কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করায় মিফতাহুল মাওয়া নামে চার বছরের এক শিশুকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়া শিক্ষক শাহজাহান ফজলুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুল ইসলাম শিক্ষক শাহজাহানের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে শাহজাহান আদালতে জামিন আবেদন করেন।

আরো পড়ুন: ‌‘আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই’ 

আরো পড়ুন:

নদী থেকে পাওয়া মৃত শিশুর পোশাক দেখে নিজের সন্তান দাবি

‌‘আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোনো মূল্য নাই’

কুমিল্লা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মুজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী শিশু মিফতাহুল মাওয়া উপজেলার পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়ির সৌদি আরব প্রবাসী নজির আহমেদের মেয়ে।

ভুক্তভোগী শিশুর মা শামছুন নাহার তানিয়া জানান, গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে বুড়িচং সদর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়ির সড়কের পাশে থাকা বালু নিয়ে খেলা করছিল শিশু মিফতাহুল মাওয়া। সে সময় তাকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেন শিক্ষক শাহজাহান। একই দিন সন্ধ্যার পর এ ঘটনার ৪ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

ওই রাতেই আহত শিশু মিফতাহুল মাওয়ার মা শামসুন নাহার তানিয়া বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার পর থেকে মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক অভিযুক্ত শাহজাহান ফজলুর রহমান গা ঢাকা দেন।

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

তারুণ্যের সমাবেশ করবে বিএনপির তিন সংগঠন

রাজধানীসহ দেশের বিভাগীয় শহরে আবারও তারুণ্যের সমাবেশ করবে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের উদ্যোগে আগামী ৭ মে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে এ সমাবেশ শুরু হতে পারে। কর্মসূচি সফল করতে এরই মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক করছেন তিন সংগঠনের নেতারা। এর অংশ হিসেবে আজ তিন সংগঠনের যৌথসভা হবে।
এর আগে ২০২৩ সালের জুনে সারাদেশে বিভাগীয় শহরে তারুণ্যের সমাবেশ করে তিন সংগঠন। ‘তরুণ প্রজন্ম দেব ভোট, ভোটের জন্য যুদ্ধ হোক’– এই স্লোগানে ছয় বিভাগে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ব্যাপক সাড়া ফেলে তরুণদের মাঝে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের অনেক বাধা এড়িয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এসব সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। তবে এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। নির্বাচন নিয়ে নানা ধূম্রজালের মধ্যে ছাত্র ও যুবসমাজের সমর্থন বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। 

দলের নেতারা জানান, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আট মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। সরকারের একেক সময়ে একেক বক্তব্যে বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে আগামী নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপি নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার। সরকারকে চাপে রাখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য ঐকমত্য তৈরিতে ১৯ এপ্রিল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোদী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করছে বিএনপি। বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে চলতি মাসের শেষে কিংবা আগামী মাসের শুরুতে সংবাদ সম্মেলনের পরিকল্পনা করছে বিএনপি। এতে সরকারকে বার্তা দেওয়া হবে– দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত এবং তারা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক মতৈক্য সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের ওপর পরোক্ষ ও মনস্তাত্ত্বিক চাপ রাখবে দলটি। বিএনপির এ কৌশলের পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ছাত্র-তরুণ ও যুবক শ্রেণির কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে যেমন দেশের বড় একটি অংশের সমর্থন আদায়ের কৌশল রয়েছে, তেমনি খুব শিগগির নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হবে।

দলটির শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে ব্যস্ত রাখা গেলে যেসব অপবাদ আর অপকর্মের অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে উঠছে, সেখান থেকে দূরে রাখা যাবে। এতে সংগঠনগুলোতে গতিশীলতাও বাড়বে ।

দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে অনেকেই বলেন, বিএনপির পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে ভিন্নমাত্রার কর্মসূচি দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল যৌথভাবে তরুণদের নিয়ে বিভাগীয় বা বড় জেলা শহরে সমাবেশ করতে পারে। বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তারা ভোট দিতে পারেননি। তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্য হতে পারে এসব সমাবেশ। এতে তরুণরা উৎসাহিত হবে। তারুণ্যের সমাবেশের পাশাপাশি বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে। স্থায়ী কমিটির এমন সিদ্ধান্তের পর তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। শীর্ষ নেতাদের নির্দেশ পেয়ে কর্মসূচির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন তারা। কর্মসূচির খসড়া তৈরি করে বিএনপি নেতাদের কাছে পাঠানো হয়। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে কর্মসূচির দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সূত্রমতে, তিন সংগঠনের সমাবেশগুলোয় ২০২৩ সালের তারুণ্যের সমাবেশের মতো আবহ তৈরি করতে চান নেতাকর্মীরা। তরুণদের ব্যাপক উপস্থিতি বাড়াতে নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি সফল করতে বিভাগীয় প্রতিটি সাংগঠনিক জেলা বিএনপির নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করা হচ্ছে। সারা দেশের সব ইউনিট নেতাদের সঙ্গেও ধারাবাহিক বৈঠক করছেন তিন সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। 
তিন সংগঠনের নেতাকর্মীর প্রত্যাশা এবারের তারুণ্যের সমাবেশেও তরুণদের ব্যাপক উপস্থিতি হবে। কারণ, ১৭ বছর ধরে তরুণরা নানাভাবে অবহেলিত। তারা মনে করেন উচ্চশিক্ষার পরও লাখ লাখ তরুণ বেকার। ভোটার হওয়া সত্ত্বেও তারা ভোট দিতে পারছেন না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর তাদের প্রত্যাশা ছিল অচিরেই দেশে আবার গণতন্ত্র ফিরে আসবে, অর্থনীতির চাকা সচল হবে, সর্বক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা আসবে। কিন্তু আট মাস পেরিয়ে গেলেও ভোটাধিকারসহ কোনো ক্ষেত্রে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে তরুণদের সমস্বরে আগামী নির্বাচনের দাবি তুলে ধরা হবে এসব সমাবেশ থেকে। 

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান সমকালকে বলেন, তরুণ ভোটার, বিশেষ করে গত ১৬ বছরে যারা ভোটার হয়েছেন, অনেকেরই বয়স ৩০ থেকে ৩৫ বছর। কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে একবারও ভোট দিতে পারেননি। তরুণরা ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন; আবার চব্বিশের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছেন। এখন তরুণদের ঐক্যের মাধ্যমে ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ