দেশের ৯০ ভাগ সংস্কার বিএনপি করেছে: আমীর খসরু
Published: 21st, January 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘দেশ স্বাধীনের পর যে সংস্কার হয়েছে, তার নব্বই ভাগই করেছে বিএনপি।’’
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত ‘খুলনা বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘দেশের অর্থনীতি আজ যেখানে এসেছে, সেটা বিএনপির সংস্কারের কারণেই। যা শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তাই বিএনপির সংস্কারের ব্যাপারে কারও কাছ থেকে ছবক নেওয়া লাগবে না।’’
আরো পড়ুন:
নিরপেক্ষ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছি : এ্যানি
বাংলাদেশের মানুষের দুঃসময়ে জিয়াউর রহমান পাশে ছিলেন: হাবিব
তিনি আরো বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা পলায়নের পর দেশের মানুষের মনোজগতের যে পরিবর্তন হয়েছে, তা ধারণ করতে না পারলে কোনো লাভ হবে না।’’
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির দেশের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন পরিস্থিতে কর বৃদ্ধি করা ঠিক হয়নি। তাই স্বৈরাচার সরকারের লুটপাটের বাজেট বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য নতুন বাজেট তৈরি করতে হবে।’’
অনুষ্ঠানে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহানসহ খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/রিটন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকার নিশ্চুপ কেন
জনপ্রশাসনকে গতিশীল করতে অন্তর্বর্তী সরকার সাবেক উপদেষ্টা ও সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল। ইতিমধ্যে কমিশন ১০০ সুপরিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যা জনপ্রশাসনে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যকার বিরোধ আরও চাঙা করেছে।
বর্তমানে উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৭৫ শতাংশ ও ২৫ শতাংশ অন্য সব ক্যডারের জন্য নির্ধারিত রয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পদে ৫০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার ও বাকি ৫০ শতাংশ নিয়োগ অন্য ২৫ ক্যাডার থেকে নেওয়ার প্রস্তাব করে। এতে কোনো পক্ষই খুশি হয়নি। ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের অভিযোগ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা দ্রুত পদোন্নতি পেলেও অন্য ক্যাডাররা বঞ্চিত হচ্ছেন। উপসচিব পুলে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন তাঁরা।
২৫ ক্যাডারের অভিযোগ, জনপ্রশাসনে একটি ক্যাডারের আধিপত্য ও কর্তৃত্বের কারণে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। একই বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তাঁরা চাকরিতে ঢুকলেও শীর্ষ পদগুলোর বেশির ভাগ প্রশাসন ক্যাডার দখল করে আছে। অন্যদিকে প্রশাসন ক্যাডারের দাবি, চাকরিতে প্রবেশের সময়ই প্রার্থীরা পছন্দসই ক্যাডার বেছে নিয়েছেন। অতএব, তঁাদের প্রতি অবিচার করার অভিযোগ অমূলক।
এ নিয়ে উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে লিখেওছেন। এই লেখালেখির কারণে ২৫ ক্যাডারের ১২ কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু একই ধরনের লেখালেখি করলেও প্রশাসন ক্যাডারের কোনো কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেনি। ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা মনে করেন, প্রশাসন ক্যাডারের লোকজন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে থাকায় এক যাত্রায় দুই ফল হয়েছে। ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিবাদ ও ক্যাডার বৈষম্য বিলোপের দাবিতে রোববার ২৫ ক্যাডার সারা দেশের ২৪ ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করে, যাতে জনগণ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হন।
আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি ফেসবুকে লেখালেখির মতো তুচ্ছ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১২ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
একত্র হওয়া ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তাদের কলমবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণার পাল্টা হিসেবে এর আগে প্রশাসন ক্যাডারও কিছু কর্মসূচি পালন করে। তবে সেটি কর্মবিরতি পর্যন্ত গড়ায়নি।
সরকারি কর্মকর্তাদের দুই অংশ মুখোমুখি অবস্থান সরকার কিংবা প্রশাসন কারও জন্যই স্বস্তিদায়ক নয়। অভিযোগ আছে, সরকারের কোনো কোনো মহল এই বিরোধ জিইয়ে রেখে প্রশাসন ক্যাডারকে কিছু চাপে রাখতে চায়। কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে, এ ধরনের পরিস্থিতিতে কেবল প্রশাসনিক শৃঙ্খলা নষ্ট হয় না, জনগণও সেবা থেকে বঞ্চিত হন। ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের একটা বড় অংশ সরকারের সেবা খাতের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
আমরা মনে করি, সরকারের উচিত অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া। যদি তারা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে চায়, তা–ও করতে হবে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আস্থায় নিয়ে। এ বিষয়ে ঔপনিবেশিক আমলের মতো ভাগ করো ও শাসন করো নীতি পরিহার করতে হবে। সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এখানে কেউ বড়, কেউ ছোট এই ধারণা পুরোপুরি পরিহার করতে হবে।
আরেকটি কথা, নীতিমালা বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা বিলম্ব হলেও ২৫ ক্যাডারের ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা দ্রুত প্রত্যাহার করে আলোচনার দরজা খোলা যেতে পারে।