মেডিকেল কলেজে ভর্তিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে কোটার ন্যায্য বণ্টন চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আইনজীবী জায়েদ বিন নাসের মঙ্গলবার ডাকযোগে ও ই-মেইলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে এ নোটিশ পাঠান। 

নোটিশে বলা হয়, অনেক প্রাণ ঝরে যাওয়ার পর চাকরিতে কোটা বাতিল করে বিগত সরকারের আমলে বিচার বিভাগ মোটামুটি একটা যৌক্তিক রায় দেয়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা একটি প্রতিযোগিতামূলক মেধাভিত্তিক পরীক্ষা। এখানে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকা বাংলাদেশের মূল্যবোধের পরিপন্থি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এবং অনগ্রসর অংশের জন্য সীমিত আকারে বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে মেধার যাচাই মূল্যায়নে কোনোভাবেই কোটার স্থান থাকতে পারে না। এ ধরনের কোটার বিধান ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক সুবিচারের মূল্যবোধ পরিপন্থি।’ 

নোটিশের বিষয়ে জায়েদ বিন নাসের সাংবাদিকদের বলেন, দেশে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে আবারও সমস্যা হোক সেটা আমরা চাই না। তাই কোটার বিধানগুলো কমিশনের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি-যুবদল নেতাদের শাস্তি দাবি গ্রামবাসীর

বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগ তুলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তারা অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহি চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি বেলায়েত হোসেন। 
শুক্রবারের মানববন্ধনে কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা, কোড্ডাইদ ও পাকিয়াব এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন। দিঘিরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও কড়িহাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সিরাজউদ্দিন অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা মৃত আহম্মদ আলী, একই গ্রামের ওহাবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মো. সিরাজ উদ্দিন ও বড়হর গ্রামের মাহাবুবুল আলম দিঘিরকান্দা চৌরাস্তা এলাকায় বড়হর গ্রামের মো. আনছার আলীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে ৩৫ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। ৫ আগস্টের পর ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন, তাঁর বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. তোফাজ্জল হোসেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজউদ্দিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আমির হোসেন ও সহসভাপতি মো. বাদল মিয়ার নেতৃত্বে জমিটি দখলের পাঁয়তারা চলছে। কয়েক দিন আগে তারা সেখানে ইট, বালু ও পিলার স্থাপন করতে যান। পরে এলাকাবাসীর বাধার মুখে তারা সরে যান। ওই জমিটি যেভাবেই হোক দখলের হুমকি দিচ্ছেন ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজউদ্দিন।

কোড্ডাইদ গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও তাঁর ভাইদের কাছে এলাকাবাসী অনেকটাই জিম্মি। ১ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো কিছু করতে হলে তাদের অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয় বলে তারা প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন। 
পাকিয়াব গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে একটি পারিবারিক কলহ মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা 
দাবি করেন। 
দিঘিরকান্দা মোড়ের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় ব্যাপকহারে মাদকের কারবার চলছে। অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কেটে আশপাশের ইটের ভাটায় সরবরাহেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা। এসব কারণে এলাকার রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যার প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। 
এসব অভিযোগের সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার বা মাটি কাটায় তিনি, তাঁর দল বা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। এসব বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলকারীদের কাছে নেই। এজন্য বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
কড়িহাতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, তাদের কাছে এমন অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ নিয়ে কেউ আসেনি। অভিযোগ তদন্ত করে কারও দোষ পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ