তাহিরপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) দায়িত্বশীলরা। জানা গেছে, বাঁধের কাজের নকশা ও প্রাক্কলন খরচের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির মিল না থাকায় বাঁধ নির্মাণকাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না তারা।
এরই মধ্যে ঘোষণা করা ৭৬টি প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটি প্রকল্পের সভাপতি বাঁধ নির্মাণকাজ করবেন না মর্মে ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। পাউবো সূত্রে জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, হালির, বর্ধিত গুরমা ও আঙ্গারুলি হাওরের মধ্যে মহালিয়া, মাটিয়ান ও বর্ধিত গুরমা হাওরের ১৫ থেকে ২০টি প্রকল্পের এলাকাতে মাটির খুব সংকট। এ প্রকল্পগুলোতে মাটি আনতে হয় পাটলাই ও পাইকরতলা নদীর ওপার থেকে।
মাটি সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড টাকার পরিমাণে যে ব্যয় নির্ধারণ করে দিয়েছে, বাস্তবে তার দ্বিগুণ। এতে করে প্রকল্পের দায়িত্বশীলরা বিগত বছরগুলোতে লাভের আশায় প্রকল্প নিলেও দিন শেষে তাদের লোকসান গুনতে হয়েছে।
১৫ জানুয়ারি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও কৃষকদের জমি রোপণের স্বার্থে হাওরের পানি নিষ্কাশনের জন্য বনুয়া হাওরের নাওটানা বাঁধটি কেটে দিয়েছিলেন ইউএনও। এতে করে হাওরের পানি কমায় বাঁধ নির্মাণকাজের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হলেও টাকার পরিমাণ কম হওয়ায় প্রকল্পের দায়িত্বশীলরা কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছেন না।
প্রকল্পের দায়িত্ব পেয়েও কাজ না করার শর্তে ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছেন বর্ধিত গুরমা হাওরের ভান্ডারচাপর গ্রামের গোলাম নূর, মাটিয়ান হাওরের রতনশ্রী গ্রামের শাহ আলম, বড়দল নতুন হাটি গ্রামের শামছুজ্জামান, আনন্দনগর গ্রামের দুলাল মিয়া ও ইসলামপুর গ্রামের শফিকুল ইসলাম। এ ছাড়া আরও অনেকেই বাঁধের কাজ করবেন না মর্মে ইউএনও আবেদন লিখে অফিস এলাকায় আসা-যাওয়া করছেন।
মাটিয়ান হাওরপারের রতনশ্রী গ্রামের শাহ আলম জানান, মাটিয়ান হাওরে তাঁকে যে প্রকল্প দেওয়া হয়েছিল, সে প্রকল্পে পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ নির্মাণকাজে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের হিসাব নির্ধারণ করেছে, মূলত ব্যয় হবে তার দ্বিগুণ; যার কারণে তিনি প্রকল্পের কাজ ইউএনও বরাবর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে সমর্পণ করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী মো.

মনির হোসেন জানান, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রকল্পের সভাপতি ও সম্পাদকদের নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য চাপাচাপি করলেও বাঁধ এলাকাতে মাটি সংকটের কারণে তারা কাজ করতে পারছেন না। মাটি সংকট ও নির্মাণ খরচের বরাদ্দ কম থাকায় এরই মধ্যেই পাঁচটি প্রকল্পের সভাপতি কাজ করতে পারবেন বলে আবেদন জমা দিয়েছেন।
কৃষকরা জানান, এমন সময় বাঁধের কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলে ফসল নিয়ে বিপাকে পড়বেন তারা। সংশ্লিষ্টদের উচিত, দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান বের করা।
ইউএনও মো. আবুল হাসেম জানান, মাটিয়ান হাওর ও বর্ধিত গুরমা হাওরের কিছু অংশের বাঁধ নির্মাণকাজের মাটি আনতে হয় নদীর ওপার থেকে। তাও আবার নৌকা দিয়ে আনতে হয়। প্রকল্পের সভাপতিরা তাঁকে জানান, নির্মাণকাজে যে ব্যয় ধরা হয়েছে, বাস্তবে তাতে কাজ সম্পন্ন করা অসম্ভব। এতে খরচ হবে নির্ধারিত ব্যয়ের চেয়ে দ্বিগুণ। সম্প্রতি কয়েকজন প্রকল্প সভাপতি বাঁধ নির্মাণের কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন লিখিতভাবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রকল প র দ য় ত ব ক জ করত

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি পাইকারি আড়তের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে ১১টি যানবাহন অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সাওঘাট এলাকায় সংঘর্ষ হয়। আহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গ-সার্কেল) মো. মেহেদী ইসলাম বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরায় বিএনপির ২ পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ১৪৪ ধারা জারি

৫ আগস্টের শক্তির মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কথা স্বীকার আদিলুরের 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, সাওঘাট এলাকায় বিসমিল্লাহ আড়তের দখল নিয়ে সেলিম প্রধান ও মজিবুরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কয়েকদিন আগে দুই পক্ষের লোকজনকে ডেকে আড়ত থেকে টাকা তুলতে নিষেধ করেন।

আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মজিবুরের লোকজন সেলিম প্রধানের অফিসের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় সেলিমের লোকজন তাদের লক্ষ্য করে ইট, ককটেল ও গুলিবর্ষণ করে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে স্বপন, রাজু, আলামিন, বাবু, রফিক ও সাগর নামে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষের সময় সেলিম প্রধানের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুরসহ ১০টি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেটকার আগুনে পুড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ১১টি গুলির খোসা ও একটি তাজা ককটেলসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।”

ঢাকা/অনিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জয়পুরহাটে নারী ফুটবল ম্যাচ ঘিরে বাধা-ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন
  • জয়পুরহাটে নারী ফুটবল ম্যাচ বাতিল ও ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন
  • তিন ফসলি জমিতে খাল খনন, চাষিদের প্রতিবাদ
  • রূপগঞ্জে আড়ত দখল নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৬