বাইডেনের আটকে দেওয়া বোমা ইসরায়েলকে দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
Published: 21st, January 2025 GMT
ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচার হামলা চালানোয় ইসরায়েলের জন্য তৈরি করা ‘২০০০ পাউন্ডের’ শক্তিশালী বোমার একটি চালান আটকে দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে গতকাল সোমবার দায়িত্ব নেওয়া নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব বোমা ইসরায়েলকে ফেরত দিতে যাচ্ছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই চালানটির ছাড় করার নির্দেশ দেবেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরায়েলি দূতের বরাতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ওয়াল্লা নিউজ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসও একই তথ্য জানিয়েছে।
এছাড়া ইসরায়েলি উগ্র বসতিস্থাপনকারীদের ওপর বাইডেন যেসব নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন; ট্রাম্প সেগুলোও তুলে নিতে যাচ্ছেন। ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিমতীরে দখলদার ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপনকারীরা সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রায়ই হামলা চালায়। এসব হামলা বন্ধে উগ্রপন্থি এসব ইসরায়েলির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাইডেন প্রশাসন।
এদিকে শপথ গ্রহণের পর ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি বিশ্বে শান্তি আনা ও সব যুদ্ধ বন্ধের জন্য কাজ করবেন। তবে এরমধ্যেই জানা গেল, ইসরায়েলকে বিধ্বংসী এসব বোমা দিতে যাচ্ছেন তিনি। গাজার খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি ক্যাম্পে গত সেপ্টেম্বরে ‘২০০০ পাউন্ডের’ একটি বোমা ফেলেছিল ইসরায়েলি সেনারা। এতে সেখানে ৩৩/৫০ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাশার আল-আসাদকে উদ্ধারে ইরানের পাঠানো উড়োজাহাজ রুখে দিয়েছিল ইসরায়েল: নেতানিয়াহু
সিরিয়ার পরিস্থিতি তখন টালমাটাল। যেকোনো মুহূর্তে রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়বেন বিদ্রোহী যোদ্ধারা। সেই পরিস্থিতিতে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উদ্ধার করতে উড়োজাহাজ পাঠিয়েছিল সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান। কিন্তু বাধ সাদে ইসরায়েল। ইসরায়েলের একাধিক যুদ্ধবিমান উড়ে যায়। মাঝ আকাশে রুখে দেয় ইরানি উড়োজাহাজ। ফলে ইরানি উড়োজাহাজ আর দামেস্কে পৌঁছাতে পারেনি। এমনটাই দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ভোরবেলা দামেস্কে ঢুকে পড়েন বিদ্রোহী যোদ্ধারা। পতন হয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের। রাশিয়ায় পালিয়ে যান তিনি। এর মধ্য দিয়ে যুদ্ধকবলিত সিরিয়ায় টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে চলা আল-আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান ঘটে।
বাশার আল-আসাদ ও ইরান প্রসঙ্গে গতকাল রোববার রাতে কথা বলেন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, তারা (ইরান) বাশার আল-আসাদকে উদ্ধার করতে চেয়েছিল। সিরিয়ার এই নেতাকে সহায়তার জন্য উড়োজাহাজ পাঠিয়েছিল ইরান। কিন্তু ইসরায়েল তা রুখে দেয়। সেদিন দামেস্কমুখী ইরানের কিছু উড়োজাহাজের দিকে বেশ কয়েকটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠায় ইসরায়েল। পরে ইরানি উড়োজাহাজগুলো ফিরে যায়।
এ বিষয়ে আর কোনো তথ্য দেননি নেতানিয়াহু। ইরানের দিক থেকেও বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন২৯ বছর মসনদে থাকা বাবার হাতেই উত্থান বাশারের, ক্ষমতায় টিকলেন দুই যুগ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪গত বছরের ৮ ডিসেম্বর বাশার আল-আসাদকে নিরাপদে সিরিয়া থেকে সরিয়ে নিতে উড়োজাহাজ পাঠিয়েছিল আরেক ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া। পরে সেই উড়োজাহাজে করেই তিনি মস্কোয় পালিয়ে যান।
পরবর্তী বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দামেস্ক ছেড়ে বাশার আল-আসাদ প্রথমে সিরিয়ার উপকূলীয় শহর লাতাকিয়ায় রাশিয়ার বিমানঘাঁটিতে যান। সেখান থেকে তাঁকে মস্কোয় উড়িয়ে নেওয়া হয়। আর মস্কোয় আগে থেকেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী আসমা আসাদ ও তাঁদের তিন সন্তান।
আরও পড়ুনসিরিয়ায় স্বৈরশাসক আসাদের শেষ কয়েক ঘণ্টা কেমন ছিল, কীভাবেই-বা পালালেন১৬ ডিসেম্বর ২০২৪আল-আসাদ পরিবার টানা পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে সিরিয়া শাসন করে। এর মধ্যে ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন হাফিজ আল-আসাদ। ২০০০ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর সিরিয়ার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন তাঁর ৩৪ বছর বয়সী ছেলে বাশার আল-আসাদ। টানা ২৪ বছর তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
বাশার আল-আসাদের আমলের শেষ ১৩ বছর গৃহযুদ্ধে জর্জরিত ছিল সিরিয়া। টানা গৃহযুদ্ধে সিরিয়ায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ নিহত হন। উদ্বাস্তু হন দেশটির প্রায় অর্ধেক মানুষ। ইতিহাসের সবচেয়ে করুণ মানবিক সংকট দেখা দেয় সিরিয়ায়।
আরও পড়ুনবাশার আল-আসাদ: এগারোতে টিকে গেলেও চব্বিশে পালাতে হলো৩০ ডিসেম্বর ২০২৪আরও পড়ুনসিরিয়া ছাড়ার পরিকল্পনা ‘ছিল না’ বাশার আল-আসাদের১৬ ডিসেম্বর ২০২৪