিস সহকারী, গবেষণা কর্মকর্তা, সহকারী পরিচালক, উপপরিচালক, পরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও মহাপরিচালক পর্যায়ে স্বাক্ষর হয়ে সচিবালয়ে উপস্থাপন হতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা, সিনিয়র সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব, সচিব বা সিনিয়র সচিব পর্যায়ে স্বাক্ষর হয়ে চিঠি হয় আবার কোনো নথি এসব ধাপ পার হয়ে উপমন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি পর্যায়ে গিয়ে নিষ্পত্তি হয়। 

এই দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় চলে যায় বছরের পর বছর। জনগণ দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কর্মকর্তার সারিতে ঘুরপাক খেতে থাকেন। তারা প্রত্যাশিত সেবা পান না। সেবা তাদের কাছে অধরাই রয়ে যায়। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের কারণে সরকারি সেবার মান উল্লেখযোগ্যভাবে নিম্ন হচ্ছে। সরকারের সেবার ফি আদায় ও পরিশোধে জটিলতাও সীমাহীন। অনলাইন ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করে সহজে জটিলতা নিরসন করা গেলেও সেগুলো করা হয়নি। এ কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া অতিশয় কেন্দ্রীকরণ, নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতে দুর্বলতা, দৃষ্টিভঙ্গিগত অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছে। যেমন শিক্ষা ক্যাডারের মাঠ পর্যায়ের বহু উপজেলার সরকারি কলেজের চার-পাঁচটি বিষয়ের কোনো শিক্ষক নেই; পাঠদান পর্যন্ত হয় না। আবার বিভাগের এক বিষয়ে ২০ জন আছেন। যিনি ঢাকায় আছেন, ২০ বছর ঢাকায়; যিনি উপজেলায়, তিনি সারাজীবন উপজেলায়। চাকরিতে বদলি টার্নওভার খুব কম হওয়ায় গতিশীলতা হারিয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয় শিক্ষা ক্যাডারের আওতার বাইরে হওয়ায় সচিবালয়ে পত্র প্রেরণ করলেও কোনো সাড়া নেই। হাজারো সমস্যা জিইয়ে রাখার মূল কারণ ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং পেশাগত ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ পেশাগত ক্যাডারের হাতে না থাকা।

স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, দক্ষতা, কার্যকারিতা, গতিশীলতা, নৈতিকতাসহ সুশাসন নিশ্চিতে জনপ্রশাসন সংস্কারে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে– দুর্বলতা চিহ্নিতকরণ, জনপ্রশাসন রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তকরণ, দুর্নীতিমুক্ত জনপ্রশাসন গঠন, অন্য দেশের মডেল অনুসরণ নয় বরং বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য সংগ্রহ করে সংস্কার, মেধাবীদের বাছাই করতে জেনারেল ক্যাডার ও পেশাগত ক্যাডারের নিয়োগ প্রক্রিয়া কোনোক্রমেই ক্ষুদ্র হওয়া উচিত নয়, জনপ্রশাসন-বেসরকারি খাত এবং একাডেমিয়ার সমন্বয়ে মনোযোগ বৃদ্ধি, সেবার মান উন্নয়নে মনোযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। জনপ্রশাসনে মেধাবী ও যোগ্যতাসম্পন্ন তরুণদের ক্যাডার হয়ে সৎভাবে কাজের সুযোগ করে দিতে হবে। কর্মকর্তাদের নেতৃত্বের গুণাবলি চর্চায় মনোযোগ দিতে হবে এবং কর্মকর্তাদের আচরণে আমূল পরিবর্তন করতে হবে। 
জনগণের সেবা সহজীকরণ করতে হলে মেধাবীদের সেবা দেওয়ার সুযোগ করে দিতে ‘ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার’ অর্থাৎ ‘কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয়’ গঠন করে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে। জনপ্রশাসনের কাজের পরিধি প্রকৃতি বিবেচনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘কর্মচারী বিষয় মন্ত্রণালয়’ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘জেলা কর্মচারী বিষয় কার্যালয়’ রাখলে সবচেয়ে ভালো হয়। আমি মনে করি, দক্ষ, মেধাবী, দুর্নীতিমুক্ত, সেবামুখী, জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে জনপ্রশাসন সংস্কারের উপযুক্ত সময় এখনই।

মো.

আব্দুর রাজ্জাক: শিক্ষা ক্যাডারে কর্মরত
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত ক ক ষমত র সরক র র জনগণ র মন ত র পর য য়

এছাড়াও পড়ুন:

বৈষম্যবিরোধীদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান অগ্রহণযোগ্য

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট যে গণঅভ্যুত্থান হয়, তা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতার ফসল, সন্দেহ নেই। আন্দোলনটি জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহের আগে নেহাতই সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা অবসানের দাবিতে সীমাবদ্ধ ছিল, যদিও ১৪ জুলাই দেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের নাতি-পুতি’ বক্তব্যটি আন্দোলনে ঘৃতাহুতি দিয়েছিল। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে কয়েকজন সমন্বয়ককে ডিবি হারুনের অফিসে ধরে নিয়ে গিয়ে ‘মিডিয়া-ডিনার’ খাওয়ানোর দৃশ্য এবং সমন্বয়কদের একজনকে দিয়ে লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় আন্দোলন সমাপ্ত করার ঘোষণা দিতে বাধ্য করা জনগণের ক্রোধকে দ্রুত ঘনীভূত করে। অন্যদিকে আন্দোলন মোকাবিলার জন্য পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মাস্তান বাহিনীকে লেলিয়ে দেন শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদের, যার ফলে সারাদেশে এক দিনেই শতাধিক আন্দোলনকারীর প্রাণহানি ঘটে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারাদেশে কারফিউ জারি করে তা বলবৎ করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কিন্তু কারফিউ প্রায় ১০ দিন চলার পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ৩ আগস্ট দুপুরে সামরিক বাহিনীর ঢাকায় অবস্থিত সব অফিসারের সভা (দরবার) ডাকেন। সভায় প্রধানত জুনিয়র অফিসাররা মতামত ঘোষণা করেন– সেনাবাহিনী জনগণের বিপক্ষে গুলি চালাবে না। সেনাপ্রধান তাদের মত মেনে নেন। সেনাবাহিনীর এই সিদ্ধান্ত জানাজানি হওয়ার পর ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিশাল সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা সরকারের পদত্যাগ চেয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। তাদের ঘোষিত ৬ আগস্টের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে এক দিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে ৪ আগস্ট আবারও ছাত্রলীগ-যুবলীগ-পুলিশের যৌথ বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন শেখ হাসিনা। ওই দিনও শতাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ওই দিন দেশের প্রায় ৪০০ থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। উপরন্তু, সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় আক্রমণ চালিয়ে ১৩ জন ও নরসিংদীতে ৬ জন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সাহস হারিয়ে রণে ভঙ্গ দিয়ে থানা থেকে পালিয়ে যায়। সাধারণ মানুষ বুঝে যায়, শেখ হাসিনার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র। 

এ প্রেক্ষাপট তুলে ধরার কারণ এটা বলা, গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী লাখ লাখ মানুষের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, শেখ হাসিনাকে উৎখাত। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে কারা রয়েছে– সেটা তাদের কাছে বিবেচ্য ছিল না। শেখ হাসিনার স্থানে কে ক্ষমতায় আসবে– সেটাও তাদের ভাবনায় ছিল না। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের সাড়ে পাঁচ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর জনগণের সিংহভাগ বুঝতে পারছে– বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রভাবশালী সমন্বয়কদের বড় অংশ একটি বিশেষ মতের। আন্দোলনের সময় তারা তাদের পরিচয় সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাদের অনেকেই ছদ্মবেশে ছাত্রলীগের রাজনৈতিক পরিচয় পর্যন্ত ধারণ করেছিলেন। এখন শীর্ষ সমন্বয়করাই বলে বেড়াচ্ছেন, আন্দোলনের ভ্যানগার্ড ছিল ইসলামী ছাত্রশিবির, যদিও লাখ লাখ জনতার মিছিল সংঘটিত করার পেছনে ছাত্রশিবিরের কোনো দলীয় তৎপরতার চিহ্নই ছিল না। 

এখন পরিষ্কার হয়ে গেছে– সরকারে অন্তর্ভুক্ত ছাত্রনেতারাসহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় সমন্বয়ক, যারা বিভিন্ন বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে ইতোমধ্যে জনপরিসরে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন; তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শিবিরের লোক। এই ব্যাপারটি এখন জাতির সামনে একটি মহাবিপদ হিসেবে হাজির হয়েছে। কারণ তারা জাতির প্রধান ঐতিহাসিক অর্জন ও আদর্শ ‘মুক্তিযুদ্ধ’কে মুছে ফেলতে বদ্ধপরিকর বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি সিংহভাগ সাধারণ মানুষের কাছে একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। ১৯৭১ সালে কারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, তা কারও অজানা নয়। তারা গণহত্যাকারী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ‘অক্সিলিয়ারি ফোর্স’ হিসেবে ‘আলবদর’ ও ‘আলশামস’ গঠন করেছিল। এই আলবদর ও আলশামস বাহিনীর ক্যাডাররা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ঘাতকদের সশস্ত্র সহায়তাকারী, গোয়েন্দা বাহিনী ও পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি নিজেরাও অত্যন্ত নৃশংস ঘাতকের ভূমিকা পালন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের অন্তিম লগ্নে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল রাও ফরমান আলীর নীলনকশা অনুসারে এই আলবদর বাহিনীর ক্যাডাররাই দেশের বুদ্ধিজীবী হত্যায় মেতে উঠেছিল। 

মুক্তিযুদ্ধ নিছক একটি গণঅভ্যুত্থান ছিল না। ছিল এক জনযুদ্ধ, যেখানে ধনী-গরিব-মধ্যবিত্ত সব অংশের প্রায় সব সদস্য প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল। এ কথা সত্য, মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে দুই বা আড়াই লাখ মানুষ। কিন্তু ভারতের মাটিতে গড়ে ওঠা শরণার্থী শিবিরের এক কোটিরও বেশি মানুষ বলতে গেলে সরাসরি এর সঙ্গে যুক্ত ছিল। দেশের ভেতরে কত লাখ পরিবার যে মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সহায়তা করেছে, তার কোনো হিসাব নেই। সর্বোপরি এ যুদ্ধের প্রস্তুতি চলেছে পাকিস্তানি শাসনের প্রায় ২৩ বছর ধরে। ফলে এর স্মৃতি, আবেগ ও চেতনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলবে।
মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি যদি মনে করে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রণকারী সমন্বয়কদের মদদ পেলেই তারা জনগণকে ধোঁকা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা স্বীয় কবজায় রাখতে পারবে– তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদেরও বলতে চাই, তাদের এই বিশেষ মহলকে তোষণ এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য ও অবস্থান দেশের সিংহভাগ জনগণ মোটেও পছন্দ করছে না।
অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করেছে, সেগুলোর প্রতিবেদনে যদি মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার কিংবা খাটো করার কোনো প্রয়াস দৃশ্যমান হয়, তাহলে তাদেরও জনরোষ মোকাবিলা করতে হবে। সম্প্রতি ছাত্রদের ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে বেশ হইচই হলো। বলা হচ্ছে, সব রাজনৈতিক দলের মত নিয়ে এই ঘোষণাপত্র সরকার দেবে। এই ঘোষণাপত্র আদৌ আলোর মুখ দেখবে কিনা, আমরা জানি না। তবে এতে যদি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম অর্জন সংবিধানকে ‘ছুড়ে ফেলা’র মতো কোনো কোনো সমন্বয়কের দম্ভোক্তির প্রতিফলন ঘটে, তাহলে জনগণ এর উদ্যোক্তাদের শুধু রুখে দাঁড়াবে না, ছুড়েও ফেলতে পারে– আগেভাগেই এই সাবধানবাণী উচ্চারণ করছি।

অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম: একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ; সাবেক সভাপতি
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি                                                             

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে তামাক আইন সংশোধনের দাবি
  • নির্বাচনের চাপ বাড়াতে ‘দ্রুত আন্দোলনে যাবে’ বিএনপি 
  • ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সব দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে
  • গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার: তারেক রহমান
  • চীনের বসন্ত উৎসবে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
  • আ. লীগের হরতাল-অবরোধ ঘিরে কঠোর হবে সরকার: প্রেস সচিব
  • বৈষম্যবিরোধীদের মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অবস্থান অগ্রহণযোগ্য
  • রাজনীতিবিদ, প্রশাসন ও জনগণের ‘ম্যাট্রিক্স’
  • জনগণের বিপক্ষে গেলে ৫ আগস্টের মতো পরিণতি হবে: তারেক রহমান
  • সবাইকে দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে: তারেক রহমান