বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিল পবিস কর্মীরা
Published: 21st, January 2025 GMT
অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন ও চাকরি স্থায়ী করার দাবিতে আন্দোলন করছেন সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার অন্তবর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টার কাছে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেয় পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে মোট ৩০ হাজার ১৭৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন।
স্মারকলিপি দেওয়ার পর আরইবির শীর্ষ কর্মকর্তারা পবিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকুরিচ্যুতি ও মামলা করার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া হয়রানিমূলক বদলি করারও অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি আরইবি ও পবিসের কাঠামো পর্যালোচনার জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। পবিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলছেন, এই কমিটি কতটা নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে সেটা নিয়ে সংশয় আছে।
সারাদেশের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিগত সরকারের আমল থেকে আন্দোলন শুরু করলেও অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর গত বছরের অক্টোবরে চরম আকার ধারণ করে। এসময় আরইবি এলাকায় বিদ্যুৎ শাটডাউনের মতো ঘটনা ঘটে।
পরিস্থিতি সামলাতে কঠোর অবস্থানে যায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত, তাৎক্ষণিক বদলি ও মামলা করা হয়। শেষ পর্যন্ত সমস্যা সমাধানে সরকার পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। তবে আরইবি ও পবিসির মধ্যে এখনও দ্বন্দ্ব মেটেনি।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ গত বছরের জানুয়ারি থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতি, দ্বৈতনীতি, শোষণ, বৈষম্য, নিপীড়ন ও অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে স্মারকলিপি প্রেরণ, গণস্বাক্ষর গ্রহণ, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও গ্রাহক সেবা চালু রেখে কর্মবিরতি সহ শান্তিপূর্ণ নানান কর্মসূচি পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর আরইবি কর্তৃক নিম্নমানের মালামাল ক্রয়ের কারণে সৃষ্ট গ্রাহক ভোগান্তি এবং আরইবির বিগত সময়ের বিভিন্ন ধরণের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সারা দেশে একযোগে মানববন্ধন এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এতে আরও বলা হয়, মাঠ পর্যায়ে কোন ধরনের কর্মসূচী না থাকা সত্ত্বেও আরইবি গতবছরের ১৬ অক্টোবর সমিতির ১০ জন কর্মকর্তাকে কোন পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। পরের দিন ১৭ অক্টোবর সকাল থেকে বিভিন্ন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ধড়পাকড় ও বেধড়ক মারধরসহ আরও ১৪ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে দেয়া হয়। পৃথক তিন মামলায় মোট ১৭১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, প্রায় ২০ জন কর্মকর্তাকে কারাবন্দী, স্ট্যান্ড রিলিজ ও ওএসডি করা হয় আরও প্রায় অর্ধশতাধিক।
বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী চাকরিচ্যুত ও সদ্য কারামুক্ত ডিজিএম মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট স ম রকল প স ম রকল প উপদ ষ ট কর ত ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট
আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।
পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।
এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা
এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও।
রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।
প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”
অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”
অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”
গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”
কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”
স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ