বিপিএলের প্লে-অফ লড়াই: কোন দলের কী সমীকরণ
Published: 21st, January 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্লে-অফ পর্বের লড়াই জমে উঠেছে। ইতোমধ্যেই টানা আট ম্যাচ জিতে শেষ চার নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। বাকি তিনটি জায়গার জন্য এখনও লড়াই করছে ছয় দল। ৪২ ম্যাচের লিগ পর্বের ২৮টি ম্যাচ শেষে, প্লে-অফ নিশ্চিত করতে দলগুলোর কী করতে হবে, তা জেনে নেওয়া যাক:
চিটাগং কিংস: মোহাম্মদ মিথুনের নেতৃত্বাধীন চিটাগং কিংস ৮ ম্যাচে ৫ জয়ে প্লে-অফের খুব কাছে। বুধবার ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারালে তারা প্লে-অফে এক পা দিয়ে রাখবে। শেষ চার ম্যাচে ২টি জয় পেলেই তাদের শেষ চার নিশ্চিত হবে। বাকি ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল।
ফরচুন বরিশাল: গতবারের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল এবারও দারুণ ছন্দে রয়েছে। ৭ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তৃতীয় স্থানে থাকা বরিশালকে বাকি পাঁচ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জিততে হবে প্লে-অফ নিশ্চিত করতে। তাদের প্রতিপক্ষ ঢাকা, সিলেট, চিটাগং এবং খুলনা। এর মধ্যে খুলনার বিপক্ষে দুটো ম্যাচ খেলবে তামিম ইকবালের দল।
খুলনা টাইগার্স: মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন খুলনা টাইগার্স ৭ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে। প্লে-অফ নিশ্চিত করতে বাকি ৫ ম্যাচে অন্তত ৩টি জিততে হবে। অন্যথায় তাদের তাকিয়ে থাকতে হবে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর ফলাফলের দিকে। তাদের প্রতিপক্ষ বরিশাল, সিলেট, রংপুর এবং ঢাকা।
দুর্বার রাজশাহী: ৯ ম্যাচে মাত্র ৩ জয়ে দুর্বার রাজশাহীর প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা খুবই কম। বাকি তিন ম্যাচে অন্তত ২টি জিততে হবে, তাও প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করে। তাদের প্রতিপক্ষ রংপুর এবং সিলেট। এর মধ্যে দুটো ম্যাচই শক্তিশালী রংপুরের বিপক্ষে, যারা এখনও অপরাজিত।
ঢাকা ক্যাপিটালস: ঢাকা ক্যাপিটালস টুর্নামেন্টে আলোড়ন তুললেও পারফরম্যান্সে ব্যর্থ। ৯ ম্যাচে মাত্র ৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে যেতে হলে বাকি তিন ম্যাচে জয় পেতে হবে। প্রতিপক্ষ হলো চিটাগং, বরিশাল এবং খুলনা—সবকটিই পয়েন্ট টেবিলের উপরের দল।
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ৮ ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট টেবিলের তলানিতে। বাকি চারটি ম্যাচে তাদের জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। হারলে পড়তে হবে যদি-কিন্তুর সমীকরণে। তাদের প্রতিপক্ষ খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী এবং চিটাগং।
রংপুর রাইডার্স: রংপুর রাইডার্স ইতোমধ্যেই প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে। বাকি চারটি ম্যাচে কোনো জয় না পেলেও তাদের সমস্যা হবে না। তবে শীর্ষ দুইয়ে থাকতে হলে আরও একটি জয় প্রয়োজন। নুরুল হাসান সোহানের দল নির্ভার থাকলেও শীর্ষস্থানে থাকার লক্ষ্যেই মাঠে নামবে।
প্লে-অফ নিশ্চিত করতে দলগুলোর জন্য প্রতিটি ম্যাচ এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শেষ মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিতে প্রস্তুত বিপিএলের লড়াই।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ
অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।
শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।
খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।
শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।
কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।
বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।
এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।
গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।
রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।