বেনজীরের সাভানা ইকো পার্কে অভিযান
Published: 21st, January 2025 GMT
পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)। এসময় তারা কর ফাঁকির সত্যত্যা পেয়েছেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী এতথ্য জানান।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি) উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্কে আসেন। তারা পার্কের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন। পরে পার্কের বিভিন্ন অফিস কক্ষের বিনিয়োগের নথি, আয়-ব্যয়ের যাবতীয় হিসাবপত্র ও কম্পিটারের হার্ডডিস্ক ও ফাইলপত্র যাচাই-বাছাই করে তথ্য সংগ্রহ করেন। এসময় তদন্ত দলটি কর ফাঁকির সত্যতা পান। তবে কয়েকটি বিভাগের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পর কী পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে তা জানাতে পারবেন বলে জানায় তদন্ত দলটি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের উপ-পরিচালক শাহ মোহাম্মদ ফজলে এলাহী বলেন, “আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সেলের পক্ষ থেকে ১৫ সদস্যের একটি দল বেনজীর আহমেদের মালিকানাধীন ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কে তদন্ত ও অনুসন্ধানে এসেছি। তদন্ত ও অনুসন্ধানে আমরা সুনির্দিষ্টভাবে বিপুল পরিমাণ অঙ্কের কর ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছি। আমরা আরো কিছু দপ্তর থেকে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছি। সবকিছু
হাতে আসার পরে আমরা বলতে পারব কী পরিমাণ কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ, সব নথিপত্র পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন কর অফিসকে পাঠাব। পরবর্তীতে কর অফিস তার (বেনজীর আহমেদ) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।”
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে দুই সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুদকের অভিযান
মাউন্ট একঙ্কাগুয়া অভিযানে যাচ্ছেন জাফর সাদেক
তিনি আরো বলেন, “অভিযোগ রয়েছে জমি দখল করে এই পার্কটি করেন বেনজীর আহমেদ। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তারো তদন্ত করা হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সাবেক আইজিপির সব স্থাপনায় অভিযান চালানো হবে। কর ফাঁকির তথ্য কর বিভাগকে জানানো হবে। সেটার ওপর ভিত্তি করে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) উপ-পরিচালক মো.
সাভানা ইকো রিসোর্ট ও ন্যাচারাল পার্ক। ইনসেট: বেনজীর আহমেদে
উল্লেখ্য, র্যাবের মহাপরিচালক ও পুলিশের আইজিপি থাকাকালীন বেনজীর আহমেদ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বৈরাগীটোল গ্রামে ৬২১ বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলেন সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্ক। এ পার্কে জমির প্রায় সবই ভয় দেখিয়ে ও জোর করে দখল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করে। পরে আদালত সাভানা ইকো রিসোর্ট অ্যান্ড ন্যাচারাল পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা জব্দের নির্দেশ দেন। গত বছরের জুনে এই পার্কটি আদালতের নির্দেশে ক্রোক করে স্থানীয় প্রশাসন। পার্কটি রিসিভার নিয়োগের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পাবনায় সড়কে গাছ ফেলে ৪০ গাড়িতে ডাকাতি
পাবনার সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কে গাছ ফেলে বাস-ট্রাকসহ অন্তত ৪০টি গাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে ঘটে এ ঘটনা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান।
এ বিষয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রাত দেড়টার দিকে ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে ডাকাতরা। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ও মাইক্রোসহ প্রায় ৪০টি গাড়ি আটকে পড়ে। এসময় ৪০ থেকে ৫০ জন হাসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে ডাকাতি চালায়। গাড়ির গেট খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুরও করে। এসময় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ তাণ্ডব।
ডাকাতির কবলে পড়া আব্দুস সালাম নামে এক ইসলামী বক্তা ফেসবুকে দেওয়া ভিডিও বক্তব্যে বলেন, কিছুক্ষণ আগে এই সড়কে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়িগুলোতে ডাকাতি করেছে। হুট করে আমাদের গাড়িতে আক্রমণ করে ডাকাত দলের সদস্যরা। বারবার গাড়িতে আঘাতের পর আমরা ড্রাইভারকে গেট খুলে দিতে বললে ডাকাতরা ঢুকে ড্রাইভারের গলা ও পেটে চাকু ধরে। একইভাবে অন্যদেরও জিম্মি করে সব লুটে নিয়ে যায়। আমরা বলেছি, ভাই যা আছে সব নেন, কিন্তু কাউকে আঘাত কইরেন না। আমাদের গাড়িতে কাউকে আঘাত করেনি। অনুরোধ করায় আমার দুটি মোবাইল ফেরত দিয়ে যায়।
তিনি বলেন, একটি মাইক্রোতে করে দেশে ফিরছিলেন এক প্রবাসী। ওই গাড়িতে আক্রমণ করে কয়েকজনকে মারধর করে সব লুটে নিয়ে গেছে। একইভাবে সব গাড়িতে পর্যায়ক্রমে ডাকাতি চালায়। গাড়ি ভাঙচুর ও অনেককেই মারধর করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু বলেন, ঘটনা শুনেছি। এখনো বিস্তারিত জানি না। তবে ওই রাস্তাটি খুব বেশি ব্যস্ত না হলেও বেড়া-বাঘাবাড়ি হয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বেশকিছু গাড়ি ওই রাস্তা দিয়ে যায়। এটি ডাকাতরা জেনেই গাছ ফেলে ডাকাতি করেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ পাঠানো হয়। সুনির্দিষ্ট করে সংখ্যা বলতে না পারলেও কয়েকটি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এনজে