তীব্র শীতে বিপাকে পড়েন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতার্ত এমন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ও ফরিদপুরের পাঁচটি এনজিও। ফরিদপুর পৌর এলাকার ২৭টি ওয়ার্ড ও ১২টি ইউনিয়নের ২০ হাজার শীতার্তের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত…
এবার দেরিতে এলেও বেশ জেঁকে বসেছে শীত। ফরিদপুরের পদ্মা নদীর চরাঞ্চল থেকে শুরু করে গ্রামীণ বিস্তীর্ণ জনপদে কনকনে ঠান্ডা আবহাওয়া। গ্রাম ও শহরের নিম্ন আয়ের মানুষ যখন শীতে কষ্ট পাচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে শুরু হয় কর্মসূচি।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান এ.
৯ দিনব্যাপী যে সব এলাকায় কম্বল বিতরণ করা হয়েছে সেগুলো হলো– নর্থ চ্যানেল, ডিক্রিরচর, আলিয়াবাদ, অম্বিকাপুর, ঈশান গোপালপুর, মাচ্চর, গেরদা, কানাইপুর, চাঁদপুর, চর মাধবদীয়া, কৈজুরী ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন এবং ফরিদপুর পৌর এলাকা।
বিশেষ করে চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ শীতে বেশি নাকাল হয়ে পড়ে। শীতের পাশাপাশি ধু-ধু বালুচরের কনকনে হাওয়া বিপন্ন করে তোলে জীবন। তাদেরই একজন স্থানীয় ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ধলার মোড় এলাকার নবীরন বেগম। মাঝ বয়সী এই নারী শীতবস্ত্রের জন্য কারও কাছে যেতে পারেননি। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে কম্বল নিতেও লজ্জাবোধ করছিলেন তিনি। এক সময়ের ভালো অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের অনেক মানুষ নদীভাঙনের কবলে পড়ে এখন নিঃস্ব। কম্বল পেয়ে চোখে জল আসে তাঁর। আশপাশে দেখা মেলে এমন অনেক মানুষের, যাদের অবস্থা নবীরনের মতোই।
শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির আওতায় সম্পন্ন হয় দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ। এ কাজে সমকাল সুহৃদ সমাবেশসহ ফরিদপুরের পাঁচটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা– এফডিএ, বিএফএফ, একেকে, এসডিসি এবং পিডব্লিউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হয়।
ব্যাংকটির ফরিদপুর শাখার ম্যানেজার কেএম আনিসুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ৯ দিনব্যাপী শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানগুলোয় উপস্থিত ছিলেন হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. মোতালেব হোসেন, পরিচালক মো. বেলাল হোসেন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, এফডিএর উপদেষ্টা আজাহারুল ইসলাম, নির্বাহী পরিচালক আবু সাহের আলম, এসডিসির নির্বাহী পরিচালক কাজী আশরাফুল হাসান, পিডব্লিউর নির্বাহী পরিচালক হাফিজুর রহমান, একেকের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল জলিল, উপপরিচালক বিএম আলাউদ্দীন, বিএফএফের নির্বাহী পরিচালক আ ন ম ফজলুল হাদি সাব্বির, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ ফরিদপুরের সভাপতি জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সহসভাপতি হারুনার রশীদসহ বিভিন্ন ইউনিটের সুহৃদরা।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ. কে. আজাদের নির্দেশনায় ব্যাংকটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তাদের অনুদান এবং বাস্তবায়নকারী সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে সুশৃঙ্খলভাবে প্রান্তিক মানুষদের হাতে শীতবস্ত্রগুলো পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
আনিসুর রহমান বলেন, স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে আমরা প্রকৃত দুস্থদের তালিকা করে স্লিপ পৌঁছে দিই, যাতে সুশৃঙ্খলভাবে প্রকৃত দরিদ্র ব্যক্তি কম্বলটি পায়। আশা করি, আমাদের এই কর্মতৎপরতায় ফরিদপুরের শীতার্ত মানুষের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক সুহৃদ সমাবেশ, ফরিদপুর
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ তবস ত র ব তরণ জ ল ল ইসল ম শ তবস ত র ব তরণ সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড়ে ফের মৃদু শৈত্যপ্রবাহ
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড় আবারো মৃদু শৈত্যপ্রবাহে কাঁপছে। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কনকনে ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ১০০ শতাংশ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা বিরাজ করলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সে হিসেবে এ এলাকার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
এর আগে, মঙ্গলবার একই সময়ে এখানে তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, কনকনে শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। রাত বাড়তে থাকলে বাড়ে শীতের দাপট। সকাল অবধি ঘর কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে পথঘাট। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও বিকেলের পর থেকে ফের বাড়ছে শীত।
কনকনে শীতে দুর্ভোগে রয়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। সময়মত কাজে যেতে পারছেন না শ্রমজীবীরা। বিপাকে যানবাহন চালকরাও। তাদেরকে সকালের দিকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে সাবধানে চলাচল করতে হচ্ছে। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, “উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ার কারণে তীব্র ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে পঞ্চগড়ে । ফলে আবারো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে এ জেলায়। সামনের দিকে এ তাপমাত্রা এমন থাকতে পারে আরো কয়েকদিন।”
ঢাকা/নাঈম/ইমন