এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংস্কার জরুরি
Published: 20th, January 2025 GMT
বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট বিদ্যমান কাঠামোর সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। আমদানি-রপ্তানি নীতিমালা, রাজস্ব কাঠামো, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিক নীতিমালা এবং জাতীয় বাজেট ও মুদ্রানীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে সংগঠনটি।
গতকাল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে এ বিষয় তুলে ধরেন ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ। সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সচিবালয়ে উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ডিসিসিআই সভাপতি আরও বলেন, কভিড অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা, দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন-পরবর্তী অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশ এলডিসি-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি ভালোভাবে নিতে পারেনি। বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের সময়সীমা পিছিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করতে পারে। বাস্তবভিত্তিক উত্তরণ কৌশলও দরকার।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সম্প্রতি শতাধিক পণ্যের ওপর ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, আবগারি শুল্ক ও কর বাড়ানোর উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যে দেশের সাধারণ মানুষসহ ব্যবসায়ীদের মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে জনগণের জীবনযাত্রার ওপর আরও বেশি হারে চাপ ফেলবে, সেই সঙ্গে ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অস্থিরতা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে অপ্রত্যাশিত বন্যার কারণে স্থানীয়ভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ইতোমধ্যে সামগ্রিক পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ অবস্থা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এলডিসি উত্তরণের ফলে দেশের বেসরকারি খাত বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে উল্লেখ করে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট নীতিমালার সংস্কার ও সবার সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়ােজন। তিনি বলেন, নীতিসহায়তা ও ধারাবাহিকতা অব্যাহত না থাকলে স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা কমে যাবে।
এদিকে ঢাকার পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে দেশের ফার্নিচার শিল্প নিয়ে এক সেমিনারে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, বিগত সরকারের আমলে অর্থনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে। ব্যাংকিং, গার্মেন্টসসহ দেশের প্রতিটি খাতের সম্ভাবনাকে নষ্ট করা হয়েছে।
বন্ড সুবিধার কারণে দেশে গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ হলেও অনেক শিল্পে ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ব্যবসায়ীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত হতে হবে। তিনি বলেন, ঢালাওভাবে নয়, বরং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা আছে এমন সব দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলড স ব ণ জ য উপদ ষ ট পর স থ ত ব যবস য় পরবর ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কুবি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি
টিউশন শেষে বাসায় ফেরার পথে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের তৎপরতায় চার ঘণ্টার মধ্যে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।
উদ্ধার হওয়া শিক্ষার্থীর নাম শাকিল আহমেদ। তিনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সহ-সভাপতি।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কুমিল্লা শহর থেকে ফেরার পথে কয়েকজন অপহরণকারী তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর তার পরিবার ও বন্ধুদের কাছে ১০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা পুলিশের সহযোগিতায় প্রায় চার ঘণ্টা পর কুমিল্লার একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে শাকিলকে উদ্ধার করেন। এসময় এক অপহরণকারীকে আটক করা হয়।
এবিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মুহসিন জামিল বলেন, রাত ১২টা ৫৮ মিনিটে আমরা জানতে পারি সবুজকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আটকে রেখে টাকা দাবি করছে। গ্যাংয়ের সদস্যরা সবুজের মাধ্যমে ফোন দিচ্ছে। তারপর আমরা ডিবেটিং সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাঈদ ভাইকে জানালে ওনারা পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে। এরপর থেকেই পুলিশ সবুজের লোকেশন ট্রেস করতেছিল। পরবর্তীতে পুলিশ ও আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৪ ঘণ্টা পর একটা পরিত্যক্ত বিল্ডিং থেকে সবুজকে উদ্ধার করি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগরের সদস্য সচিব মুহাম্মাদ রাশেদুল হাসান বলেন, সবুজের বিষয়টি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাঈদ আমাকে অবগত করে। সাথে সাথে ওসি কোতোয়ালিকে ফোন দিয়ে তা জানানো হয়। আমাদের মহানগর কমিটির একটি টিম কান্দিরপাড় অঞ্চলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। সবুজের লোকেশন শনাক্ত করা হয়। পুলিশ, বিভাগীয় চেয়ারম্যান মোরশেদ কাজেম স্যার, বৈবিছা-র সদস্যবৃন্দ, সবুজের সিনিয়র-জুনিয়র-ব্যাচমেট সবার তৎপরতায় আনুমানিক রাত ৩টায় সবুজকে উদ্ধার করতে আমরা সমর্থ হই।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তিন থেকে পাঁচজনের একটি চক্র শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে। পরে রাত আড়াইটার দিকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে, বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে।