‘বিকেবি’ ইটভাটার মালিক রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মবিন চৌধুরী। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ঠ এ ছাত্রলীগ নেতা ১৬ বছর দাপটের সঙ্গে চালিয়েছেন ভাটা ব্যবসা। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভাটায় প্রকাশ্যে সরকারি বনাঞ্চলের গাছ-কাঠ পোড়ালেও ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। পাহাড়ের মাটি সাবাড় করে তৈরি করেছেন লাখ লাখ ইট। ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর আত্মগোপনে চলে যান ছাত্রলীগ নেতা মবিন। কিন্তু ভাটা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে নিয়েছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরুল হাসান চৌধুরীকে। তাঁকে সামনে রেখে পরিবেশ ধ্বংস করে চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ ইটভাটা।

শুধু এটিই নয়, রাঙ্গুনিয়ার ‘এটিএম’ ইটভাটার মালিক রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বর। তারা আত্মগোপনে থাকায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার  বানিয়েছেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো.

জিয়ারুর ভাই ইমু চৌধুরীকে। তাঁর তত্ত্বাবধানে পরিবেশ আইন না মেনে আগের মতোই চলছে ভাটাটি।

একইভাবে ‘সম্রাট’ ইটভাটার মালিক ছিলেন ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন। এখন নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে ইটভাটাটি দেখভাল করছেন বিএনপির দিদারুল আলম জসিম। ‘কেবিএম-২’ ইটভাটার মালিকানায়ও এসেছে পরিবর্তন। এটির মালিক ছিলেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন গং। তারা আত্মগোপনে থেকে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার বানিয়েছেন প্রয়াত প্রভাবশালী বিএনপি নেতা কেকে রফিক বিন চৌধুরীর ছেলে ইমু চৌধুরীকে। ‘কেবিএম-১’ ভাটার মালিক ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি জাসেদ চৌধুরী। তিনি ব্যবসায়িক অংশীদার  হিসেবে বিএনপি নেতা মো. আব্বাস চেয়ারম্যানকে সামনে নিয়ে এসেছেন। এভাবে ৫২টি ইটভাটায় এখন বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের ব্যবসায়িক অংশীদার করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। 

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও  বিকেবি ইটভাটার নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরুল হাসান চৌধুরী সমকালকে বলেন, আমি তিনটি ইটভাটার শেয়ার পার্টনার হিসেবে কয়েক মাস ধরে কাজ করছি। ছাত্রলীগ নেতার মালিকানাধীন একটি ভাটার শেয়ারহোল্ডারদের থেকে শেয়ার কিনে মালিক হয়েছি। আওয়ামী লীগের নেতারা আত্মগোপনে থাকায় তাদের ভাটাগুলো নতুন করে অনেকে পরিচালনা করছেন। 

ইটভাটা মালিক সমিতির নতুন ক্যাশিয়ারও হয়েছেন বলে জানান ইমরুল। অন্য ইটভাটাগুলোর নতুন অংশীদারদের মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ হয়নি। 
গত ১৬ বছরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুরে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নিয়মনীতি না মেনে মগাছড়ির পাহাড়ি বনাঞ্চল ঘেঁষে তৈরি হয় একের পর এক ইটভাটা। ভাটাগুলোয় প্রকাশ্যে পুড়ছে বনাঞ্চলের গাছ-কাঠ, পাহাড়ের লাল মাটি।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিন বলেন, পরিবেশ ও বন উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী রাঙ্গুনিয়াসহ জেলার সব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে শিগগির অভিযানে নামব। ঢাকা থেকে ম্যাজিস্ট্রেট এলে প্রথমেই রাঙ্গুনিয়ায় অভিযান চালানো হবে। বনাঞ্চলের পাশে ইটভাটা করার সুযোগ নেই। গাছ-কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পাহাড় কেটে মাটি সংগ্রহ করা পরিবেশ আইনে ফৌজদারি অপরাধ।

চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের উপ-বন সংরক্ষক এস এম কায়চার বলেন, ইটভাটাগুলো অবৈধ। অবৈধ ভাটায় অবৈধভাবে বনাঞ্চলের গাছ-কাঠ এনে পোড়ানো হচ্ছে, সত্য। বন বিভাগ মাঝেমধ্যে অভিযান চালাচ্ছে। মামলাও দিচ্ছি। অবৈধ ভাটা বন্ধ না হলে গাছ-কাঠ পাচার ও পোড়ানো বন্ধ করা যাবে না।

রাঙ্গুনিয়া ইটভাটা সমিতির নতুন সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা ইউচুপ চৌধুরী বলেন, ১৬ বছর আওয়ামী লীগ নেতারা ইটভাটাগুলো চালিয়েছেন। এখন তারা আত্মগোপনে। তাই সমিতি ও ইটভাটাগুলো আমরা পরিচালনা করছি। এখানে বিএনপির কেউ নতুন অংশীদার হয়েছেন। অনেক বিএনপি নেতা পুরোনো অংশীদার থাকলেও তা প্রকাশ্যে এতদিন বলেননি। ইটভাটায় কিছু গাছ-কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। কারণ কয়লা দিয়ে ইট তৈরি করে পোষানো সম্ভব নয়। 

আওয়ামী লীগ আমলের ইটভাটা সমিতির সভাপতি ইকবাল হোসেন চৌধুরীকে ফোন করা হলেও আত্মগোপনে থাকায় তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমারেখা থেকে দুই কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। এ ছাড়াও আইনে বলা আছে, সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান, জলাভূমি ও কৃষিজমিতে ইটভাটা করা যাবে না।

অনিয়ম সবচেয়ে বেশি যেসব ভাটায়
পাহাড়ি মাটি ও গাছ-কাঠ পোড়ানো হচ্ছে কমবেশি সব ভাটায়। সবচেয়ে বেশি অনাচার হচ্ছে– ‘বিকেবি’, কেবিএম-১, কেবিএম-২, এটিএম ব্রিকস, একতা ব্রিকস, আজমির ব্রিকস, ফাইন ব্রিকস ইন্ডাস্ট্রিজ, মাবিয়া অ্যান্ড সন্স ব্রিকস, বিসমিল্লাহ ব্রিকস, খতিবনগর ব্রিকস, আল মক্কা ব্রিকস, মোহাম্মদিয়া ব্রিকস, লোকমান হাকিম ব্রিকস, আউলিয়া ব্রিকস, মির্জা ব্রিকস, ছাদেক শাহ ব্রিকস, মদিনা ব্রিকস ওয়ার্কস, হাসানুজ্জামান শাহ ব্রিকস, ছাদেক শাহ ব্রিকস, ন্যাশনাল ব্রিকস ওয়ার্কস, এম আর চৌধুরী ব্রিকসে। 

ইটভাটা সমিতিতেও পালাবদল
ইটভাটার মালিকানার মতো পালাবদল হয়েছে রাঙ্গুনিয়া ইটভাটা মালিক সমিতিতেও। সমিতি এখন বিএনপির কবজায়। ১৬ বছর সমিতির একক নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্ব ছিল হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ঠদের হাতে। রাঙ্গুনিয়ায় ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন কামাল উদ্দিন চৌধুরী। আগস্টের পর ইটভাটা সমিতির সভাপতি হন বিএনপি নেতা খোকন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ইউচুপ চৌধুরী। তাদের হয়ে প্রতিটি ভাটায় ক্যাশিয়ার হিসেবে ছড়ি ঘুরাচ্ছেন আরেক বিএনপি নেতা ইমরুল হাসান চৌধুরী।

রাতে পাচার হচ্ছে গাছ
রাত নামলেই সারি সারি চাঁদের গাড়ি ও মিনি ট্রাক রাঙামাটির সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় করে গাছ-কাঠ নিয়ে ঢোকে ইটভাটায়। অসাধু বন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছে অপকর্ম। রাঙামাটির কাউখালী, ঘাগড়া, মানিকছড়ি, ঘিলাছড়ি, কচুখালী, মুবাছড়ি, কলমপতি থেকে খুবই কম দামে কেনা কাঠ-গাছ চলে যায় বিভিন্ন ভাটায়। প্রতিটি ভাটায় প্রকাশ্যে মজুত করে গড়ে তোলা হয়েছে চোরাই জ্বালানি কাঠের বড় বড় ডিপো।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব শ ত ন ব যবস য় ক অ শ দ র ইকব ল হ স ন চ ধ র ইটভ ট র ম ল ক ইটভ ট গ ল ব এনপ র ন ব এনপ পর ব শ আওয় ম ইমর ল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোবাসে গান বাজাতে বাজাতে প্রকৌশলীকে হত্যা 

হা-মীম গ্রুপের ‘দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার’ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আহসান উল্লাহকে হত্যার লোমহর্ষক তথ্য উঠে আসছে। ব্যক্তিগত মাইক্রোবাসে উচ্চ শব্দে গান শুনতে শুনতে প্রথমে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। হাত-পা বাধা বেঁধে আহসানকে গাড়ির পেছনের অংশে নিয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর পা দিয়ে বুক ও শরীরের নানা অংশে আঘাত করা হয়। একপর্যায়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা। পরে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে লাশ গুম করে। নিহতের পিঠ ছিল ক্ষতবিক্ষত। মাইক্রোবাসের ভেতরকার চিৎকার ও গোঙানির শব্দ যাতে বাইরে না পৌঁছে এ জন্য চার ঘণ্টা উচ্চ শব্দে গান ছেড়ে রাখা হয়। আদালতে আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

২৩ মার্চ হত্যার শিকার হন হা-মীমের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার আহসান। আশুলিয়ার কর্মস্থল থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকার বাসায় ফিরছিলেন তিনি। এই ঘটনায় জড়িত চারজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাদের মধ্যে আহসানের গাড়ি চালক সাইফুল ইসলাম ও তার বন্ধু নুরুন্নবীও রয়েছেন। তারা এরই মধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া ইসরাফিল ও সুজন ইসলাম আরও দু’জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তুরাগ থানা পুলিশ। জড়িতদের জবানবন্দি ও জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও টার্গেট করার কারণ উঠে এসেছে।  

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে চালক সাইফুল দাবি করেন- ১২ মার্চ হত্যার ছক চূড়ান্ত করা হয়। এটি বাস্তবায়নের পূর্ব পরিচিতি নুরুন্নবীকে ভাড়া করেন তিনি। এক সময় নুরুন্নবী ও সাইফুল একসঙ্গে গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন। পুরো মিশন সফল করতে ইসরাফিল ও সুজনকে ম্যানেজ করেন নুরুন্নবী। ঘটনার দু’দিন আগে তুরাগ এলাকা রেকি করেন তারা। আহসানকে নিয়ে অফিস থেকে ফেরার পথে কোথায় প্রস্রাব করার নাম করে গাড়ি থামাবেন তা দেখিয়ে দেন। সাইফুল অন্যদের টোপ দেন- গাড়িতে আহসানকে জিম্মি করা গেলে অনেক টাকা আদায় করা সম্ভব হবে।

ছক মোতাবেক তুরাগ এলাকার পূর্ব নির্ধারিত স্পটে বিকেল ৪টার দিকে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন চালক। এরপর তার তিন সহযোগী মাইক্রোবাসে উঠে পড়েন। যাদের আগে থেকে ভাড়া করেন সাইফুল। তাদের মধ্যে দু’জন গাড়ির পেছনের আসনে আহসান উল্লাহ’র পাশে, অন্যজন বসেন চালকের বাম পাশের আসনে। প্রশ্রাব করার নাম করে মাইক্রোবাস থেকে নেমে যাওয়ার পর সাইফুল ফের গাড়িতে ফিরে নতুন নাটক সাজান। তিনি সহযোগীকে দেখে না চেনার ভান করে বলে উঠেন- ‘আপনারা কারা আমার গাড়িতে উঠেছেন।’ তারা কোনো উত্তর দেননি। এরপরই আহসানের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। চোখ বাঁধা হয়নি। বাজানো হয় উচ্চ শব্দে গান। চারজনের কথোপকথন ও কর্মকাণ্ড দেখে অল্প সময়ের মধ্যে আহসান বুঝতে পারেন তারা সবাই একে অপরের পরিচিত। প্রাণে বাঁচতে আহসান তাদের ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার কথা জানান। তবে তারা সাড়া দেননি। 

বেড়িবাঁধ, গাবতলী, দিয়াবাড়ি রেলস্টেশন, ১৬ নম্বর সেক্টরে ঘুরাতে থাকেন। খুনের আগে গাবতলী এলাকায় আহসানকে ইফতার করান তারা। এরই মধ্যে তার ব্যাংকের কার্ড থেকে দু’টি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে ৫০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন জড়িতরা। এরই মধ্যে একটি নম্বর সাইফুলের স্ত্রীর নামে নিবন্ধন করা। আরেকটি নম্বর তার বোনের।  আরও ১০ হাজার টাকা কার্ড থেকে তুলে নেয় তারা। এছাড়া নগদ ২৫ হাজার টাকা লুট করে। সব মিলিয়ে ৮৫ হাজার হাতিয়ে নেওয়া হয়। তার মধ্যে নুরুন্নবীকে মাত্র এক হাজার ও ইসরাফিলকে দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়। সুজন কোনো টাকা পায়নি। ভাগের টাকা সবাইকে পরবর্তীতে দেওয়া হবে জানান সাইফুল। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেন নুরুন্নবী। তখন সাইফুল সহযোগীদের বলেন- হত্যা না করলে একজনও বাঁচব না। এরপর অন্যরা তাদের হত্যা মিশনে সহযোগিতা করেন। 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা জানান, আহসানকে হত্যার কারণ হিসেবে দু’টি বিষয়ের কথা এখন পর্যন্ত দাবি করছেন চালক সাইফুল। প্রথমত- গত আগস্টে সামান্য দুর্ঘটনায় সাইফুলের মাইক্রোবাসের কিছু ক্ষতি হয়েছিল। এরপর সাইফুল নিজ উদ্যোগে ইন্সুরেন্স থেকে মেরামত বাবদ টাকা আদায় করতে সহায়তা করেন। তার ধারণা ছিল ওই টাকা থেকে একটি ভাগ আহসান তাকে দেবেন। তবে সেটা না দেওয়ায় ক্ষোভ ছিল তার। আবার মাসে ১৯ হাজার টাকা বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ার মনক্ষুন্ন ছিলেন তিনি। সাইফুলের ভাষ্য- এ ক্ষোভ থেকে মালিককে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের ফন্দি আঁটেন।  

র‌্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিক বিন হালিম সমকালকে বলেন, অফিস থেকে বাসায় না ফেরায় তুরাগ থানায় জিডি করেছিল পরিবার। এরপর শুরু হয় তদন্ত। একে একে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তুচ্ছ কারণে নৃশংসভাবে প্রকৌশলীকে হত্যা করা হয়েছে। 

জানা গেছে, ২৫ মার্চ দিয়াবাড়ির ১৬ নমম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের রাস্তার পাশ থেকে আহসানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর র‌্যাব ছায়াতদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে গাইবান্ধা থেকে মূল পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। ২৬ মার্চ লালমনিরহাট থেকে নূরন্নবী ও গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে ইসরাফিলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যব। সবশেষে ধরা হয় সুজনকে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফরহাদুজ্জামান নবীন বলেন, ছুরি, স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেক, ভিকটিমের মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। ভয় দেখানোর জন্য ছুরি রাখা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ