বিদ্যালয় ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় নতুন ভবনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যায়। কথা ছিল দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও নতুন ভবনে ক্লাস করতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। পুরোনো ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে লেখাপড়া। এ অবস্থায় তাড়াশের কুন্দাশন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভোগান্তি পোহাচ্ছে।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নে ১৯৭১ সালে কুন্দাশন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে ২৫০ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত। পাঠদান 
করা হয় জরাজীর্ণ আধাপাকা ভবনে। রয়েছে শ্রেণিকক্ষের সংকট। শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস, ওয়াশ রুম, শিক্ষার্থীদের কমন রুম নেই। সুপেয় পানির অভাবও প্রকট। সব দিক বিবেচনা করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০১৯ সালে এ বিদ্যালয়ের জন্য চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করে। 
২ কোটি ৭৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৫০ টাকায় কাজটি পায় পাবনা জেলার আতাইকুলার ‘সাদ এন্টারপ্রাইজ’। একই বছরের ১৪ জুলাই কার্যাদেশ পায় প্রতিষ্ঠানটি। দুই বছরের মধ্যে শেষ করার শর্ত দেওয়া হলেও পেরিয়ে গেছে পাঁচ বছর। এখনও কাজ শেষ হয়নি। শিক্ষক-কর্মচারী ও শত শত শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। যে কোনো সময় ভবন ধসে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। 
অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু করেনি। থেমে থেমে কাজ ধরায় নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে পারছে না। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ। এগারো মাস ধরে ঠিকাদার বিদ্যালয়ে আসেন না। কাজ নিয়ে এদের গাফিলতির শেষ নেই। 

প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশীদ সরকার জানান, দুই বছরের কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। দফায় দফায় সময় বাড়ানোর পরও কাজের ২৫ থেকে ৩০ ভাগ কাজ বাকি আছে। প্রায় ১১ মাস ধরে ঠিকাদার কাজের স্থানে আসেন না। কোনো খবর রাখেন না। বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হলেও দ্রুত কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দায় সারা হচ্ছে। 
এ বিষয়ে কথা বলতে সাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, করোনাকালে কাজ শুরু হয়। ওই সময় লোকবলের অভাবে কাজ ধরতে কিছুটা বিলম্ব হয়। বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখা হয়। এভাবে থেমে থেমে কাজ চললেও একবারে বন্ধ রাখা হয়নি। 
তাড়াশ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সাতবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তারা শেষবারের মতো সময় নিয়েছে। এর পরও নির্ধারিত সময়ে কাজ না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ই বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়েবমেট্রিক্স র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্সের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গত ২৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) পেছনে ফেলেছে রাবি।

প্রতিবছরের মতো এবারও দুই শতাধিক দেশের ৩১ হাজারের বেশি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং, ২০২৫ (জানুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়েবমেট্রিক্স।

এই র‍্যাঙ্কিং প্রণয়নে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ পদ্ধতি, বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রভাব, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতাসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত ভূমিকা বিবেচনা করে স্পেনের মাদ্রিদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্স। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ছাড়াও তাদের গবেষক ও প্রবন্ধ বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়।

ওয়েবমেট্রিক্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১ হাজার ৪২২তম। ২০২৪ সালের প্রথম সংস্করণে (জানুয়ারি) রাবির দেশীয় অবস্থান ছিল তৃতীয় এবং দ্বিতীয় সংস্করণে (জুলাই) এক ধাপ এগিয়ে অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। এ বছর আরো এক ধাপ এগিয়ে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে, শীর্ষ অবস্থান থেকে অষ্টমে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যার বৈশ্বিক অবস্থান ১ হাজার ৯৯৫তম।

বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যালয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে বুয়েট (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৪৭৪), তৃতীয় অবস্থানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৭০), চতুর্থ অবস্থানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৮৩), পঞ্চম অবস্থানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৮১৮), ষষ্ঠ স্থানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৪২), সপ্তম স্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৭০) এবং অষ্টম স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৯৫)। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২২৮৭) নবম স্থানে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২৩৬৭) দশম স্থানে আছে এ র‌্যাঙ্কিংয়ে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেছেন, “এ অর্জন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা আমাদের গবেষকদের অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছি এবং তারাও সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে গবেষণাকর্ম করছেন। এজন্যই আমাদের সফলতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আমাদের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির চেষ্টা করছি এবং সবাইকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আমরা সামনের দিকে আরো ভালো করব।”

রাবির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে, আমরা যেন এ সাফল্যে আত্মতুষ্টিতে ভুগে স্থবির না হয়ে যাই। আমাদের সামনে আরো ভালো করার সুযোগ রয়েছে এবং আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাব।”

তিনি আরো বলেন, “আমি সব সময় বলে আসছি, আমাদের গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। ন্যূনতম বরাদ্দ অন্তত দ্বিগুণ করা উচিত, যাতে আমরা উন্নত গবেষণা করতে পারি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো ভালো অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হই।”

ঢাকা/ফাহিম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ