খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, “বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সঙ্গে মিলাচ্ছি না। ভারত যেহেতু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী এবং ওখান থেকে আমদানি খরচ তুলনামূলকভাবে কম ও সস্তা দামে পাওয়া যায়, সেজন্য সেখান থেকে পণ্য আসাটা অব্যাহত আছে। আমরাও সেটাকে ওয়েলকাম করছি। পাশাপাশি মিয়ানমার আমাদের কাছে আরও চাল বিক্রি করতে চাচ্ছে। পাকিস্তান থেকেও ৫০ হাজার টন চাল আমদানির ব্যবস্থা করেছি।”

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

মিয়ানমার থেকে চাল আমদানি প্রসঙ্গে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমরা তাদের সঙ্গে এক লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি করেছি। তারা আরও বিক্রি করতে চাচ্ছে। আমরা তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ এবং সরবরাহের অবস্থা দেখে এরপর বিবেচনা করব। এছাড়া আরও উৎসের সন্ধান আমরা করছি।” 

সবমিলিয়ে কী পরিমাণ চাল আমদানি করা হচ্ছে জানতে চাইলে উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘‘আট থেকে নয় লাখ মেট্রিকটন চাল আসবে। সরকারি সেক্টরে প্রায়ই আটলাখ মেট্রিকটন চাল আসবে। ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান এসব জায়গা থেকে আসবে। ভিয়েতনামের সঙ্গে আলোচনা চলছে।’’

বিদেশ থেকে কয়েক দফা চাল এলেও দাম কমছে না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখানে প্রথম কথা হচ্ছে দাম বাড়ানো বন্ধ হয়েছে। মোটা চাল যেটা আছে সেটার দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা কমেছে। আমরা আরও চাল আনতে থাকব। দাম বাড়ার আর সুযোগ থাকবে না।”

সামনে রমজানকে ঘিরে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার শঙ্কা আছে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘রমজান মাসে আমাদের খাদ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ করে চাল ও গম সবচেয়ে বেশি দেখাশোনা করে। বাকি কিছু আইটেম দেখভাল করে টিসিবি। সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। টিসিবিও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় প্রতিদিন দুই মেট্রিকটন চাল বিক্রি শুরু হয়েছে এ মাস থেকে। রমজান মাসেও এটা থাকবে। সারাদেশে ৫০ লাখ লোকের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে। দরিদ্র শ্রেণির ৫০ লাখ লোক মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে ১৫ টাকা দরে। আশা করছি রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে।’’

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের দিক দিয়ে বেশি নজর দিচ্ছি। বিদেশ থেকে না আনতে পারলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দুর্যোগ কবলিত দেশ। যে কোনোভাবে আমাদের দেশে দুর্যোগ আসে। দুর্যোগ এলেই আমাদের দেশের ফসলের ক্ষতি হয়। এবার যদি অকাল বন্যা না হতো আমাদের এতটা চাপে পড়তে হত না। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আগামীতে ফসল ভালো হয়।’’

উপদেষ্টা বন্দর জেটি পরিদর্শন করেন এবং মায়ানমার থেকে আসা চালের জাহাজ থেকে চাল খালাস প্রত্যক্ষ করেন। এসময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড.

মো. জিয়াউদ্দিন, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আব্দুল খালেক ও বন্দর চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামানসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ল আমদ ন উপদ ষ ট রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই

দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’

এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!

সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ