শিক্ষার্থী-বহিরাগত সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যশোর এমএম কলেজ
Published: 21st, January 2025 GMT
যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ ক্যাম্পাসে রাতে বহিরাগতদের ধূমপান নিষেধ করায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনার জের ধরে সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে কলেজের আসাদ হল সংলগ্ন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থী ও বহিরাগতদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। দুই ঘণ্টা পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) জুয়েল ইমরান বলেন, “তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের সাথে শিক্ষার্থীদের কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। শিক্ষার্থীরা সবাই ভেতরে অবস্থান করছে।”
জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যার দিকে যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের শহিদ আসাদ হল এলাকায় দুইজন বহিরাগত প্রকাশ্যে ধূমপান করছিলেন। এ সময় তাদের ধূমপানে নিষেধ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করে বহিরাগত দুইজন। খবর পেয়ে আসাদ হল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এগিয়ে আসে। এ নিয়ে হৈচৈ শুরু হয়। খবর পেয়ে স্থানীয় খড়কি এলাকার ভাগ্নে সাগর তার অনুসারী ৪০ থেকে ৫০ জনকে নিয়ে আসাদ হল লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। তখন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া দেয়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় ইটপাটকেলে অন্তত ৩ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষনিকভাবে তাদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি।
শিক্ষার্থীদের মারধর, আসাদ হলে হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় জেলা যুবদল, ছাত্রদল ও প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রাত ১০টার দিকে শিক্ষার্থীদের মারপিট ও আসাদ হলে ইটপাটকেল নিক্ষোভকারীদের শাস্তির দাবিতে মিছিল বের করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়া মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
যশোর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, “দীর্ঘ বছর কলেজে ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় সাগর গ্যাং তৈরি করেছিল। ছিনতাই, মাদক সেবন ও বেচাকেনাসহ আশপাশের ছাত্রাবাসগুলোর সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরক্ত করতেন। আজ (গতকাল) ক্যাম্পাসে কিছু ছেলেকে মারধর করে সে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সাগর ও তার টোকাই ছেলেদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।”
এ বিষয়ে সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের অধ্যক্ষ ড.
এ সময় আরেক প্রশ্নের জবাবে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, “আমি শিক্ষার্থীদের কোনো খোঁজ-খবরই নিইনি। নিচ্ছি না।”
ঢাকা/রিটন/ইমন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত এ সময় ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের জন্য কী না করেছি: সাবেক আইজিপি শহীদুল
রাজধানীর কাফরুল থানাধীন এলাকায় আতিকুল ইসলামকে হত্যার মামলায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৩ মার্চ) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে একটি প্রিজন ভ্যানে করে শহীদুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।
এ মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকেও গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছিল। তাদেরকেও আদালতে হাজির করা হয়।
সকাল ১০টার দিকে তাদেরকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্রের আদালতে নেওয়া হয়। তাদেরকে আসামিদের জন্য রাখা ডকে রাখা হয়। এ সময় শহীদুল হক কাঠগড়ার একপাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাকে ছটফট করতে দেখা যায়। আইনজীবীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন তিনি। তবে, কাঠগড়ার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে কথা বলতে দেননি। তারা আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলতে বলেন। এরপরও আইনজীবীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন শহীদুল হক।
এরইমাঝে ১০টা ৭ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে ওঠেন। আতিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় ছয় জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত। পরে মোহাম্মদপুর থানার এক মামলায় আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। এরপর কামাল আহমেদ মজুমদারের বক্তব্য শোনেন। ১০টা ১৬ মিনিটে বিচারক এজলাস ত্যাগ করেন।
এরপর শহীদুল হক আবারও তার আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তাতে বাধা দেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। তারা শহীদুল হককে বলেন, যার সাথেই কথা বলেন না কেন, আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
পরে শহীদুল হক আক্ষেপের সাথে বলেন, “পুলিশের জন্য কী না করেছি।”
এরপর শহীদুল হকসহ অন্য আসামিদের সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর রাতে শহীদুল হককে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
ঢাকা/মামুন/রফিক