অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন ও চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলন করছেন সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার অন্তবর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেয় পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে মোট ৩০ হাজার ১৭৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন।

স্মারকলিপি দেওয়ার পর আরইবির শীর্ষ কর্মকর্তারা পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকুরিচ্যুতি ও মামলা করার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া হয়রানিমূলক বদলি করারও অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আরইবি ও পবিসের কাঠামো পর্যালোচনার জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পবিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলছেন, এই কমিটি কতটা নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে সেটা নিয়ে সংশয় আছে। 

সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিগত সরকারের আমল থেকে আন্দোলন শুরু করলেও অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর গত বছরের অক্টোবরে চরম আকার ধারণ করে। এসময় আরইবি এলাকায় বিদ্যুৎ শাটডাউনের মতো ঘটনা ঘটে। 
পরিস্থিতি সামলাতে কঠোর অবস্থানে যায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত, তাৎক্ষণিক বদলি ও মামলা করা হয়। শেষ পর্যন্ত সমস্যা সমাধানে সরকার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে আরইবি ও পবিসির মধ্যে এখনও দ্বন্দ্ব মেটেনি।

বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ গত বছরের জানুয়ারি থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতি, দ্বৈতনীতি, শোষণ, বৈষম্য, নিপীড়ন ও অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে স্মারকলিপি প্রেরণ, গণস্বাক্ষর গ্রহণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহক সেবা চালু রেখে কর্মবিরতি সহ শান্তিপূর্ণ নানান কর্মসূচি পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর আরইবি কর্তৃক নিম্নমানের মালামাল ক্রয়ের কারণে সৃষ্ট গ্রাহক ভোগান্তি এবং আরইবির বিগত সময়ের বিভিন্ন ধরণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সারা দেশে একযোগে মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

এতে আরও বলা হয়, মাঠ পর্যায়ে কোন ধরনের কর্মসূচী না থাকা সত্ত্বেও আরইবি গতবছরের ১৬ অক্টোবর সমিতির ১০ জন কর্মকর্তাকে কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। পরের দিন ১৭ অক্টোবর সকাল থেকে বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধড়পাকড় ও বেধড়ক মারধরসহ আরও ১৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে দেয়া হয়। পৃথক তিন মামলায় মোট ১৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, প্রায় ২০ জন কর্মকর্তাকে কারাবন্দী, স্ট্যান্ড রিলিজ ও ওএসডি করা হয় আরও প্রায় অর্ধশতাধিক। 

বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী চাকরিচ্যুত ও সদ্য কারামুক্ত ডিজিএম মো.

রাহাত বলেন, আমরা বৈষম্য নিরসনে আন্দোলন করছি। আরইবি আমাদের সঙ্গে নিপীড়নমূলক আচরণ করেছে। এখন সংস্কারের জন্য গঠিত কমিটির ওপরও আমাদের আস্থা কমে গেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট স ম রকল প স ম রকল প উপদ ষ ট কর ত ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ