২০১৬ এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির কথা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। তাসকিন আহমেদের বোলিংয়ে ক্যাচ উঠেছে। ডানহাতি পেসার বোলিংয়ের পর হাত তুলে ‘মোনাজাত’ ধরেছেন! ওই প্রতিযোগিতায় তাসকিনের বোলিংয়ে এত ক্যাচ হাতছাড়া হয়েছিল যে, সৃষ্টিকর্তার কাছে উইকেট চাওয়া বাদে আর কোনো উপায় ছিল না তার।

এর আগে-পরেও এরকম ঘটনা বহুবার ঘটেছে। নিয়মিতই ঘটছে। এবারের বিপিএলে সেই একই কাজ (মোনাজাতের) করতে হতে পারে তাকে। এমনিতেই দুর্বার রাজশাহী মাঠের ক্রিকেটে দুর্বল। তার উপরে দলের সেরা তারকা তাসকিন যা-ও পারফর্ম করেন সেটাও সতীর্থরা ফিল্ডিংয়ে বিলিয়ে দেন। ৯ ইনিংসে ২০ উইকেট পাওয়া তাসকিনের ঝুলিতে উইকেট বাড়তে পারত আরো পাঁচটি। সংখ্যাটা কম হওয়ার সুযোগ নেই। বরং বাড়তে পারে। শেষ ম্যাচেই চিটাগং কিংসের বিপক্ষে দুইটি ক্যাচ নিতে পারেননি সতীর্থরা। এসব নিয়ে সামনে চলতে হবে সেটাই যেন নিয়তি।

তাসকিনও তা মেনেও নিয়েছেন, “শেষ ম্যাচে হয়েছে (ক্যাচ মিস)। এই ম্যাচেও হয়েছে। হয়তো সামনেও হবে। কিছু করার নেই। প্রক্রিয়ায় থাকতে হবে। তারপরও ভালো যেই কয়েকটি উইকেট পাই সেগুলো নিয়েই যেতে হবে।”

আরো পড়ুন:

শেষ বলে এনামুলের সেঞ্চুরি, ৭ রানে খুলনার জয়

চট্টগ্রামে ‘চিটাগং ঝাঁজ’ টের পেল খুলনা

বিপিএলের দ্বিতীয় আসর থেকে নিয়মিত অংশগ্রহণ করা তাসকিন এবার ২০ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয়বার এক আসরে ২০ উইকেট ছোঁয়ার রেকর্ড স্পর্শ করেছেন। এর আগে তাসকিন ২০১৯ সালে ২২ উইকেট পেয়েছিলেন সিলেট সিক্সার্সের হয়ে। এছাড়া রুবেল হোসেন ও সাকিব দুইবার করে ২০ উইকেটের বেশি পেয়েছেন।

তাসকিনের সামনে এবার বড় কিছুর অপেক্ষা। বিপিএলের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হতে হলে আর ৪ উইকেট পেলেই হবে তার। তাসকিনের দলের প্লে’ অফে যাওয়ার সুযোগ সামান্য। সাকিব আল হাসানের ২৩ উইকেটকে ছাড়িয়ে যেতে তাসকিনের প্রয়োজন ৪ উইকেট। তিন ম্যাচে ৪ উইকেট পাবেন কী তাসকিন? ২৯ বছর বয়সী পেসার অবশ্য সেদিকে নজর নেই, “গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আল্লাহ যেন সুস্থ রাখে এবং ভালো বোলিং করতে পারি কিনা।”

তবে মনের গভীরে থাকা নিজের লালিত স্বপ্নকে আড়াল করলেন না তাসকিন, “রকেট সাইন্স তো নেই (রাতারাতি পাল্টে যাওয়ার)। আমি প্রতিটি ম্যাচে পরিস্থিতির দাবি অনুযায়ী ও নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করছি। গত কয়েক বছর ধরে একই প্রক্রিয়ায় আছি যে, কীভাবে নিজের উন্নতি বের করা যায়। কীভাবে বিশ্বমানের হয়ে আরও শীর্ষে থাকা যায়।”

“স্বপ্ন তো অনেক বড়। এজন্যই প্রতিটি দিন চেষ্টা করে যাচ্ছি। তার পরও ক্রিকেটারদের খারাপ দিন আসেই। ভালো হোক বা খারাপ, প্রতিটি দিনই গুরুত্বপূর্ণ, নতুন করে শুরুর চেষ্টা করি।”

হাসতে হাসতে কথা শেষ করেন তাসকিন। কিন্তু ওই হাসির আড়ালে শঙ্কাও থাকে! পরের ম‌্যাচে ক‌্যাচ নিতে পারবেন তো সতীর্থরা?

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট প

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে তামাকের ব্যবহার কমেছে

বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে তামাকের ব্যবহার কমেছে ৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণে এমন অগ্রগতি থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ও পূর্বাভাস’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বিএমইউর জার্নালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অধ্যাপক ড. এম মোস্তফা জামান। সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) মো. মামুনুর রশিদ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫-৬৯ বছর বয়সী বাংলাদেশীদের তামাক ব্যবহার (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ২০০৯ সালে ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে ৪৭ শতাংশে নেমেছে। ধূমপানের হার ২৭ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশ এ মেনেছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার ৩৬ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ। লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হ্রাস নারীদের তুলনায় কিছুটা বেশি। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় তামাক ব্যবহার কমলেও শহুরে অঞ্চলে হ্রাসের হার বেশি স্পষ্ট।

এম মোস্তফা জামান বলেন, বর্তমান যে হারে তামাক ব্যবহার কমছে, এই গতিতে এগোলে ২০৩০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়। তথ্য বিশ্লেষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) প্রতিরোধ রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বর্তমান নীতিমালার গতি দ্বিগুণ করতে হবে।

গবেষণায় সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করে বর্তমান হ্রাসের হার ত্বরান্বিত করতে হবে। ব্যবহারিক গবেষণা পরিচালনা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে নীতি ও আইনের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে, যাতে অপর্যাপ্ত হ্রাসের কারণ চিহ্নিত করা যায়।

ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তামাক ব্যবহার বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির জন্য দায়ী এবং উদ্বেগজনক। এই ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গণমানুষকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করতে হবে। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তামাক ব্যবহারের মাত্রা ও ঝুঁকি শহর ও গ্রাম পর্যায়ে আলাদাভাবে তুলে ধরা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়, তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও কঠোর নীতি ও সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ