ময়মনসিংহে ছাত্রদলের এক নেতার কাছে বিদেশি পিস্তল রয়েছে এমন খবরে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। অভিযানকালে অস্ত্রসহ ছাত্রদল নেতাকে আটকের পর পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান তার অনুসারীরা। এ সময় ভাঙচুর করা হয় পুলিশের দুটি গাড়ি। হামলায় আহত হন এক উপপরিদর্শক (এসআই)। 

সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের বলাশপুর মরাখোলা এলাকায় অভিযান চালায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এসময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রদল নেতার নাম বুলবুল আহমেদ ওরফে সজীব (৩০)। 

এদিকে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় পৃথক আরও মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে পুলিশের দায়ের করা মামলায় ছাত্রদল নেতা বুলবুল আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মোহাইমেনুর রশিদ। 

পুলিশ জানায়, ছাত্রদল নেতাকে গতকাল নগরের বলাশপুর মরাখোলা এলাকায় অভিযান চালায় ডিবি। ওই সময় মো.

বুলবুল আহমেদকে আটক করা হয়। তাকে তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে পুলিশ। বুলবুল আহমেদ ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন পুলিশের কাছে এমনটি দাবি করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, অস্ত্রসহ বুলবুল আহমেদকে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িতে তোলার সময় তাঁর আত্মীয়স্বজনসহ ২০০ থেকে ২৫০ সমর্থক ডিবি পুলিশের মাইক্রোবাস আটকে আক্রমণ করেন। ওই সময় বুলবুল আহমেদকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে গোয়েন্দা পুলিশের আরেকটি দল সেখানে গেলে উত্তেজিত লোকজন দা ও লাঠি নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় দুটি মাইক্রোবাসে ভাঙচুর করে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়। অভিযানে থাকা এসআই রফিকুল ইসলাম মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এম এম মোহাইমেনুর রশিদ আরও বলেন, অপরাধীর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। কী কারণে অস্ত্রটি সংগ্রহ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে তথ্য উদ্‌ঘাটনে আমাদের চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানভির আহম্মেদ (রবিন) বলেন, বুলবুল আহমেদ আমাদের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করেছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয়, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং বুলবুল আহমেদের সঙ্গে কোনোরূপ সম্পর্ক না রাখতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ছ ত রদল ন ত আহত ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

আসামি পালিয়ে যাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে এসআই’র ধাক্কা!

মারামারি মামলার আটককৃত আসামি পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তার আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ সিংগাইর থানার একজন এসআই’র বিরুদ্ধে। 

রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে ভুক্তভোগী ওই নারী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর সিংগাইর থানার এসআই পার্থ শেখর ঘোষের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এছাড়া, একই মামলার আরেক আসামিকে ধরতে না পেরে তার মেয়ে এবং মেয়ের দেড় বছর বয়সী এক শিশুকে ২১ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জে ও এম তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে।  

এসআই পার্থ শেখর ঘোষের ধাক্কায় আহত অন্তঃসত্ত্বা ওই নারীর নাম সায়মা আক্তার ওরফে সালমা। তিনি সাংবাদিক মাসুম বাদশাকে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার অন্যতম আসামি সিংগাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের হুমায়ুনের স্ত্রী। ধাক্কায় আহত হওয়ার পর সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নেন তিনি।

অপরদিকে, দেড় বছরের শিশুসন্তানসহ ২১ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা নারীর নাম সোনিয়া আক্তার। তিনি একই মামলার আরেক আসামী ওয়াজউদ্দিনের মেয়ে।

পুলিশ সুপার বরাবর অন্তঃসত্ত্বা সায়মা আক্তার ওরফে সালমার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত শনিবার দুপুর ৩টার দিকে সিংগাইর থানার এসআই পার্থ শেখর ঘোষ এবং সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মারামারি মামলার আসামি হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করতে যান। কিন্তু আসামি হুমায়ুন পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যায়। সে পালিয়ে যাওয়ার কারণে এসআই পার্থ ক্ষীপ্ত হয়ে হুমায়ুনের স্ত্রী সায়মা আক্তারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

সালমা অভিযোগে উল্লেখ করেন, সায়মা আক্তার এসআই পার্থকে বলেন তিনি ৮ মাসের গর্ভবতী, একথা শোনার পরও এসআই পার্থ তাকে গালিগালাজ করতে থাকে এবং একপর্যায়ে সায়মা আক্তারকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। ধাক্কা খেয়ে সায়মা আক্তার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহযোগীতায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন সায়মা আক্তার সালমা।

‎অভিযোগে আরো বলা হয়, এ ঘটনার পর সিংগাইর থানার ওসি জে ও এম তৌফিক আজম সায়মা আক্তারের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকি প্রদান করে বলেন, “হুমায়ুন আত্মসমর্পণ না করলে পরিবারের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে।” 

এসময় অসুস্থ সায়মাকে সহযোগিতা করতে আসা পাশের বাড়ির সোনিয়া আক্তার ও আরিফ নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় ওসির নির্দেশে। পরবর্তীতে সোনিয়া আক্তারের দেড় বছরের সন্তান থাকায় ২১ ঘণ্টা থানায় আটকে রেখে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় ও আরিফকে আদালতে চালান করে দেয়।

সিংগাইর থানা সূত্রে জানা যায়, আসামি হুমায়ুন পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর রবিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হুমায়ুনের ভাই আক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী ইয়াসমিনসহ তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে এসআই এসআই পার্থ শেখর ঘোষ।

পুলিশ জানায়, হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার পরিবারের সদস্যরাসহ আশপাশের লোকজন পুলিশকে বাধা প্রদান করে এবং পুলিশের উপর হামলা চালায়। হামলায় এসআই পার্থ শেখর ঘোষ, পুলিশ সদস্য মাহবুবুর রহমান ও মো. শহীদুল ইসলাম আহত হয়। এ ঘটনায় এসআই পার্থ শেখর ঘোষ বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এই মামলার আসামি আক্তার হোসেন, ইয়াসমিন আক্তার চায়না, আরিফ হোসেনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এসআই পার্থ শেখর ঘোষ অন্তঃসত্ত্বা সায়মা আক্তার ওরফে সালমাকে ধাক্কা দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “সাংবাদিক মাসুম বাদশাকে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার পরিবারে সদস্যরা এবং আশপাশের বহু লোক এগিয়ে এসে মব জাস্টিস পরিস্থিতি তৈরি করে হুমায়ুনকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে এবং আমাদের উপর হামলা চালায়। হুমায়ুনের স্ত্রী সায়মা আক্তার ওরফে সালমাকে ধাক্কা দেয়ার বিষয়টি অসত্য। আমার নামে তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আর সোনিয়া আক্তারকে থানায় নিয়ে আসা হলেও ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততা না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”

আসামি সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম বলেন, “আসামি হুমায়ুনের হাতে হাতকড়া পড়ানোর আগেই সে পালিয়ে যায়। আসামী পলায়নে সহযোগিতা, পুলিশের কাজে বাধা ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় তদন্তে সোনিয়া আক্তারের সম্পৃক্ততা না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর বাকি চারজন সম্পৃক্ত থাকায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোসা. ইয়াছমিন খাতুন বলেন, “একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/চন্দন/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১০৫ মিনিট পর স্থগিত ফাইনাল, বাকি খেলা কবে
  • ১০৫ মিনিট পর স্থগিত ফাইনাল, ১৫ মিনিটের খেলা কবে
  • আবাহনী-কিংসের শিরোপা লড়াই আজ
  • আসামি পালিয়ে যাওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে এসআই’র ধাক্কা!
  • এসএসসির চতুর্থ পরীক্ষার দিনে বহিষ্কার ৭৮
  • ময়মনসিংহে বাস থেকে মাথার খুলি-হাড় উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
  • ঢাকার আকাশে কালো মেঘ
  • ‘পুতের মুহেত্তে একটাবার মা ডাক হুনবার চাই’
  • বৈষম্যবিরোধীর ব্যানারে কতিপয় সন্ত্রাসী ক্যাম্পাসে দখলদারিত্ব কায়েম করেছে: ছাত্রদল
  • ময়মনসিংহে পেট্রল বিক্রির দোকানে পুড়ে অঙ্গার ব্যবসায়ী