দু’টি বাঘ আক্রমণ করেছে আরেকটি বাঘকে। ফেলে দিয়েছে নদীর পানিতে। পূর্ব সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় এমন বিরল দৃশ্য দেখেছেন পর্যটকরা। রোববার দুপুরে কটকা অভয়ারণ্যের বেতমোড় এলাকার নদীর পাশে এ ঘটনা ঘটে বলে পর্যটকরা জানান।
সুন্দরবনে পর্যটকবাহী লঞ্চ এমভি আলাস্কা’র খুলনার পর্যটক গাইড আলামিন মুঠোফোনে জানান, রোববার দুপুরে তাদের লঞ্চ কটকার বেতমোড় খালের কাছে আসার পরই একই জায়গায় তিনটি বাঘের উপস্থিতি দেখতে পান লঞ্চে থাকা পর্যটকরা। এক সঙ্গে থাকা তিনটি বাঘ দেখেছেন তারা। বাঘ তিনটির একটি বাঘিনী।
আলামিন জানান, সুন্দরবনের কটকা অফিস থেকে দু’টি বাঘ এবং বেতমোর নদী পেরিয়ে একটি বাঘ এসে একত্রিত হয়েছিল। কিন্তু বেতমোড় এলাকা থেকে আসা বাঘটিকে অপর দুটি বাঘ আক্রমণ করে প্রথমে নদীতে ফেলে দেয়। নদীতে পড়ে যাওয়া বাঘটি অনেকক্ষণ পানিতে ভেসে থাকে। পরে সাঁতরে উঠে বাঘটি বনের মধ্যে চলে যায়।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোয়েবুর রহমান সুমন জানান, এমভি আলাস্কা নামের পর্যটকবাহী লঞ্চের পর্যটকরা বনের বেতমোড় এলাকায় একসঙ্গে তিনটি বাঘ দেখেছেন বলে তাদের জানিয়েছেন। কিছুদিন আগে কটকার বাদামতলা এলাকায় বনরক্ষীর টহলের সময় তিনি নিজেই এক সঙ্গে চারটি বাঘ দেখেছিলেন বলে জানান।
ওই কর্মকর্তা জানান, শিকারির সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবং বাঘ তার সুস্থ আবাসস্থল ফিরে পাওয়ায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শরণখোলা রেঞ্জের চান্দেশ্বর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি এলাকায় এক সঙ্গে তিনটি বাঘ ২০ ঘণ্টা ধরে অবস্থান করছিল।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন দরবন স ন দরবন এল ক য
এছাড়াও পড়ুন:
শাবিপ্রবির সাংগঠনিক সপ্তাহে নবীনদের উচ্ছ্বাস
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) চলছে সাংগঠনিক সপ্তাহ। সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর টেন্টে জমেছে নবীনদের ভিড়। নিজেদের প্রতিভা বিকাশ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত নবীন শিক্ষার্থীরা।
গত ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ সাংগঠনিক সপ্তাহের মূল কার্যক্রম শুরু হয় ২৬ জানুয়ারি থেকে। এবারের আয়োজনের বিশেষত্ব হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল গ্রাউন্ডে ৩৭টি সংগঠন একসঙ্গে অংশগ্রহণ করছে, যেখানে আগে অর্জুন তলায় দুই সপ্তাহে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
এ আয়োজনকে ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিভিন্ন সংগঠনের টেন্ট ঘুরে শিক্ষার্থীরা নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী সদস্য হতে ফর্ম সংগ্রহ করছেন। কেউ সংগীত, কেউবা বিতর্ক বা ফটোগ্রাফি নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
বাংলা বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী তানভীর বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বুঝলাম, পড়াশোনার বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে। আমি ফটোগ্রাফি ও বিতর্ক নিয়ে কাজ করতে চাই। তাই এ দুই সংগঠনে সদস্যপদ নিতে ফর্ম নিয়েছি।”
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া জাহান বলেন, “আমি ছোটবেলা থেকেই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলাম। এখানে এসে দেখলাম, অনেক সংগঠন সাংস্কৃতিক চর্চা করে। গানের প্রতি ভালোবাসা থেকেই একটি সংগঠনে সদস্য হয়েছি। পাশাপাশি, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনেও যোগ দিয়েছি, যাতে মানুষের জন্য কিছু করতে পারি।”
সরেজমিনে দেখা যায়, সংগঠনগুলোর সদস্যরাও ব্যস্ত সময় পার করছে। কেউ নতুনদের ক্যাম্পাস ও সংগঠনের নিয়ম জানাচ্ছে, কেউ সাংগঠনিক কার্যক্রমের বিবরণ দিচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন ব্লাড গ্রুপিং, ফটোগ্রাফি ওয়ার্কশপসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যারা জানিয়েছেন, সাংগঠনিক সপ্তাহ শুধু সদস্য সংগ্রহের অনুষ্ঠান নয়, এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশেরও বড় সুযোগ। নতুনদের উচ্ছ্বাস ও অংশগ্রহণই প্রমাণ করে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর অংশ হতে কতটা আগ্রহী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, “আগের বছরগুলোর মতো আলাদা ধাপে সাংগঠনিক সপ্তাহ না করে এবার একসঙ্গে আয়োজন করা হয়েছে। যাতে সব সংগঠন সমানভাবে সদস্য সংগ্রহের সুযোগ পায় এবং নবীন শিক্ষার্থীরাও একসঙ্গে সব ক্লাবের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।”
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী