জলবায়ু পরিবর্তন আটকাতে গৃহীত ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি’ থেকে বেরিয়ে আসার নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন নির্গমনকারী এই দেশটিকে জলবায়ু চুক্তির বাইরে নিয়ে যাওয়া হলো। এর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদেও ট্রাম্প বিশ্বের সর্ববৃহৎ কার্বন নির্গমনকারী এই দেশটিকে বের করে নিয়েছিলেন।

পরে ২০২১ সালে ক্ষমতায় এসেই প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে ফেরার ঘোষণা দিয়েছিলেন জো বাইডেন। মূলত বাইডেন হোয়াইট হাউসে বসার ঠিক এক মাস পর আন্তর্জাতিক জলবায়ু চুক্তি বা প্যারিস চুক্তিতে ফিরেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে প্যারিসে স্বাক্ষরিত বৈশ্বিক জলবায়ু চুক্তিটি ইতিহাসে প্রথমবারের মতো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্বের দেশগুলোকে একতাবদ্ধ করেছিল। সেসময় দুইশটির মতো দেশ গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে ঐক্যমত্য পোষণ করে।

তবে বিজ্ঞানীরা বরাবরই বলেছেন, পৃথিবীতে আসন্ন বিপজ্জনক জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে প্যারিস চুক্তিকে অবশ্যই কার্যকর করতে হবে। আর এমন সময়ই এই জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আদেশে স্বাক্ষর করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জলব য জলব য়

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের প্রতিশোধ না অস্ট্রেলিয়ার দাপট

‘ভরা গ্যালারিকে চুপ করিয়ে দেওয়ার মতো সন্তুষ্টি আর কিছুতে নেই’– ২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর আহমেদাবাদে কথাটি বলেছিলেন প্যাট কামিন্স। দুবাইয়ের গ্যালারিও আজ ভারতীয় সমর্থকে পরিপূর্ণ থাকবে। কামিন্সের অনুপস্থিতিতে নিশ্চিতভাবেই তাঁর সেই কথা বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবেন স্মিথ-ম্যাক্সওয়েলরা। তাই ভারতবাসীর মনে একটা ভয়-শঙ্কা কাজ করছেই। আহমেদাবাদের ফাইনালের মতো হৃদয় ভেঙে দেবে না তো অস্ট্রেলিয়া! এই ভয়ের উল্টো পিঠে ভারতের জন্য রয়েছে প্রতিশোধের সুবর্ণ সুযোগও। মরুর দেশে আজ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিতে কে বাজিমাত করবে?

অস্ট্রেলিয়ার জন্য গ্রুপ পর্বটা একেবারেই আদর্শ ছিল না। বৃষ্টির কারণে পাকিস্তানে তাদের দুটি ম্যাচ পরিত্যক্ত। তার পর তড়িঘড়ি করে ফ্লাইট ধরে দুবাইয়ে উড়ে আসতে হয়েছে সেমির জন্য। তার ওপর দলের সেরা তিন পেসার– কামিন্স, স্টার্ক, হ্যাজেলউডসহ নিয়মিত ছয়জন নেই। দলটির নাম অস্ট্রেলিয়া বলেই হেলাফেলা করা যায় না। আইসিসি ইভেন্টে যাদের রেকর্ড অনন্য। হলুদ জার্সি গায়ে জড়ালেই অপরিচিত জনসন-ইংলিসরা দানব হয়ে ওঠেন। যেমনটা ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে করেছিলেন ট্রাভিস হেড। দু’দলের সর্বশেষ সেই ওয়ানডে ম্যাচে ভারতের ২৪০ রান তাড়া করতে নেমে পঞ্চাশের আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে ১৩৭ রানের নান্দনিক এক ইনিংস খেলে চোখের পলকে ভারতকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে নিয়েছিলেন ট্রাভিস হেড। এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতকে কাঁদিয়েছিলেন তিনি। আজও কি তিনি জ্বলে উঠবেন? নাকি অন্য কোনো নবীন হয়ে উঠবেন ট্রাভিস হেড! কিংবা অভিজ্ঞ স্টিভ স্মিথ বা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝলক দেখা যাবে আজ?

দুই বছর আগের সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতা সবচেয়ে তরতাজা ভারত অধিনায়কের। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য প্রতিশোধ শব্দটা আনতে চাইলেন না রোহিত, ‘অস্ট্রেলিয়া কঠিন এক প্রতিপক্ষ। গত তিন ম্যাচে আমরা যে চিন্তাধারা নিয়ে মাঠে নেমেছি, যেভাবে খেলেছি; এই ম্যাচেও আমাদের একই মনোভাব থাকবে।’ এমনকি অস্ট্রেলিয়ার সেরা একাদশের ছয়জন না থাকার পরও তাদের মনোভাবে কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন না রোহিত, ‘অনেক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া পরাশক্তির মর্যাদা ধরে রেখেছে। তারা কঠিন লড়াই করবে, সে বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। আর সেমিফাইনালে তো উভয় দলের ওপরই জয়ের চাপ থাকে। আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেদের কাজটা পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে সঠিকভাবে সম্পাদন করা।’ সেমির আগে ভারত একাদশ নির্বাচন নিয়ে কিছুটা সমস্যায় রয়েছে। স্পিনার বরুন চক্রবর্তীকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এমনিতেই সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি ৫ উইকেট তুলে নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টকে চাপে ফেলে দিয়েছেন। অবশ্য বরুন ক্লিক করায় ভারতের সামনে নতুন বিকল্পও খুলে গেছে। দুবাইয়ের মন্থর পিচে সম্ভবত চার স্পিনার নিয়ে নামতে যাচ্ছে ভারত। সে ক্ষেত্রে আজও কপাল পুড়ছে পেসার হার্সিত রানার।

ভারত যে অলআউট স্পিন আক্রমণ নিয়ে নামছে, সেটা অস্ট্রেলিয়া ভালোই বুঝে গেছে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি পরিষ্কার করেই বলেছেন অসি অধিনায়ক স্মিথ, ‘শুধু বরুন নন, ভারতের স্কোয়াডে থাকা সব স্পিনারই ভালো। তাদের স্পিনারদের আমরা কেমন খেলব; বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে, সেটার ওপর আমাদের জয়-পরাজয় নির্ভর করছে। ভারতের স্পিন খেলাই আমাদের এ ম্যাচে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’ দুবাইয়ের আবহাওয়া আজ শুষ্ক থাকবে। গত দুই ম্যাচের মতো আজ অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচে বৃষ্টির বাধা আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ