বিদেশি অস্ত্রসহ ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার, অভিযানকালে অনুসারীদের হামলায় এসআই আহত
Published: 21st, January 2025 GMT
ময়মনসিংহে ছাত্রদলের এক নেতার কাছে বিদেশি পিস্তল রয়েছে এমন খবরে অভিযান চালায় পুলিশের একটি দল। অভিযানকালে অস্ত্রসহ ছাত্রদল নেতাকে আটকের পর পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালান তার অনুসারীরা। এ সময় ভাঙচুর করা হয় পুলিশের দুটি গাড়ি। হামলায় আহত হন এক উপপরিদর্শক (এসআই)।
সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের বলাশপুর মরাখোলা এলাকায় অভিযান চালায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এসময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ছাত্রদল নেতার নাম বুলবুল আহমেদ ওরফে সজীব (৩০)।
এদিকে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা, সরকারি কাজে বাধা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাত ২৫০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় পৃথক আরও মামলা হয়েছে। সোমবার রাতে পুলিশের দায়ের করা মামলায় ছাত্রদল নেতা বুলবুল আহমেদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মোহাইমেনুর রশিদ।
পুলিশ জানায়, ছাত্রদল নেতাকে গতকাল নগরের বলাশপুর মরাখোলা এলাকায় অভিযান চালায় ডিবি। ওই সময় মো.
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, অস্ত্রসহ বুলবুল আহমেদকে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িতে তোলার সময় তাঁর আত্মীয়স্বজনসহ ২০০ থেকে ২৫০ সমর্থক ডিবি পুলিশের মাইক্রোবাস আটকে আক্রমণ করেন। ওই সময় বুলবুল আহমেদকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে গোয়েন্দা পুলিশের আরেকটি দল সেখানে গেলে উত্তেজিত লোকজন দা ও লাঠি নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় দুটি মাইক্রোবাসে ভাঙচুর করে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়। অভিযানে থাকা এসআই রফিকুল ইসলাম মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এম এম মোহাইমেনুর রশিদ আরও বলেন, অপরাধীর সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। কী কারণে অস্ত্রটি সংগ্রহ করা হয়েছিল, সে বিষয়ে তথ্য উদ্ঘাটনে আমাদের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানভির আহম্মেদ (রবিন) বলেন, বুলবুল আহমেদ আমাদের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে পদ থেকে বহিষ্কার করেছে।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয়, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ মহানগর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুলবুল আহমেদকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং বুলবুল আহমেদের সঙ্গে কোনোরূপ সম্পর্ক না রাখতে সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ ছ ত রদল ন ত আহত ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র
এছাড়াও পড়ুন:
বাকিতে গরুর মাংস বিক্রি না করাকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
বাকিতে গরুর মাংস বিক্রি না করাকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ঘিরইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। দুজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও ধর্মপাশা থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল রোববার বেলা দুইটার দিকে উপজেলার ঘিরইল গ্রামের বাসিন্দা শামীমসহ (২৬) কয়েকজন মিলে ওই গ্রামের একটি বাড়ির উঠানে গরুর মাংস বিক্রি করার জন্য একটি ষাঁড় জবাই করেন। এ সময় একই গ্রামের বাসিন্দা হেলিম মিয়া (২৫) বাকিতে গরুর মাংস নিতে চাইলে শামীম ও তাঁর লোকজন এতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাত আটটার দিকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিস বসে ঘটনাটি মীমাংসা করে দেন।
আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঘিরই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শামীম ও হেলিম পক্ষের লোকজনদের মধ্যে গরুর মাংস বাকিতে না দেওয়ার ঘটনা নিয়ে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে আল আমিন (৪০), জাহাঙ্গীর (২০), আশরাফুল (৩৫), হাফিজ উদ্দিন (২৫), অনি মিয়া (২৪), হারুন (৬০), করম আলী (৬০), নুর নবীসহ (৪০) ১৫ জন আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। আল আমিন ও জাহাঙ্গীর গুরুতর আহত হওয়ায় তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ছয়জনকে ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহত অন্যরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এনামুল হক আজ বিকেল পৌনে চারটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গরুর মাংস বাকিতে বিক্রি না করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’