শরীরে অতিরিক্ত পানি দেখা দিলে কী করবেন
Published: 20th, January 2025 GMT
নানা কারণে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে পারে। মানবদেহের টিস্যু বা কলায় অতিরিক্ত পানি জমে ফুলে যাওয়ার নাম ইডেমা। শরীরের যে কোনো স্থানে পানি জমতে পারে; তবে পা, পেট, হাত ও মুখ এসব স্থানে ইডেমা বা পানি বেশি দেখা যায়। যেসব কারণে ইডেমা হয় তা হলো খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ, হার্ট ফেইলিওর, কিডনি রোগ, লিভার সিরোসিস, গর্ভকাল, লিম্ফ বা লসিকা চলাচলে বাধা, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা, কিছু ওষুধ ক্যালসিয়াম ব্লকার, ব্যথানাশক, স্টেরয়েড ইত্যাদি। কোনো কোনো সময় ইডেমা হার্ট ফেইলিওর, কিডনি রোগ বা লিভার সিরোসিসের মতো জটিল রোগের উপসর্গ বা চিহ্ন হিসেবে দেখা দেয়। হার্ট ফেইলিওর হলে হৃদযন্ত্র সংকোচনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ রক্ত বের করতে পারে না। ফলে ফুসফুস, পা, পেটে পানি জমে যায়। কিডনি অসুস্থ হলে প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের অপ্রয়োজনীয় পানি ও লবণ বের করতে পারে না। ফলে চোখের চারদিক বা পায়ে পানি জমে ফুলে যায়। লিভার সিরোসিস হলে প্রোটিন উৎপাদন কমে যায়। ফলে পানি রক্তনালির ভেতরে না থেকে বাইরে চলে যায়। তাই ওই স্থান ইডেমা হয়ে ফুলে যায়।
উপসর্গ: আক্রান্ত স্থান ফুলে যাওয়া, চামড়ার ঔজ্জ্বল্য ও স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া, আক্রান্ত অঙ্গ ভারী হয়ে চলাচলে সমস্যা দেখা দেওয়া, শ্বাসকষ্টের উদ্রেক হওয়া।
চিকিৎসা: শরীরে অতিরিক্ত পানি জমলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
চিকিৎসার পাশাপাশি যা করতে হবে তা হলো পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে; আলগা লবণ ও লবণাক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে, ধূমপান বর্জন করতে হবে, সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করতে হবে, তেল-চর্বি-মিষ্টি কম খেতে হবে, উচ্চ রক্তচাপ, ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বা ডায়াবেটিস থাকলে ভালোভাবে চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি ইডেমা যাতে ভয়ংকর আকার ধারণ না করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য কিছু বিষয় মানতে হবে। যেমন– চিকিৎসকের নির্দেশমতো ওষুধ নিয়মিত গ্রহণ, আলগা লবণ না খাওয়া, যে কোনো সংক্রমণের চিকিৎসা, রক্তশূন্যতা পূরণ, থাইরয়েডের চিকিৎসা, গর্ভকালীন বিশেষ যত্ন, সহনীয় মাত্রায় নিয়মিত ব্যায়াম করা, তেল-চর্বি-মিষ্টি কম খাওয়া, উত্তেজনা প্রশমন করা, ভারী কাজ না করা, ওজন আদর্শ মাত্রায় রাখা এবং সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা।
[বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক]
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্ঘটনায় আহত অভিনেত্রী খুশি, চোখের ওপর পড়েছে ১০ সেলাই
দুর্ঘটনার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন ছোটপর্দার অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি। বুধবার সকালে রমনা পার্ক থেকে বাড়ি ফেরার সময় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় তিনি আহত হন। অভিনেত্রীর ছেলে সৌম্য জ্যোতি সমকালকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বুধবার সকালে আম্মু রমনা পার্কে হাটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাসায় ফেরার সময় গলির মধ্যে একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দিলে আম্মু ছিটকে পড়ে যায় এবং তার ঠিক চোখের ওপর জখম হয়। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সিটি স্ক্যানসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। এখন তিনি আপাতত ভালো আছেন।’
এদিকে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানান শাহনাজ খুশি। সেখানে তিনি বলেন, ‘বেশি না, মাত্র ১০টা সেলাই পড়েছে। এ আর এমন কি বলেন? চোখটা অন্ধ হয় নাই, হয় নাই ব্রেইন হ্যামারেজের মত শেষ অবস্থা! সেটাই তো অনেক বেশি পাওয়া! এ তেমন কিছু না, চোখের উপরের সেনসেটিভ জায়গায় মাত্র ১০ টা সেলাই লেগেছে! আমি যে প্রাণে বেঁচে আছি এ জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা কাছে শুকরিয়া আদায় করছি!’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘কিচ্ছু চাই না আমি, শুধু যে মায়েরা/বাবারা ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে আসেন অথবা নানান প্রয়োজনে রাস্তায় যান, তাদের সতর্ক করতে পোস্টটা দিলাম। আমি হয়ত ভেঙেচুরে বেঁচে গেছি। কোন বাচ্চা এ আঘাত নিতে পারবে না! ব্যাটারি চালিত অসভ্য/বর্বর যানবাহনটি এবং তার অসভ্য চালক থেকে সর্বদা সতর্ক থাকবেন। যদিও আমি গলির ভেতরের রাস্তায়, প্রাতঃ ভ্রমণ শেষে অতি সর্তকতার সাথেই একেবারে কিনার দিয়ে হেঁটে ফিরছিলাম! ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বীরদর্পে চলে গেছে! ওরা মেধাবী যান চালক, কারো জীবনের ক্ষতির তোয়াক্কা করে না! আপনার এবং আপনার সন্তানের দায়িত্ব একান্তই আপনার। আজ চারদিন পরও মাথার অর্ধেকে কোন বোধশক্তি নাই!
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘জানি না স্বাভাবিক চেহারায় ফিরবো কিনা, সেটা যদিও ফিরি রক্তাক্ত সেই পথে পড়ে থাকা সকালের ট্রমা অনেককাল ভুলবো না! কাতর অবস্থায় বিছানায় পরে থেকে বারবার একটা প্রশ্ন মনে আসছে, এই যে যত্রতত্র কুপিয়ে জখম, ট্রেন-বাস, রিকশা কিংবা প্রাইভেট গাড়িতে দিনেরাতে ছিনতাই। কার কাছে চাইব আমাদের সন্তানদের নিরাপদ পথচলা।’