Samakal:
2025-04-02@19:59:44 GMT

ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫০ পয়েন্ট

Published: 20th, January 2025 GMT

ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫০ পয়েন্ট

বেশ কয়েক দিন পর গতকাল সোমবার দেশের শেয়ারবাজারের অধিকাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে আগের দিনের চেয়ে  বেড়েছে  ৬২ শতাংশ শেয়ারের দর। দর হারিয়েছে ২০ শতাংশ শেয়ার। আবার দর কমে যাওয়ার চেয়ে দর বৃদ্ধির হার ছিল বেশি। 
খাতওয়ারি হিসাবে বীমা ছাড়া অন্য সব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। বড় খাতের মধ্যে প্রকৌশল, বস্ত্র, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের গড় দর ১ থেকে দেড় শতাংশ বেড়েছে।  বেশির ভাগ কোম্পানির দর বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিএসইএক্স সূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৯৫ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। চলতি বছরে এক দিনে যা ছিল  সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। গতকালের তুলনায় সূচকটি বেশি (৭৩ পয়েন্ট) বেড়েছিল গত ১৫ ডিসেম্বর। 
লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর মুহূর্তে প্রায় ৬ পয়েন্ট বাড়ে। এর পর সোয়া ২টা পর্যন্ত শেয়ারদর বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকায় সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫২০২ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকিগুলোর কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৬টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল  ৭০টির দর।
অপেক্ষাকৃত ছোট খাতের মধ্যে সিরামিক খাতের পাঁচ কোম্পানির গড়ে সর্বাধিক পৌনে ৫ শতাংশ দর বেড়েছে। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৩ শতাংশ, সেবা ও নির্মাণ খাতের আড়াই শতাংশ এবং  সিমেন্ট খাতের ২ দশমিক ৩২ শতাংশ দর বেড়েছে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির শেয়ারদর গড়ে ২ শতাংশ হারে বেড়েছে। ৫ শতাংশের ওপর ২১ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। বিপরীতে ৫ শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে মাত্র দুটি। দর বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ ২০ শেয়ারের মধ্যে ‘বি’ ও ‘জেড’ ক্যাটেগরির ১৪টি, বাকি ছয়টি ‘এ’ ক্যাটেগরির শেয়ার। এর মধ্যে জেড ক্যাটেগরির আট শেয়ার হলো– দুলামিয়া কটন, খুলনা প্রিন্টিং, ঢাকা ডাইং, সেন্ট্রাল ফার্মা, ইন্দোবাংলা ফার্মা, বিআইএফসি, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম এবং প্রগ্রেসিফ লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
দর বৃদ্ধির ওপরের দিকে থাকা ‘বি’ ক্যাটেগরির শেয়ারগুলো হলো– মিডল্যান্ড ব্যাংক, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট, মুন্নু সিরামিক, ফাইন ফুডস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও মুন্নু ফেব্রিক্স এবং ‘এ’ ক্যাটেগরির রানার অটোমোবাইলস, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, কহিনূর কেমিক্যাল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, শাহজীবাজার পাওয়ার ও বিডি ল্যাম্পস। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, ক্রমাগত দরপতনে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর তলানিতে নেমেছে। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, শেয়ারের কম দরই নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে। তাতে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দরও বৃদ্ধি পায়। এদিকে শেয়ারদর বৃদ্ধির ধারায় টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হয়েছে প্রায় ৪২৭ কোটি টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৫৯ কোটি টাকা বেশি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রদর

এছাড়াও পড়ুন:

মাইক্রোবাসে গান বাজাতে বাজাতে প্রকৌশলীকে হত্যা 

হা-মীম গ্রুপের ‘দ্যাটস ইট স্পোর্টস ওয়্যার’ লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আহসান উল্লাহকে হত্যার লোমহর্ষক তথ্য উঠে আসছে। ব্যক্তিগত মাইক্রোবাসে উচ্চ শব্দে গান শুনতে শুনতে প্রথমে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। হাত-পা বাধা বেঁধে আহসানকে গাড়ির পেছনের অংশে নিয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছিল। এরপর পা দিয়ে বুক ও শরীরের নানা অংশে আঘাত করা হয়। একপর্যায়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা। পরে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে লাশ গুম করে। নিহতের পিঠ ছিল ক্ষতবিক্ষত। মাইক্রোবাসের ভেতরকার চিৎকার ও গোঙানির শব্দ যাতে বাইরে না পৌঁছে এ জন্য চার ঘণ্টা উচ্চ শব্দে গান ছেড়ে রাখা হয়। আদালতে আসামির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

২৩ মার্চ হত্যার শিকার হন হা-মীমের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার আহসান। আশুলিয়ার কর্মস্থল থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকার বাসায় ফিরছিলেন তিনি। এই ঘটনায় জড়িত চারজনকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাদের মধ্যে আহসানের গাড়ি চালক সাইফুল ইসলাম ও তার বন্ধু নুরুন্নবীও রয়েছেন। তারা এরই মধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া ইসরাফিল ও সুজন ইসলাম আরও দু’জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে তুরাগ থানা পুলিশ। জড়িতদের জবানবন্দি ও জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও টার্গেট করার কারণ উঠে এসেছে।  

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে চালক সাইফুল দাবি করেন- ১২ মার্চ হত্যার ছক চূড়ান্ত করা হয়। এটি বাস্তবায়নের পূর্ব পরিচিতি নুরুন্নবীকে ভাড়া করেন তিনি। এক সময় নুরুন্নবী ও সাইফুল একসঙ্গে গার্মেন্টেসে চাকরি করতেন। পুরো মিশন সফল করতে ইসরাফিল ও সুজনকে ম্যানেজ করেন নুরুন্নবী। ঘটনার দু’দিন আগে তুরাগ এলাকা রেকি করেন তারা। আহসানকে নিয়ে অফিস থেকে ফেরার পথে কোথায় প্রস্রাব করার নাম করে গাড়ি থামাবেন তা দেখিয়ে দেন। সাইফুল অন্যদের টোপ দেন- গাড়িতে আহসানকে জিম্মি করা গেলে অনেক টাকা আদায় করা সম্ভব হবে।

ছক মোতাবেক তুরাগ এলাকার পূর্ব নির্ধারিত স্পটে বিকেল ৪টার দিকে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন চালক। এরপর তার তিন সহযোগী মাইক্রোবাসে উঠে পড়েন। যাদের আগে থেকে ভাড়া করেন সাইফুল। তাদের মধ্যে দু’জন গাড়ির পেছনের আসনে আহসান উল্লাহ’র পাশে, অন্যজন বসেন চালকের বাম পাশের আসনে। প্রশ্রাব করার নাম করে মাইক্রোবাস থেকে নেমে যাওয়ার পর সাইফুল ফের গাড়িতে ফিরে নতুন নাটক সাজান। তিনি সহযোগীকে দেখে না চেনার ভান করে বলে উঠেন- ‘আপনারা কারা আমার গাড়িতে উঠেছেন।’ তারা কোনো উত্তর দেননি। এরপরই আহসানের হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। চোখ বাঁধা হয়নি। বাজানো হয় উচ্চ শব্দে গান। চারজনের কথোপকথন ও কর্মকাণ্ড দেখে অল্প সময়ের মধ্যে আহসান বুঝতে পারেন তারা সবাই একে অপরের পরিচিত। প্রাণে বাঁচতে আহসান তাদের ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার কথা জানান। তবে তারা সাড়া দেননি। 

বেড়িবাঁধ, গাবতলী, দিয়াবাড়ি রেলস্টেশন, ১৬ নম্বর সেক্টরে ঘুরাতে থাকেন। খুনের আগে গাবতলী এলাকায় আহসানকে ইফতার করান তারা। এরই মধ্যে তার ব্যাংকের কার্ড থেকে দু’টি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে ৫০ হাজার টাকা ট্রান্সফার করেন জড়িতরা। এরই মধ্যে একটি নম্বর সাইফুলের স্ত্রীর নামে নিবন্ধন করা। আরেকটি নম্বর তার বোনের।  আরও ১০ হাজার টাকা কার্ড থেকে তুলে নেয় তারা। এছাড়া নগদ ২৫ হাজার টাকা লুট করে। সব মিলিয়ে ৮৫ হাজার হাতিয়ে নেওয়া হয়। তার মধ্যে নুরুন্নবীকে মাত্র এক হাজার ও ইসরাফিলকে দুই হাজার টাকা দেওয়া হয়। সুজন কোনো টাকা পায়নি। ভাগের টাকা সবাইকে পরবর্তীতে দেওয়া হবে জানান সাইফুল। নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলেন নুরুন্নবী। তখন সাইফুল সহযোগীদের বলেন- হত্যা না করলে একজনও বাঁচব না। এরপর অন্যরা তাদের হত্যা মিশনে সহযোগিতা করেন। 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট আরেক কর্মকর্তা জানান, আহসানকে হত্যার কারণ হিসেবে দু’টি বিষয়ের কথা এখন পর্যন্ত দাবি করছেন চালক সাইফুল। প্রথমত- গত আগস্টে সামান্য দুর্ঘটনায় সাইফুলের মাইক্রোবাসের কিছু ক্ষতি হয়েছিল। এরপর সাইফুল নিজ উদ্যোগে ইন্সুরেন্স থেকে মেরামত বাবদ টাকা আদায় করতে সহায়তা করেন। তার ধারণা ছিল ওই টাকা থেকে একটি ভাগ আহসান তাকে দেবেন। তবে সেটা না দেওয়ায় ক্ষোভ ছিল তার। আবার মাসে ১৯ হাজার টাকা বেতনের বাইরে কোনো সুযোগ-সুবিধা না দেওয়ার মনক্ষুন্ন ছিলেন তিনি। সাইফুলের ভাষ্য- এ ক্ষোভ থেকে মালিককে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের ফন্দি আঁটেন।  

র‌্যাব-১ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মুহাম্মদ আহনাফ রাসিক বিন হালিম সমকালকে বলেন, অফিস থেকে বাসায় না ফেরায় তুরাগ থানায় জিডি করেছিল পরিবার। এরপর শুরু হয় তদন্ত। একে একে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে। তুচ্ছ কারণে নৃশংসভাবে প্রকৌশলীকে হত্যা করা হয়েছে। 

জানা গেছে, ২৫ মার্চ দিয়াবাড়ির ১৬ নমম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের রাস্তার পাশ থেকে আহসানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর র‌্যাব ছায়াতদন্ত করে হত্যাকাণ্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে গাইবান্ধা থেকে মূল পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। ২৬ মার্চ লালমনিরহাট থেকে নূরন্নবী ও গাজীপুরের কাশিমপুর থেকে ইসরাফিলকে গ্রেপ্তার করে র‌্যব। সবশেষে ধরা হয় সুজনকে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফরহাদুজ্জামান নবীন বলেন, ছুরি, স্ট্যাম্প, ব্যাংকের চেক, ভিকটিমের মোবাইল ফোনসহ বেশকিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। ভয় দেখানোর জন্য ছুরি রাখা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ