প্রতিষ্ঠার ৮ বছর পরও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে (রবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আবারো মহাসড়ক অবরোধ করেছেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেন।

মঙ্গলবার (২১জানুয়ারি) দুপুরে এ দাবিতে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকাল ৫টায় সকল অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা দেন তারা।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ৮ মে বিশ্বকবির ১৫৪তম জন্মবার্ষিকীতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বছরই ১১ মে মন্ত্রী সভার বৈঠকে ‘রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১৫’ এর খসড়া অনুমোদন হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই আইনটি সংসদে পাস হয়।

২০১৮ সালের ১৭ এপ্রিল ১০৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়টির। স্থানীয় দুটি কলেজের ভবন ও একটি ভাড়া করা ভবনে চলছে এর শিক্ষা কার্যক্রম। শ্রেণি কক্ষ সংকট থাকায় একই কক্ষে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ছয় ব্যাচের ক্লাস। বর্তমানে তৃতীয় উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ঢাবির আইন বিভাগের অধ্যাপক ড.

এসএম হাসান তালুকদার। 

প্রতিষ্ঠার এত বছর পরও স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জায়গা বরাদ্দ পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়টি। স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে গত বছর ১৮ নভেম্বর অস্থায়ী একাডেমিক ভবনে মানববন্ধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিলেও কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় গত ১৮ ডিসেম্বর মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেন তারা।

সর্বশেষ মঙ্গলবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরাএকটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন। পরে সড়কের অবরোধ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে এসে তালা ঝুলিয়ে দেন।

এ সময় ‘রবিয়ানরা ভাড়া ঘরে, প্রশাসন কি করে’, ‘আর নয় আশ্বাস, দিতে হবে ক্যাম্পাস’, ‘আমার ক্যাম্পাস আমার ঘর, থাকব না আর যাযাবর’, ‘দফা এক দাবি এক, ক্যাম্পাস ক্যাম্পাস’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, “প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও এখনো স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় আমরা যাযাবর জীবন কাটাচ্ছি। শ্রেণিকক্ষ সংকটে একাডেমিক কার্যক্রমেও ব্যাঘাত ঘটছে। অন্যদিকে, হল না থাকায়ও আমরা চরম সংকটে ভুগছি। কিন্তু এতদিনেও প্রশাসন কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।”

শিক্ষার্থী নোশীন বলেন, “প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিন পরেও ক্যাম্পাসের কোন আপডেট নেই। ক্যাম্পাস না থাকায় আবাসন, শ্রেণিকক্ষসহ নানা ধরনের সংকটের সম্মুখীন হচ্ছি। আমরা ক্যাম্পাস চাইলে বৃত্তির নোটিশ আসে, ক্যান্টিন উদ্বোধন হয়। কিন্তু ক্যাম্পাসের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসে না। তাই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম হাসান তালুকদার বলেন, “একাডেমিক ভবনের তালা দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা রাতে মিটিংয়ে বসব। শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিষয়টির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করছি। ক্যাম্পাসের অভাবে পড়াশোনা বিঘ্নিত হচ্ছে। সপ্তমবারেও পেপার সাবমিট করে আমরা জায়গা পাইনি। তারা যেভাবে বলেছে, আমরা সেভাবেই পেপার সাবমিট করেছি।”

তিনি আরো বলেন, “সরকার আমাদের জায়গার ব্যবস্থা করে দিক, না হলে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিক। এভাবে একটা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না।”

ঢাকা/হাবিবুর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ড ম ক ভবন এক ড ম ক

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ