বেশ কয়েক দিন পর গতকাল সোমবার দেশের শেয়ারবাজারের অধিকাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে ৬২ শতাংশ শেয়ারের দর। দর হারিয়েছে ২০ শতাংশ শেয়ার। আবার দর কমে যাওয়ার চেয়ে দর বৃদ্ধির হার ছিল বেশি।
খাতওয়ারি হিসাবে বীমা ছাড়া অন্য সব খাতের অধিকাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে। বড় খাতের মধ্যে প্রকৌশল, বস্ত্র, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের গড় দর ১ থেকে দেড় শতাংশ বেড়েছে। বেশির ভাগ কোম্পানির দর বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিএসইএক্স সূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৯৫ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। চলতি বছরে এক দিনে যা ছিল সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। গতকালের তুলনায় সূচকটি বেশি (৭৩ পয়েন্ট) বেড়েছিল গত ১৫ ডিসেম্বর।
লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর মুহূর্তে প্রায় ৬ পয়েন্ট বাড়ে। এর পর সোয়া ২টা পর্যন্ত শেয়ারদর বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকায় সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫২০২ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৯৭ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দুটি ছাড়া বাকিগুলোর কম-বেশি কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪৬টির দর বেড়েছে, কমেছে ৭৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৭০টির দর।
অপেক্ষাকৃত ছোট খাতের মধ্যে সিরামিক খাতের পাঁচ কোম্পানির গড়ে সর্বাধিক পৌনে ৫ শতাংশ দর বেড়েছে। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতের ৩ শতাংশ, সেবা ও নির্মাণ খাতের আড়াই শতাংশ এবং সিমেন্ট খাতের ২ দশমিক ৩২ শতাংশ দর বেড়েছে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির শেয়ারদর গড়ে ২ শতাংশ হারে বেড়েছে। ৫ শতাংশের ওপর ২১ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। বিপরীতে ৫ শতাংশের ওপর দর হারিয়েছে মাত্র দুটি। দর বৃদ্ধি পাওয়া শীর্ষ ২০ শেয়ারের মধ্যে ‘বি’ ও ‘জেড’ ক্যাটেগরির ১৪টি, বাকি ছয়টি ‘এ’ ক্যাটেগরির শেয়ার। এর মধ্যে জেড ক্যাটেগরির আট শেয়ার হলো– দুলামিয়া কটন, খুলনা প্রিন্টিং, ঢাকা ডাইং, সেন্ট্রাল ফার্মা, ইন্দোবাংলা ফার্মা, বিআইএফসি, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম এবং প্রগ্রেসিফ লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
দর বৃদ্ধির ওপরের দিকে থাকা ‘বি’ ক্যাটেগরির শেয়ারগুলো হলো– মিডল্যান্ড ব্যাংক, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট, মুন্নু সিরামিক, ফাইন ফুডস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও মুন্নু ফেব্রিক্স এবং ‘এ’ ক্যাটেগরির রানার অটোমোবাইলস, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, কহিনূর কেমিক্যাল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, শাহজীবাজার পাওয়ার ও বিডি ল্যাম্পস। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, ক্রমাগত দরপতনে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর তলানিতে নেমেছে। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, শেয়ারের কম দরই নতুন বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে। তাতে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দরও বৃদ্ধি পায়। এদিকে শেয়ারদর বৃদ্ধির ধারায় টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে কেনাবেচা হয়েছে প্রায় ৪২৭ কোটি টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৫৯ কোটি টাকা বেশি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ য় রদর
এছাড়াও পড়ুন:
বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে সূচক-লেনদেন বেড়েছে
দেশের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (২৩ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। তবে বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মূলধন বাড়লেও সিএসইতে কমেছে।
শনিবার (১ মার্চ) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এতথ্য জানা গেছে।
তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৬.৯৩ পয়েন্ট বা ০.৯০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৪৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৪.৩৪ পয়েন্ট বা ০.২৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯০৫ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪.০৮ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৬৭ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ১৮.৪৪ পয়েন্ট বা ১.৭৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭ পয়েন্টে।
আরো পড়ুন:
ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে ওরিয়ন ইনফিউশন
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ০.৫১ শতাংশ
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৫ হাজার ৩৬৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৯১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ৭২৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫৯০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২৩৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২৬১টির, দর কমেছে ১৮০টির ও দর অপরিবর্তিত ২৯ রয়েছে টির। তবে লেনদেন হয়নি ১৫টির।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৪.৪০ পয়েন্ট বা ০.৯৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৩৩ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ০.১৬ শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ৯২৫ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক ০.৮৪ শতাংশ বেড়ে ৮ হাজার ৮৬৮ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক ০.৫৩ শতাংশ বেড়ে ৯৪৬ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) শূন্য শতাংশ কমে ২ হাজার ১০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ২১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৫ হাজার ৪৩৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ২২৩ কোটি ৭ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ১৭০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ১৩৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩১২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৮১টির, দর কমেছে ১০০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির শেয়ার ও ইউনিট দর।
ঢাকা/এনটি/মাসুদ