সাবেক এমপি দুর্জয়ের ফ্ল্যাট-জমি-গাড়ি জব্দের নির্দেশ
Published: 21st, January 2025 GMT
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের রাজধানীর লালমাটিয়ায় ২ হাজার ৫২৩ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, জমি ও ৩টি গাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ১২টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশও দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস ভট্টাচার্য। শুনানি শেষে আদালত এ আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালতে দুদকের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, সংসদ সদস্য থাকাকালে নাঈমুর রহমান দুর্জয় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোট ১১ কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ৭৯০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড থেকে মোট ৪ কোটি ২২ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।
তিনি আরও বলেন, তার নিজের নামে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ৯টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯০ টাকা জমা এবং ৪৬ কোটি ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৬০ টাকা তুলেছেন, যা সন্দেহজনক। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় উপরিউক্ত বর্ণিত সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন। তার স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এমপ
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’