তীব্র শীত-কুয়াশায় জবুথবু রংপুরের জনপদ
Published: 21st, January 2025 GMT
হিম বাতাস আর ঘন কুয়াশায় রংপুরের প্রকৃতি আরো শীতল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা পরের দিন বেলা ১২টা নাগাদও কাটে না। সূর্যের দেখা মেলে দুপুরের পর থেকে বিকেল পর্যন্ত, তাও শুধুই আলো, কোনো তাপ নেই। এই তীব্র শীতে সবচেয়ে কষ্টে পড়েছেন খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষেরা। বাহিরে বের হওয়া মানুষের শরীরে উঠছে কয়েক স্তরের মোটা কাপড়।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে রংপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, রংপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.
হঠাৎ গতকাল থেকে ফের এমন তাপমাত্রায় একেবারে জবুথবু অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে উত্তরের মানুষজনের মধ্যে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ গবাদি পশু নিয়ে পড়েছে বিপাকে। এমন ঠান্ডায় জ্বর সর্দি কাশ নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা।
বাজারের শ্রমিক হাশেম আলী বলেন, “ভোরে কাজে বের হতে হয়। কিন্তু হিমেল বাতাসে হাত-পা জমে যায়। কয়েকটা পুরনো কাপড় পরে কোনো রকমে কাজ করি। শরীর ঠিক রাখতে হলে তো খাবারও দরকার, কিন্তু ঠান্ডায় কাজ কম থাকলে উপার্জনও কম হয়।”
রংপুর শহরের রিকশাচালক রফিক মিয়া বলেন, “সকালবেলা বের হই তো কুয়াশায় ভিজে যাই। ঠান্ডায় এত কষ্ট যে চালানোই যায় না। কিন্তু দিন না করলে পেট চলবে কীভাবে?”
শুধু শ্রমজীবী নয়, বস্তিতে থাকা ছিন্নমূল মানুষদের অবস্থাও আরো করুণ। প্রচণ্ড ঠান্ডায় তারা একেবারেই বিপর্যস্ত। এক ছিন্নমূল বাসিন্দা বলেন, “একটা কম্বল আছে, সেটা দিয়েই কোনোরকম রাত কাটাই। শীতে তো বাচ্চারা কাঁপতে থাকে। কিছুই করার নেই।”
রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল জানিয়েছেন, ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট লাঘবে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিতরণ করা শীতবস্ত্র পর্যাপ্ত নয়।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, আজ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৭ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা আগামী দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত থাকতে পারে।
তীব্র শীত আর কুয়াশার এই প্রকোপে রংপুর অঞ্চলের জনজীবন একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের উদ্যোগ থাকলেও তা আরো বিস্তৃতভাবে বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ঢাকা/আমিরুল/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’