রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ না হলে কীভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে বলে প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তাঁর মতে, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে হচ্ছে রাষ্ট্র, জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ– এসব বিষয়ে রাষ্ট্র নিরপেক্ষ থাকবে। রাষ্ট্র সবাইকে সমান অধিকার ও সুযোগ দেবে। কোনো রাষ্ট্র যদি এ অবস্থান না নেয়, তাহলে সে এমনিতেই অন্য ধর্মাবলম্বীদের আলাদা করে দিচ্ছে। 

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথ: বৈষম্যহীন বাংলাদেশের সন্ধানে’ শীর্ষক এক সেমিনারে সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিনব্যাপী এই সেমিনারের আয়োজন করে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ বিশ্লেষণমূলক জার্নাল ‘সর্বজনকথা’। 

সর্বজনকথার সম্পাদক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ সংবিধানের মূলনীতি থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই শব্দটা বাহাত্তরের সংবিধানে ছিল। তাতে যে আমরা ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ পেয়েছি, তা নয়। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা থাকলেও আমাদের বিভিন্ন সরকার ধর্মনিরপেক্ষতা থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছিল। কারও কারও কাছ থেকে এই প্রশ্নও শুনি, আমরা ধর্মনিরপেক্ষ হবো, নাকি অন্তর্ভুক্তিমূলক? এই প্রশ্নটা আমি বুঝতে পারি না। কারণ, ধর্মনিরপেক্ষ না হলে একটা রাষ্ট্র কীভাবে অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে?’

গণঅভ্যুত্থানের সময় দেয়ালচিত্রগুলোকেই তার ঘোষণাপত্র হিসেবে বিবেচনা করেন বলে জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, সেখানে যে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হয়েছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও তাদের ঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলো তা থেকে অনেক পেছনে আছে।

সেমিনারে ইউজিসি সদস্য ও ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দীন খান বলেন, ‘গত ১৬ বছরে প্রতিষ্ঠিত ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার ন্যূনতম উপস্থিতি নেই। দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের দলীয় সমর্থক বানানোর ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কাজে লাগানো হয়েছে।’ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একাডেমিক কার্যক্রমের চেয়ে নিয়োগ বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ