Samakal:
2025-12-14@07:39:56 GMT

অভিভাবকহীন দুই নগর ভবন

Published: 21st, January 2025 GMT

অভিভাবকহীন দুই নগর ভবন

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলররা গা-ঢাকা দেন। পরে নগরের সেবা স্বাভাবিক রাখতে দেশের সব সিটি করপোরেশনে মেয়রের জায়গায় আমলাদের প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। আর কাউন্সিলরের দায়িত্ব পান আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তারা। বর্তমানে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রশাসক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সাত দপ্তরপ্রধান নেই। আর উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহীসহ নেই দুটি দপ্তরপ্রধান। ফলে অভিভাবকহীন দুই সিটিতে সেবায় বিঘ্ন ঘটছে।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ১৯ আগস্ট দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ডিএসসিসির দায়িত্ব দেওয়া হয় অতিরিক্ত সচিব ড.

মুহ. শের আলীকে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে তিনি অবসরে যান। ২৩ সেপ্টেম্বর ডিএসসিসিতে অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলামকে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করা হয়। তিনি ৬ জানুয়ারি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব পদে পদোন্নতি পান। এখন পর্যন্ত তাঁর জায়গায় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ডিএসসিসিতে নিয়োগ পাওয়ার পর ওই দুই প্রশাসকের একজনও সপ্তাহে দু’দিনের বেশি নগর ভবনে আসতেন না। আবার এই দু’দিনও ২-১ ঘণ্টার বেশি সময় দিতেন না তারা। সিটি করপোরেশনে মেয়র বা প্রশাসকের পরই প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ২৪ ডিসেম্বর অবসরে যান। এর পর নতুন করে কাউকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও ৩১ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন। এ ছাড়া প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, প্রধান অডিট কর্মকর্তা ও প্রশাসকের পিএস বদলিজনিত কারণে করপোরেশন ত্যাগ করলেও, নতুন করে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। 
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা, চাকরি স্থায়ীকরণ, পদোন্নতি আর বদলিকে কেন্দ্র করে করপোরেশনে প্রশাসক, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিবসহ অন্য কর্মকর্তার কক্ষে কর্মচারী ও শ্রমিক দলের কয়েকটি গ্রুপ হট্টগোল করে। টেন্ডারকে কেন্দ্র করে বহিরাগতরাও করপোরেশনের ভেতরে দ্বন্দ্বে জড়ায়। কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের কক্ষে বিশৃঙ্খলার ঘটনাও ঘটে। এসব কারণে করপোরেশনে প্রশাসকসহ অন্য পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা আসতে চাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা। 
এদিকে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান। এর পর সেখানে কাউকে পদায়ন করা হয়নি। এ ছাড়া ডিএনসিসির প্রধান নিরীক্ষা কর্মকর্তা ও আইন কর্মকর্তার পদ শূন্য। 

সংকট উত্তরণে গত ৩০ অক্টোবর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে করপোরেশনসহ পৌরসভাগুলোতে দ্রুত স্থায়ী প্রশাসক নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন সাবেক স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। আর কোনো অগ্রগতি নেই। 
দুই সিটি করপোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা ও প্রকৌশলী সমকালকে বলেন, মেয়র কাউন্সিলরহীন করপোরেশনে এখন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ‘চেইন অব কমান্ড’ নেই। উন্নয়ন কাজের নথি অনুমোদন হচ্ছে না। আবার পদোন্নতি আর টেন্ডারের জন্য বহিরাগতরা যখন-তখন এসে হট্টগোল বাধাচ্ছেন। এতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। আবার ৫ আগস্টের পর করপোরেশনের ছোটখাটো বিষয়ে মামলা হচ্ছে। এসব বিষয়ে আইন কর্মকর্তার পরামর্শ জরুরি। অর্থছাড় আর অডিটের মতো পদগুলোতে ক্যাডার কর্মকর্তা না থাকায় সেখানেও সমস্যা হচ্ছে।
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সচিব মোহাম্মদ বশিরুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রশাসকসহ দপ্তরপ্রধানের কয়েকটি পদ না থাকায় কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। এসব পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে আমাদের রুটিন কাজ চলছে। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, দ্রুতই এসব পদে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।’
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক বলেন, ‘শীর্ষ পদ আর টেকনিক্যাল পদগুলো খালি থাকায় বাড়তি সময় নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ে এসব পদে দ্রুত পদায়নের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করতে গিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। দ্রুত এসব পদে পদায়নের কাজ করছেন তারা।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ড এনস স ড এসস স সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের ঠেলে পাঠানো ১৫ জন আটক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। আজ রোববার ভোরে তাঁদের আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এ সম্পর্কে বিজিবির ১৬ ব্যাটালিয়নের বিভীষণ সীমান্ত ফাঁড়ির কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তাঁরা যশোর, নড়াইল, খুলনা ও মানিকগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। তাঁদের মধ্য ২ জন শিশু, ৯ জন নারী ও ৪ জন পুরুষ।

আবদুল মান্নান বলেন, আজ ভোরে সীমান্তে টহলের সময় ওই ১৫ জনকে দেখতে পান বিজিবি সদস্যরা। এ সময় তাঁদের আটক করে ক্যাম্পে আনা হয়। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক বলে নিশ্চিত হয়েছে বিজিবি। তাঁদের গোমস্তাপুর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

গোমস্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বারিক বলেন, পুশ-ইনের শিকার বাংলাদেশি নাগরিকেরা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ