যুক্তরাষ্ট্রে এখন থেকে লিঙ্গ হিসেবে শুধুমাত্র নারী ও পুরুষকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় সোমবার শপথ নেওয়ার পর এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে। 

ট্রাম্প বলেন, “আজকে, এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের আনুষ্ঠানিক নীতি হবে এখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) শুধুমাত্র দুই লিঙ্গের মানুষ আছেন— নারী ও পুরুষ।”

আরো পড়ুন:

পানামা খাল দখলসহ আরো যা করার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প

মেক্সিকো সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা ট্রাম্পের

হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা জানান, নতুন এই নির্বাহী আদেশের ফলে ফেডারেল সরকারকে “জেন্ডার’ শব্দটির পরিবর্তে ‘সেক্স’ শব্দটি ব্যবহার করতে হবে এবং স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগকে পাসপোর্ট ও ভিসাসহ সরকারি সরকারি নথিতে সঠিকভাবে লিঙ্গ প্রতিফলিত হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০২২ সালে মার্কিনিদের পাসপোর্টে ট্রান্সজেন্ডারদের লিঙ্গ হিসেবে ‘এক্স’ লেখার সুযোগ দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব গ্রহণের পর ট্রাম্প এবার তার নির্বাহী আদেশে লিঙ্গ হিসেবে শুধুমাত্র নারী ও পুরুষকে স্বীকৃতি দেওয়ায়; এই সুবিধা বন্ধ হয়ে যাবে। ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য যেসব সরকারি কার্যক্রম রয়েছে, সেগুলোতেও অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে।

গত বছরই নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর সময় ট্রাম্প জানিয়ে রেখেছিলেন, নারীদের খেলায় ট্রান্সজেন্ডারদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের অ্যাথলেটরা সাধারণত নারীদের ইভেন্টে অংশ নিয়ে থাকেন।

এদিকে, এলজিবিটিকিউ আমেরিকানদের পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী নাগরিক অধিকার সংস্থা ল্যাম্বডা লিগ্যালের প্রধান আইন কর্মকর্তা জেনিফার সি.

পাইজার বলেছেন, তার সংস্থা ও অন্যান্যরা এই নির্বাহী পদক্ষেপের জন্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।

পাইজার বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট, কলমের নড়াচড়া দিয়ে, মানুষকে এবং আমরা যে মানুষের সম্প্রদায় হিসেবে বিদ্যমান তার বাস্তবতা পরিবর্তন করতে পারবেন না। আমাদেরও সমান সুরক্ষা অধিকার রয়েছে, ঠিক যেমন অন্য কারো আছে।”

এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের আরেক আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে অবশ্যই আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হবে।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ, মডেল মেঘনা কারাগারে

বিশেষ ক্ষমতা আইনে মডেল মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন,  বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন, সেক্ষেত্রে ক্ষতিকর কাজ থেকে তাঁকে নিবৃত্ত রাখার জন্য আটক করতে পারেন। মডেল মেঘনা আলম ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত। যে কারণে তাঁকে গতকাল রাতে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। আদালত তাঁকে ৩০ দিনের আটক রাখার আদেশ দেন।

ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাযহারুল ইসলাম গতকাল রাতে  প্রথম আলোকে বলেন, মডেল মেঘনা আলমকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে তাঁদের হেফাজতে রেখেছে। তবে কী কারণে মডেল মেঘনা আলমকে আটক করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য জানাননি ওসি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত বুধবার রাতে মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করা হয়। মডেল মেঘনা আলম তখন ফেসবুকে লাইভ করছিলেন। তিনি দাবি করছিলেন, তিনি নিরপরাধ।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা দায়ের হয়নি। তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩ ধারা অনুযায়ী, ক্ষতিকর কাজ থেকে নিবৃত্ত রাখার জন্য সরকার যেকোনো ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দিতে পারবেন। আবার এই আইনের ৩(২) ধারা অনুযায়ী, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট যদি সন্তুষ্ট হন এই আইনের নির্দিষ্ট ধারার ক্ষতিকর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত তাহলে ওই ব্যক্তিকে আটক রাখার আদেশ দেবেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের যেসব ক্ষতিকর কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিকে আটক আদেশ দেওয়া যায়, সেগুলো হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বা প্রতিরক্ষার ক্ষতি করা, বাংলাদেশের সঙ্গে বিদেশি রাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সংরক্ষণের ক্ষতি করা, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বা জননিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার ক্ষতি করা, বিভিন্ন সম্প্রদায় , শ্রেণি বা গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণাবোধ বা উত্তেজনা সৃষ্টি করা, আইনের শাসন বা আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা বা উৎসাহ প্রদান করা বা উত্তেজিত করা।

ক্ষতিকর আরও কাজ হচ্ছে জনসাধারণের জন্য অত্যাবশ্যক সেবা বা অত্যাবশ্যক দ্রব্যাদি সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করা, জনসাধারণ বা কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি বা আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বা আর্থিক ক্ষতি করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ