শীতার্ত সেই বেদেগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ালেন ইউএনও
Published: 21st, January 2025 GMT
ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কুমার নদ ঘেঁষে বাস করা শীতার্ত সেই বেদেগোষ্ঠীর কাছে সন্ধ্যার আগে আগেই শীতের কম্বল নিয়ে ছুটলেন ভাঙ্গার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান। বিকেল তখন ৫টা, সেখানে থাকা বেদেদের কেউই তখনও জানেন না তাদের জন্য শীতের কম্বল নিয়ে পথে আছেন কেউ। সেখানে পৌঁছেই ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কুমার নদ ব্রিজের নিচে বসবাসরত বেদেদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন তিনি।
ইউএনও মিজানুর জানান, গত রোববার সমকালে প্রকাশিত বেদে গোষ্ঠীদের নিয়ে প্রতিবেদনটি সংশ্লিষ্টদের নজর কাড়ে। এরপর বেদেদের সঙ্গে কথা বলার পর জানা যায়, খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। তাদের মাথা গোঁজার মতো ঠাঁই নেই। আমরা চেষ্টা করবো তাদের জন্য একটি আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। এই শীতে তাদের যে কষ্ট নিবারণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের কম্বল দেওয়া হয়েছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা উপকরণসহ সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
শীতের কম্বল পেয়ে বেদেনি আখিনুর, মিম ও শাহীনুর বেগম জানান, ইউএনওর কম্বল পেয়ে এই শীতের কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে। এতে অনেক খুশি তারা।
বেদে সর্দারনি শাহীনুর জানান, তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন ইউএনও। এতে তাদের সন্তানরা সামাজিক শিক্ষায় আলোকিত হবে। প্রায় ১৪টি পরিবারের সদস্যদের জন্য স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইউএনও। এতে উপজেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বেদেরা।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি সমকালে বাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠি মোরা এই শিরোনামে ও সমকাল ডিজিটাল ইউটিউবে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে বনভূমি থেকে ৫৬টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
গাজীপুরের শ্রীপুরে সংরক্ষিত বনভূমি জবরদখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান চালিয়েছে প্রশাসন।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে ৫৬টি বসতবাড়ি ও অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
অভিযানটি পরিচালনা করেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ। এতে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও বন বিভাগের চার শতাধিক সদস্য অংশ নেন।
উচ্ছেদকৃত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি। অসহায় মানুষের চোখে-মুখে হতাশা, শিশুরা কাঁদছে, কেউ খোলা আকাশের নিচে বসে আছে।
গাজীপুরের শ্রীপুরে সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান
উপজেলা প্রশাসন জানায়, ৫ আগস্টের পরপরই শ্রীপুর রেঞ্জের সাতখামাইর বিটের তালতলী পেলাইদ ও সাইটালিয়া গ্রামে অবৈধভাবে বনভূমি দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ শুরু হয়। এ অবস্থায় মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোকলেছুর রহমান বলেন, “সংরক্ষিত বনভূমি রক্ষায় এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে। আজকের অভিযানে প্রায় ৪ একর বনভূমি উদ্ধার হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।”
তবে উচ্ছেদ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। অনেকের অভিযোগ, পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা ছাড়াই তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে।
পোশাক শ্রমিক আকলিমা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “গার্মেন্টসে দিনরাত পরিশ্রম করে যা উপার্জন করেছি, তা দিয়েই একটি ঘর তুলেছিলাম। আজ সব শেষ। আমার মতো গরিবের ঘরটাই চোখে পড়ল?”
শ্রীপুরে সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
নূরুল ইসলাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। নিজের কোনো জমি নেই। কষ্ট করে একটা ঘর বানিয়েছিলাম। আমাদের আশপাশে তো কোনো গাছপালা নেই, বনই নেই। তাহলে কেন আমাদের ঘর ভাঙা হলো?”
এ বিষয়ে ইউএনও সজীব আহমেদ বলেন, “বনভূমি রক্ষায় আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছি। ৫ আগস্টের পর থেকে এই এলাকায় পরিকল্পিতভাবে বনভূমি দখলের চেষ্টা চলছিল। আজকের অভিযানে আমরা সেসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি।”
ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশিরুল আল মামুন বলেন, “৫ আগস্টের পর একটি মহল বনভূমি দখল করে হাজার হাজার স্থাপনা নির্মাণ করেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সব ভেঙে বনভূমি মুক্ত করব।”
ঢাকা/রফিক/টিপু