বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্লে-অফ পর্বের লড়াই জমে উঠেছে। ইতোমধ্যেই টানা আট ম্যাচ জিতে শেষ চার নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। বাকি তিনটি জায়গার জন্য এখনও লড়াই করছে ছয় দল। ৪২ ম্যাচের লিগ পর্বের ২৮টি ম্যাচ শেষে, প্লে-অফ নিশ্চিত করতে দলগুলোর কী করতে হবে, তা জেনে নেওয়া যাক:  

চিটাগং কিংস: মোহাম্মদ মিথুনের নেতৃত্বাধীন চিটাগং কিংস ৮ ম্যাচে ৫ জয়ে প্লে-অফের খুব কাছে। বুধবার ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারালে তারা প্লে-অফে এক পা দিয়ে রাখবে। শেষ চার ম্যাচে ২টি জয় পেলেই তাদের শেষ চার নিশ্চিত হবে। বাকি ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল।  

ফরচুন বরিশাল: গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল এবারও দারুণ ছন্দে রয়েছে। ৭ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকা বরিশালকে বাকি পাঁচ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জিততে হবে প্লে-অফ নিশ্চিত করতে। তাদের প্রতিপক্ষ ঢাকা, সিলেট, চিটাগং এবং খুলনা। এর মধ্যে খুলনার বিপক্ষে দুটো ম্যাচ খেলবে তামিম ইকবালের দল।  

খুলনা টাইগার্স: মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন খুলনা টাইগার্স ৭ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে। প্লে-অফ নিশ্চিত করতে বাকি ৫ ম্যাচে অন্তত ৩টি জিততে হবে। অন্যথায় তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর ফলাফলের দিকে। তাদের প্রতিপক্ষ বরিশাল, সিলেট, রংপুর এবং ঢাকা।

দুর্বার রাজশাহী: ৯ ম্যাচে মাত্র ৩ জয়ে দুর্বার রাজশাহীর প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। বাকি তিন ম্যাচে অন্তত ২টি জিততে হবে, তাও প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। তাদের প্রতিপক্ষ রংপুর এবং সিলেট। এর মধ্যে দুটো ম্যাচই শক্তিশালী রংপুরের বিপক্ষে, যারা এখনও অপরাজিত।  

ঢাকা ক্যাপিটালস: ঢাকা ক্যাপিটালস টুর্নামেন্টে আলোড়ন তুললেও পারফরম্যান্সে ব্যর্থ। ৯ ম্যাচে মাত্র ৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে যেতে হলে বাকি তিন ম্যাচে জয় পেতে হবে। প্রতিপক্ষ হলো চিটাগং, বরিশাল এবং খুলনা—সবকটিই পয়েন্ট টেবিলের উপরের দল।

সিলেট স্ট্রাইকার্স: ৮ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট টেবিলের তলানিতে। বাকি চারটি ম্যাচে তাদের জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। হারলে পড়তে হবে যদি-কিন্তুর সমীকরণে। তাদের প্রতিপক্ষ খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী এবং চিটাগং।  

রংপুর রাইডার্স: রংপুর রাইডার্স ইতোমধ্যেই প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে। বাকি চারটি ম্যাচে কোনো জয় না পেলেও তাদের সমস্যা হবে না। তবে শীর্ষ দুইয়ে থাকতে হলে আরও একটি জয় প্রয়োজন। নুরুল হাসান সোহানের দল নির্ভার থাকলেও শীর্ষস্থানে থাকার লক্ষ্যেই মাঠে নামবে।  

প্লে-অফ নিশ্চিত করতে দলগুলোর জন্য প্রতিটি ম্যাচ এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেষ মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত বিপিএলের লড়াই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল দলগ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

৯০ দিনের মধ্যে গণহত্যার বিচার ও অবিলম্বে আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল দাবি

আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই গণহত্যার বিচার, ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অবিলম্বে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধকরণের দাবি জানিয়েছে কয়েকটি সংগঠন। 

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বরাবর এক স্মারকলিপিতে তারা এ দাবি জানান। জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স, অ্যান্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিশন, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, স্টুডেন্ট এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি নামের সংগঠনগুলোর পাঁচ প্রতিনিধিরা এ দাবি তুলে ধরেন।

আইন উপদেষ্টার কাছে ওই স্মারকলিপিতে তারা লিখেছেন, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সংঘটিত ভয়াবহ গণহত্যা আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায়। রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের যৌথ নির্দেশনায় এদেশের সাধারণ নাগরিকদের ওপর চালানো হয়েছে পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ, যার ফলে দুই সহস্রাধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং বহু মানুষ এখনও পঙ্গু ও নিখোঁজ। এই গণহত্যার বিচার এখনও শুরু হয়নি। বিচার প্রক্রিয়া হচ্ছে চরম ধীরগতির, নানাভাবে প্রতিহত করা হচ্ছে রাষ্ট্রীয় কাঠামো ব্যবহার করে। বিচারহীনতার এই ধারাবাহিকতা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৩২ ধারার অপব্যবহারের মাধ্যমে, যা সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি গ্রহণের বিধান দেয়। এই ধারা বর্তমানে রাষ্ট্রীয় খুনিদের বিচার এড়ানোর আইনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বহু প্রশাসনিক কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে। হাজার হাজার ভুক্তভোগী এখনও মামলা ও হয়রানির মুখোমুখি, অনেক নিরীহ নাগরিককে গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে, যাদের অধিকাংশের নামই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা মামলা ও মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত।

স্মারকলিপিতে দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফৌজদারি কার্যবিধি ১৩২ ধারা অবিলম্বে বাতিল বা সংস্কার করতে হবে, যাতে সরকারি কর্মকর্তারা দায়মুক্তি না পান। আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানে সংগঠিত গণহত্যার বিচার, শাপলায় সংঘটিত গণহত্যা, পিলখানা, ২৮ ফেব্রুয়ারি এবং ২৬ মার্চসহ সকল হত্যাকাণ্ডের দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত ও দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলের যেসব নেতা গত তিন নির্বাচনে ক্ষমতায় ছিলেন-তাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। বিগত ১৫ বছরে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। গণহত্যা তদন্তে অসহযোগিতাকারী সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখনও গুম থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান দিতে হবে এবং আয়নাঘর এবং গুমে জড়িতদের শাস্তির ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করতে হবে। বিগত জুলাই আন্দোলনে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক মামলাগুলোসহ গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে দায়ের করা ষড়যন্ত্র, প্রহসন এবং রাজনৈতিক হয়রানিমূলক সকল মামলা বাতিল করতে হবে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে, অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগ এবং তাদের অঙ্গসংগঠনসমূহকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নামক দলটি বারবার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, রাষ্ট্রকে ব্যবহার করেছে নিজস্ব স্বার্থে এবং জনগণের ওপর চালিয়েছে ফ্যাসিবাদী নিপীড়ন। এই মুহূর্তে এ দলটিকে নিষিদ্ধ ও নিবন্ধন বাতিল করা না হলে ভবিষ্যতে দেশকে আরও ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা আশাবাদী, আপনি এই সংকটময় সময়ে সাহসী ও ন্যায়নিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন। ইতিহাসের আদালতে আপনি ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেবেন-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নবীনগরে হেফাজতের কমিটি নিয়ে মুখোমুখি দু’পক্ষ
  • ফেসবুক লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা
  • ফরিদপুরে যুবককে কুপিয়ে জখম, থানায় মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পরিবারের
  • বাংলাদেশকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ দেখছে জিম্বাবুয়ে
  • লেনিন কেন এখনও জরুরি
  • মিয়ানমার জান্তার মরিয়া চেষ্টা
  • হাওরে হাওরে ধান কাটার ধুম
  • ৯০ দিনের মধ্যে গণহত্যার বিচার ও অবিলম্বে আ.লীগের নিবন্ধন বাতিল দাবি