টাঙ্গাইলে ওএমএসের চাল বাজারে বিক্রি
Published: 21st, January 2025 GMT
টাঙ্গাইল শহরের বেড়াবুচনা বৌ-বাজার এলাকার ওএমএস ডিলার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের চাল, আটা বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ওএমএসের ডিলারদের মাধ্যমে সরকার চাল, আটাসহ কিছু পণ্য কমদামে বিক্রি করে থাকে। এ পণ্য ডিলারের বাজারে বিক্রির সুযোগ নেই।
অভিযোগ রয়েছে, খাদ্য বিভাগের কর্মচারীদের সহযোগিতায় রফিকুল ইসলাম স্থানীয়দের সরকার নির্ধারিত দামে চাল, আটা না দিয়ে অতিরিক্ত দামে বাজারে বিক্রি করে থাকেন। ওএমএসের ব্যবহৃত খালি বস্তা কেনার আড়ালে ডিলারের কাছ থেকে চাল, আটা কেনার অভিযোগ রয়েছে কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা এলাকার লাভলী বেগমের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় বেড়াবুচনা বৌ-বাজারে রফিকুলের বিক্রয় কেন্দ্র থেকে অটোরিকশায় ওএমএসের আট বস্তা চাল ও এক বস্তা আটা তুলতে দেখা যায়। রফিকুলের কর্মচারী মেরাজ মিয়া বলেন, লাভলী বেগম নামে ওই নারী খালি বস্তা কেনার পাশাপাশি চাল, আটাও কেনেন।
আরো পড়ুন:
টিসিবির ১ কোটি ফ্যামিলি কার্ডধারীর ৩৭ লাখই ভুয়া: বাণিজ্য উপদেষ্টা
কুষ্টিয়ায় জেলা প্রশাসকের চালের বাজার তদারকি
পাশের মনোহারী দোকানে আসা হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘‘আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চাল, আটা পাই না। তবে রফিকুল ইসলাম বিভিন্নভাবে বাজারে চাল, আটা বিক্রি করে থাকেন। খাদ্য অফিসের যারা দায়িত্বে থাকেন, তাদেরও চোখ বন্ধ থাকে।’’
সাংবাদিকদের উপস্থিতির টের পেয়ে লাভলী বেগম অটোরিকশা থেকে সটকে পড়েন। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে অটোরিকশার চালক রিফাত শান্তিকুঞ্জ মোড় হয়ে ঘুর পথে লাভলী বেগমকে তুলে নিয়ে কালিহাতীর এলেঙ্গা কলেজ মোড় এলাকার বহুতল ভবনের নিচে গিয়ে থামেন। সেখানে লাভলী বেগম তারা কাকা শহিদুল ইসলামের কাছে চাল, আটা ও খালি বস্তা দেন। লাভলী বেগম খালি বস্তার আড়ালে চাল, আটা কেনার কথা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে স্বীকার করেন। পরে সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
তবে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে রফিকুল ইসলামের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
রফিকুল ইসলামের বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা খাদ্য পরিদর্শক সুজয় কর্মকার বলেন, ‘‘আমি সোমবার (২০ জানুয়ারি) রফিকুল ইসলামের বিক্রয় কেন্দ্রে ছিলাম না। অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তবে সেখানে আমাদের অফিসের দারোয়ান মো.
দারোয়ান জিয়া বলেন, ‘‘সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও আমি সোমবার দুপুর দেড়টায় চলে আসি। তখন রফিকুলের বিক্রয় কেন্দ্রে ১৩৩০ কেজি চাল ছিল। আমি আসার পরে বাজারে চাল বিক্রি করছে কি-না সেটা আমি জানি না।’’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ তানভীর হোসেন জানান, রফিকুল ইসলামের বাজারে চাল বিক্রি করার বিষয়টি তার জানা নেই। সেখানে যারা দায়িত্ব ছিলেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারবেন। তবে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/কাওছার/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দেবীগঞ্জে দেয়ালে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে লেখা হয়েছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে পৌরসভার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এই লেখা সাধারণ মানুষের নজরে আসে। তবে, কারা এই স্লোগান লিখেছেন, তা কেউ দেখেননি।
পৌরসভার শহীদ আব্দুল মান্নান সড়ক সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ চত্বর, নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের দেয়ালে লাল, কালো ও নীল রঙের কালি দিয়ে ‘জয় বাংলা’, ‘জয় শেখ হাসিনা’ এবং ‘শেখ হাসিনা তুমি আস্থা’- এমন স্লোগান লেখা হয়েছে।
এদিকে, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অফিসিয়াল পেজ থেকে আজ দুপুর ১টায় দেবীগঞ্জের বিভিন্ন দেয়ালে লেখা স্লোগানের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা হয়। এ বিষয়ে জানতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
দেবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান সুমন বলেন, ‘নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসনকে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাতের আঁধারে দেয়ালে দেয়ালে ‘জয় বাংলা’ লিখছে তারা। উপজেলা ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সজাগ রয়েছে।"
প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর শুধু দেবীগঞ্জ নয়, পুরো পঞ্চগড়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। দেবীগঞ্জ, বোদা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এসব দেওয়াল লিখন লক্ষ্য করা গেলেও প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। এসব লেখা ’২৪ বিপ্লবের চেতনাকে ম্লান করার চেষ্টা করছে। যা রুখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান- তাদের (ছাত্রলীগ নেতাকর্মী) দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। তাদের অপতৎপরতা রুখে দিতে পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে।”
দেবীগঞ্জ থানার ওসি সোয়েল রানা মোবাইলে বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে আসছে। এখনি কোনো মন্তব্য করতে পারছি না। বিষয়টি দেখছি আমরা।”
ঢাকা/নাঈম/মাসুদ