ক্লাবের আল্টিমেটাম: জরুরি বোর্ড মিটিং ডেকেছে বিসিবি
Published: 21st, January 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও ঢাকাভিত্তিক ক্রিকেট ক্লাবগুলোর অচল অবস্থা এখনো কাটেনি। গঠনতন্ত্র সংশোধনীর প্রস্তাবনা বাতিলের দাবিতে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ বয়কট করেছে ক্লাবগুলো।
বাতিল না হওয়া পর্যন্ত প্রথম বিভাগসহ আসন্ন কোনো লিগেও অংশ নেবে না। গত শনিবার বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর এমন ঘোষণা দেয় ‘ঢাকা ক্রিকেট ক্লাব অর্গানাইজার্স অ্যাসোসিয়েশন’।
বিসিবি প্রেসিডেন্ট আশ্বাস দিয়েছেন বোর্ড মিটিং ডেকে দ্রুত সমস্যা সমাধান করা হবে। অবশেষে জরুরি বোর্ড মিটিংয়ের ডাক দিয়েছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
আরো পড়ুন:
বিসিবির বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে ক্লাবগুলো, লিগ বয়কট
‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’ নাহিদ নিজের প্রতি যত্নশীল
আগামী শনিবার (২৫ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলায় বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে ১৭তম বোর্ড মিটিং।
বিসিবি অফিসিয়াল রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মুঠোফোনে সূত্রটি জানায়, “বোর্ড মিটিংয়ের দিন তারিখ চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী শনিবার এটি অনুষ্ঠিত হবে।”
এর আগে সবশেষ বোর্ড মিটিং হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। এক মাসের ব্যবধানে অচল অবস্থা কাটানোর জন্য মিটিং ডাকতে হয়েছে বোর্ডকে। এই মিটিংয়ে প্রধান অ্যাজেন্ডা থাকছে সংশোধনী প্রস্তাবনা নিয়ে চলমান অচল অবস্থার বিষয়টি।
এর আগে বৈঠকের পর ক্রীড়া সংগঠক লুৎফর রহমান বাদল জানিয়েছেন দ্রুত বোর্ড মিটিং ডেকে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট।
“উনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন খুব শিগগিরই বোর্ড মিটিং দেবেন, দু-এক দিনের মধ্যে। আমরা সংশোধনী কমিটি বাতিলের অনুরোধ করেছি, কমিটির আহ্বায়কের পদত্যাগ দাবি করেছি, আমার ধারণা উনি সুষ্ঠুভাবে সমাধান করবেন। আমরা তাকিয়ে আছি।”
ক্রীড়া সংগঠকরা গত বিসিবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে একটি স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। সেখানে সংশোধনী খসড়া বাতিল করা, নাজমুল আবেদীন ফাহিমের নেতৃত্বে করা কমিটি বিলুপ্তি ছিল অন্যতম দাবি।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিলেন ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, “ক্লাবগুলো আমাদের গুরত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমরা এটি বিবেচনা করবো।”
প্রস্তাবনা খসড়ায় দেখা যাচ্ছে, নতুন করে সংস্কারের লক্ষ্যে কাজ করলেও বোর্ডে কমানো হচ্ছে ঢাকাভিত্তিক ক্রিকেট ক্লাবের কর্তৃত্ব আর বাড়ানো হচ্ছে ‘সরকারের প্রভাব’। বর্তমানে ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে ১২ জন পরিচালক আসতে পারবেন।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ক্লাব থেকে সেটি কমিয়ে মাত্র ৪ জন পরিচালকে নিয়ে আসা হয়েছে। অর্থাৎ ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশন, ফার্স্ট ডিভিশন ও থার্ড ডিভিশন ক্লাব ক্যাটাগরি থেকে মাত্র ৪ জন পরিচালক আসতে পারবেন বোর্ডে।
এমন প্রস্তাবনা সামনে আসার পর আন্দোলনে নামে ক্লাবগুলো। প্রথমে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রথম বিভাগ লিগ বয়কট করা হয়। স্পষ্টভাবে সংগঠকরা জানিয়ে দেন এটি বাতিল না করলে কোনো খেলায় অংশ নেবে না তারা।
ঢাকা/রিয়াদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বটগাছ প্রতীক ফেরত চায় খেলাফত আন্দোলনের কাশেমী অংশ
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বটগাছ প্রতীক ফেরত পেতে নির্বাচন কমিশনে দরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের এক অংশের সভাপতি আবু জাফর কাশেমী।
আদালতের রায় তারা পেয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “তারা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল। তারা হেরে গেছে। এখন বটগাছ প্রতীক আমাদের প্রাপ্য। আমরা এটা নির্বাচন কমিশনকে জানানোর জন্য দরখাস্ত করেছি।”
রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসিরউদ্দিনসহ আরেক কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন তিনি।
“আমরা চাই, আগামী নির্বাচনে যেন আমরা বটগাছ প্রতীকে নির্বাচন করতে পারি,” প্রত্যাশা করছেন আবু জাফর কাশেমী।
তিনি বলেন, “আমাদের খেলাফত আন্দোলনের যে আরেক অংশ রয়েছে, তারা বিগত দিনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রতীকটা ব্যবহার করেছে। আমরা আগে নির্বাচন করি নাই। এখন যেহেতু আমরা নির্বাচন করব, সেহেতু প্রতীকটা আমরা চাচ্ছি; আমাদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য।”
খেলাফত আন্দোলনের আরেক অংশের প্রধান আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ‘বটগাছ’ প্রতীকে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন।
আবু জাফর কাশেমী বলেন, “আমরা আজকে এসেছি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মতবিনিময় করতে। নির্বাচন কখন হবে, কীভাবে হবে, এটা নিয়ে বিতর্ক চলছে। নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, আগে সংস্কার হতে হবে। প্রত্যেক জায়গায় স্বৈরাচারী সরকারের কর্মকর্তারা রয়েছেন, পতিত দলের সরকারি কর্মকর্তারা রয়েছেন। সংস্কার ছাড়া গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন। এবং নির্বাচন যেন একটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে হয়।”
দ্বিতীয় এজেন্ডা কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আগে জাতীয় নির্বাচন হবে নাকি স্থানীয় সরকারের নির্বাচন হবে; যদি আগে জাতীয় নির্বাচন হয়, যে দল ক্ষমতায় আসবে, মেয়র থেকে মেম্বর পদ পর্যন্ত তাদের দলীয় লোক ছাড়া অন্য কারো নির্বাচন করার সুযোগ নেই। সেজন্য আমরা চাচ্ছি, আগে স্থানীয সরকারের নির্বাচন হবে, পরে জাতীয় নির্বাচন হবে।”
“তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এবং যোগ্য লোক দেশের সেবা করার সুযোগ পাবে,” মনে করছেন আবু জাফর কাশেমী।
খেলাফত আন্দোলন বৈষম্যের শিকার বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “আমরা বিগত সরকারের নির্বাচন বয়কট করেছি। বয়কট করার কারণে আমরা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমি চার মাস জেল খেটেছি। আমাদের মহাসচিব ৩২ মাস জেল খেটেছেন। আমাদের নেতাকর্মীরা সারা দেশে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।”
তারা বিদেশেও সফর করেছিলাম জানিয়ে আবু জাফর কাশেমী বলেন, “চায়না আমাদের পাঁচটি দলের সঙ্গে দাওয়াত দিয়েছিল। সেখানে আমাদের আলোচনা হয়েছিল। আমরা চাই, ইসলামী দলগুলো যেন একটি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারে ঐক্যবদ্ধভাবে। আলোচনা হইতেছে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে আমরা বারবার বসতেছি। একটি নির্বাচনি এলাকায় আমাদের একটি প্রতীক থাকবে। যার যেখানে গ্রহণযোগ্যতা আছে, যেন সে পাস করে আসতে পারে।”
অভিন্ন প্রতীকে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে যে কোনো আসনে একক প্রার্থী দিয়ে তাকে পাস করিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমরা অনেক দূর আগাইছি। সবাই চায়, আমরা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করি। যার যে মত, সে অবস্থায় থাকবে কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা সবাই একমত।”
‘‘আমরা এখন ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি দেশ গঠনে’’ এমন দাবি করে আবু জাফর কাশেমী বলেন, “যেহেতু পতিত স্বৈরাচার দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, সেহেতু এখন সময় এসেছে, দেশটাকে নতুন করে গড়ার। সেজন্য আমাদের যত দ্বন্দ্ব আছে, আমরা সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে দেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। ইনশাআল্লাহ, সমস্ত ইসলামী দল আমরা একসঙ্গে হব, এটাই আমাদের প্রচেষ্টা। আমরা অনেক দূর এগেয়েছি। আমাদের মিল হয়ে গেছে। এখন শুধু ঘোষণাটা বাকি।”
ঢাকা/হাসান/রাসেল