চিকিৎসকরা একটা জিনিস বারবার বলে থাকেন, যেটি আমরা সবাই শুনেছি। তা হলো, অকারণে মুড়ি-মুড়কির মতো পেইনকিলার খাওয়া, বা পেনইকিলারের অভ্যাস তৈরি করে ফেলা একেবারেই উচিত নয়। এর কারণ কী, সেটি এবার জেনে নেওয়া যাক।
প্রথমত, মানুষের শরীর এবং মস্তিষ্ক এমনভাবে তৈরি, যে কোনো একটা পদার্থের দ্বারা যদি ক্রমাগত তাকে আঘাত করা হয়, তাহলে শরীরও নিজেকে তেমনভাবে সইয়ে নেয়। সে আঘাত তার গা-সওয়া হয়ে যায়। পেইনকিলারও যদি ক্রমাগত খেতে থাকি, তাহলে শরীরের ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। অর্থাৎ, যে ব্যথা আগে তিনটে পেইনকিলারে কমে যেত, ক্রমাগত খেতে খেতে দেখা যায়, সেই একই ব্যথায় ছটা পেইনকিলারেও কাজ হচ্ছে না। এগুলো সবই হয় রিসেপ্টর মডিফিকেশনের ফলে। নিউরাল পাথওয়েগুলো অ্যাডজাস্ট হয়ে যাওয়ার জন্য। এসবের ফলে নির্দিষ্ট ডোজে তার কার্যকারিতা দেখাতে পারে না। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে, ‘রেজিস্ট্যান্স টু দি অ্যানালজেসিক এফেক্ট অব পেইনকিলারস’। দরকারের সময় পেইনকিলার খেলেও যে কাজ হয় না, এটি তার বড় কারণ।
দ্বিতীয়ত, কেউ যদি দীর্ঘ সময় ধরে পেইনকিলার খান, তাহলে তার কিডনির ওপর খুব খারাপ প্রভাব পড়ে। দেখা গেছে, এ রকম ক্ষেত্রে অনেক সময় কিডনিতে অ্যাকিউট টিউবুলার নেক্রোসিস বা অ্যাকিউট ইন্টারস্টিশিয়াল নেফ্রাইটিস এই জাতীয় রোগ হয়। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে পেইনকিলার খেয়ে যাওয়ার ফলে অনেক সময়ই তা পর্যাপ্ত পরিমাণে কিডনি থেকে বেরতে পারে না। কিডনিতেই জমে থাকে। ফলে কিডনির এমন ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়, যার জন্য পরে ডায়ালাইসিস নিতে হতে পারে। কিডনির সাময়িক ক্ষতি, যা পরে দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে এর অন্যতম বড় কারণ কিন্তু পেইনকিলার। এটি বেশি খেলে লিভারও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অর্থাৎ লিভার খারাপ হয়ে যাওয়ার প্রবণতা, ক্রনিক লিভার ডিজিজ বা অ্যাকিউট হেপাটিক ইনজুরি হতে পারে। অনেক সময়ই দেখা গেছে, অতিরিক্ত পেইনকিলার খাওয়ার জন্য অ্যাকিউট হেপাটিক ফেইলুর হয়ে গেছে। পেইনকিলার লিভারকে এতটাই চাপ দিয়েছে, লিভার ফেইল করেছে। লিভার এবং কিডনির ওপর পেইনকিলারের যে একটা অদ্ভুত খারাপ প্রভাব পড়তে পারে, এর জন্যও ইচ্ছামতো, বিনা প্রেসক্রিপশনে পেইনকিলার খাওয়া একদম চলবে না। এটা সত্যি, যে কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে পেইনকিলার না দিয়ে উপায় থাকে না চিকিৎসকদের। কাকে কোন পেইনকিলার, কতটা ডোজে দেবেন সেটি একমাত্র চিকিৎসকই ঠিক করে দেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ড
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ আহত হননি।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে হাসপাতালের চারতলা পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. এ বি এম নুরুজ্জামান বলেন, “সিগারেটের ফেলে দেওয়া আগুন বা শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগুনে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ওষুধের কার্টুনের স্টোরে আগুন লেগেছিল। আগুন দেখার সঙ্গে সঙ্গে মেডিসিন পুরুষ ওয়ার্ডের রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নেভান।”
আরো পড়ুন:
চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুপথযাত্রী সাংবাদিক এম সুলতান
বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে দুদকের অভিযান
তিনি আরো বলেন, “গত বছর একই দিনে (৩১ জানুয়ারি) দিনাজপুর মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে আগুন লেগেছিল।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ