মেক্সিকো সীমান্তে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা ট্রাম্পের
Published: 20th, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাংলাদেশ সময় রাত ১১টায় শপথ নেন তিনি। এর মধ্যে দিয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেন ট্রাম্প।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই ট্রাম্প বলেছেন, বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করতে যাচ্ছেন তিনি। তার মধ্যে রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে, যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে তিনি জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করবেন।
অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ বন্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে: চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স
নতুন ডিজিটাল মুদ্রা চালু করলেন মেলানিয়া ট্রাম্প
সেই সঙ্গে যে 'লাখ লাখ অপরাধী' অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে, তারা যেখান থেকে এসেছে, সেখানে ফেরত পাঠানো হবে।
এর পাশাপাশি ট্রাম্প রিমেইন ইন মেক্সিকো বা ‘মেক্সিকোতেই থাকো’ নীতি তিনি পুনরায় কার্যকর করবেন বলে জানিয়েছেন। সীমান্ত এলাকায় আরো সেনা ও জনবল পাঠানো হবে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন।
মাদকচক্র বা কার্টেলগুলোকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হবে এসব নির্বাহী আদেশে।
‘এলিয়েনস এনিমিস অ্যাক্ট অব ১৭৯৮’ পুনর্বহাল করা হবে, যাতে কেন্দ্রীয় ও অঙ্গরাজ্যগুলো ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বিদেশি গ্যাংগুলো’ দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে পারে।
শপথগ্রহণের দিনটিকে তিনি ‘মুক্তির দিন’ বলে বর্ণনা করেন। ট্রাম্প আরো বলেন, “আজ থেকে আবার আমেকিার স্বর্ণালি যুগের শুরু। অসম্ভবকে সম্ভব করাই আমার কাজ, আমেরিকা কাজ।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে আমেরিকা উপসাগর রাখবেন বলেও জানিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমেরিকা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে শক্তিশালী, সবচেয়ে সম্মানিত জাতি হিসেবে তার ন্যায্য স্থান পুনরুদ্ধার করবে- যা সমগ্র বিশ্বের বিস্ময় এবং প্রশংসাকে অনুপ্রাণিত করবে। কিছুক্ষণ পরেই, আমরা মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে আমেরিকা উপসাগর করতে যাচ্ছি।”
এদিকে, মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোজা আইসেলা রদ্রিগেজ সোমবার ‘মেক্সিকো আলিঙ্গন তোমাকে’ নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। এই প্রকল্প ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত হতে পারে এমন মেক্সিকান নাগরিকদের সহায়তা প্রদান করবে।
সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রদ্রিগেজ বলেন, ‘যারা তাদের নিজ দেশে পুনর্গঠন করার জন্য প্রত্যাবাসিত হয়েছেন তাদের প্রতিরক্ষা, যত্ন এবং গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই মেক্সিকো করবে।”
মেক্সিকোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মেক্সিকো আলিঙ্গন তোমাকে’ পরিকল্পনার মাধ্যমে, দেশের জাতীয় অভিবাসন ইনস্টিটিউট বিদেশ থেকে আসা মেক্সিকানদের গ্রহণ, তাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকরণ এবং তাদের জন্মস্থানে স্থানান্তরে সহায়তা করার দায়িত্বে থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “ট্রাম্প গণহারে বহিষ্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর থেকে সরকার এই পরিকল্পনাটি নিয়ে কাজ করছে এবং উন্নয়ন করছে।”
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার এবং ইউনিসেফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে এই পরিকল্পনাটি তৈরি করা হয়েছে।
মেক্সিকান প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম বলেছেন, অভিষেক অনুষ্ঠানের পরে তিনি ট্রাম্পের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মেক্সিকান নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই
নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।
আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।
এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’
গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।
দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।