জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর চারটি– সংবিধান, নির্বাচন, দুদক ও পুলিশ তাদের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে। বাকি ১১টির প্রস্তাব আগামী মাসের মাঝামাঝি পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। গত দেড় দশকে ছলচাতুরীর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতির ঘাড়ে চেপে বসা শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার উৎখাতের পর আর যাতে এ ধরনের সরকার ক্ষমতায় না আসে, সে জন্যই মূলত সংস্কার প্রস্তাব। তবে এ কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশের দাপ্তরিক নাম, মূল চার নীতিসহ কিছু সুপারিশের প্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে আলোচনা জরুরি।
জুলাই-আগস্টে এ দেশের রক্তাক্ত রাজপথের অভিজ্ঞান থেকে আমরা নিশ্চিত, এ দেশে আর কোনো ব্যক্তিকে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখা যাবে না। বর্তমান সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার আওতা যতদূর চোখ যায়, তা-ও পেরিয়ে যায়। তিনি একই সঙ্গে সংসদ নেতা, দলেরও প্রধান; বস্তুত তিনি দল ও দেশের দণ্ডমুণ্ডের একক অধিকর্তা হয়ে বসেন। রাষ্ট্রের যাবতীয় দপ্তর, সংসদ, বিশ্ববিদ্যালয়, সংবাদমাধ্যম– দিনরাত প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবার-স্বজনের মহিমা কীর্তনে ব্যস্ত থাকে। প্রধানমন্ত্রী তখন আর কোনোরকম জবাবদিহির আওতায় নিজেকে দেখতে চান না; বাংলাদেশ হয়ে ওঠে তাঁর ও পারিষদবর্গের ভোগ-বিলাসের অন্তহীন উদ্যান। প্রধানমন্ত্রীর জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর সাহস হয় না, তাই ছলচাতুরীর নির্বাচনই হয়ে ওঠে অন্বিষ্ট। গত দেড় দশক শেখ হাসিনার শাসনামল এমন প্রধানমন্ত্রিত্বের অতুলনীয় উদাহরণ।
গণঅভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশের সংবিধান সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার প্রস্তাবনা তাই সংগত ও জরুরি। কমিশন প্রস্তাব করেছে, এক ব্যক্তি দু’বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না; প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক দলের প্রধান বা সংসদ নেতাও হতে পারবেন না। একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে যাতে রাষ্ট্রক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হতে না পারে, সে জন্য থাকবে ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল’। কমিশন আরও সুপারিশ করেছে, ‘আইনসভার নিম্নকক্ষের নাম হবে জাতীয় সংসদ এবং উচ্চকক্ষ সিনেট। জাতীয় সংসদের আসন হবে ৪০০। এর মধ্যে ১০০ নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হবেন। বাকি ৩০০ বিদ্যমান পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর ১০ শতাংশ প্রার্থী হতে হবে তরুণ।’ (সমকাল, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫) 

রাজনৈতিক দলগুলোর ১০ শতাংশ প্রার্থী হতে হবে তরুণ? এর মানে কী? রাজনীতিতে কোটা প্রথার মাধ্যমে জোর করে তরুণদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে? অবশ্যই তরুণরা রাজনীতিতে আসবেন; তাদের প্রাধান্যও দিতে হবে। ঠিক আছে, কিন্তু জোর খাটিয়ে কেন? তরুণদের যোগ্য হয়ে উঠতে হবে রাজনীতির জন্য। প্রস্তুত হতে হবে, শিক্ষায়-জ্ঞানে নিজেকে পূর্ণ করেই মাঠে নামতে হবে। যে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মহাপরিণতি চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান, তারপর কাঙ্ক্ষিত সংস্কারলব্ধ রাজনীতিতে ‘তারুণ্যের কোটা’– তরুণ প্রজন্মের চিন্তা-চেতনার সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। 

প্রশ্ন উঠতে পারে, নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য রাজনীতিকরা কি সকলে যোগ্য? নিশ্চয়ই নয়। প্রার্থিতার যোগ্যতা সম্পর্কে রাষ্ট্রের আরও স্পষ্ট অবস্থান জরুরি। মানবতাবিরোধী আদালতে দণ্ডিতরা রাজনীতিতে নিষিদ্ধ হবেন মর্মে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছে, ঠিক আছে। তবে নির্বাচনে অবাধে অর্থ ব্যয়ের মাধ্যমে জিতে আসার যে রীতি, তা ভেঙে দেওয়ার সুস্পষ্ট উদ্যোগ দেখা গেল না। নির্বাচনে নির্দিষ্ট অঙ্কের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করলেই প্রার্থিতা বাতিলসহ জেল-জরিমানার শাস্তির মুখে পড়বেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থী– এ ধরনের কঠোর নিয়ম জারি জরুরি। অবাধে কালো টাকা বানিয়ে নির্বাচনে তা ছড়িয়ে সহজে সংসদে ঢুকে আরও কালো টাকা বানানোর সহজ তরিকার চির উচ্ছেদ করতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীরা হলফনামায় যে হিসাব জমা দেবেন, তার ব্যত্যয় সন্ধানে বিশেষ কমিটি গঠন করতে হবে। হলফনামায় গরমিলের কারণে প্রার্থিতা বাতিলের প্রচলিত আইনকে কঠোর, গতিময় ও তাৎক্ষণিক করে তুলতে হবে। 

২.


প্রস্তাব করা হয়েছে, ২১ বছর হলে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া যাবে। না, এটি ঠিক হবে না। এই বয়সে একজন তরুণ বা তরুণী কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত; তাকে আরও গড়ে ওঠার পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। কারণ, জ্ঞান ও প্রজ্ঞাভিত্তিক সমাজই ন্যায়ভিত্তিক সমাজের সূতিকাগার। বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক কর্তব্য– ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবন সম্পূর্ণ করা। শিক্ষা গ্রহণ যদি সমাজে ‘দ্বিতীয় প্রসঙ্গ’ হয়ে ওঠে, বিশেষত আমাদের মতো পশ্চাৎপদ সমাজে, তবে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে উঠবে। বিজ্ঞান, আবিষ্কার, গবেষণায় উজ্জীবিত তারুণ্যের অংশগ্রহণ আলোকিত সমাজের প্রাণ। অন্তত ২৫ বছর বা স্নাতক শেষ করেই একজন তরুণের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা উচিত। 

৩.
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ করার প্রস্তাবও করেছে। তবে ইংরেজি সংস্করণে ‘রিপাবলিক’ ও ‘পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ’ শব্দগুলো থাকবে। 

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ বাদ দিয়ে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দ বদল ছাড়া আর কী উদ্দেশ্যে হতে পারে? মানুষ অভিধান খুলে দেশের নাম উচ্চারণ করবে? মাতৃভাষা, জাতীয় সংগীত, দেশের নাম– আজন্ম স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার অংশ। বদলে ফেলতে হবে কেন? 

সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির মধ্যে তিনটি– জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্কার কমিশন। সেই সঙ্গে গণতন্ত্র বহাল রেখে আরও চারটি– সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও বহুত্ববাদসহ মোট পাঁচ মূলনীতি সুপারিশ করে কমিশন বলছে, ‘১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের মহান আদর্শ এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনস্বরূপ সংবিধান ও রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে এই পাঁচটি নীতি প্রস্তাব করা হয়েছে।’ (প্রথম আলো, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫)
জনআকাঙ্ক্ষা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে চলে গেছে বলে সংস্কার কমিশনের ধারণা। আর সমাজতন্ত্র? সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের মধ্য দিয়ে কি বোঝা যায়? সমাজতন্ত্রকে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাদ দিতে হবে কেন? জাতীয়তাবাদেই বা অনাস্থার রহস্য অগম্য। সব মিলিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ফসল যে সংবিধান, তার মূল চার নীতির তিনটি বাদ দেওয়ার প্রস্তাব আসলে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ও পরম্পরা পাশ কাটানোর অপচেষ্টা।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর পাকিস্তানের জন্ম থেকেই পূর্ব অংশের সঙ্গে পশ্চিম অংশের উপনিবেশমূলক আচরণ বৈষম্যের সৃষ্টি করে। পশ্চিম পাকিস্তানের ধারাবাহিক শোষণ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট বিক্ষোভ, গণঅভ্যুত্থান ও রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমেই স্বাধীন বাংলাদেশের উদ্ভব; এর স্মারক সংবিধানের মূল চার নীতি। এসব বদলের চেষ্টা না করে মূল ক্ষেত্রে মনোযোগ দেওয়া উচিত সংশ্লিষ্টদের। 
মূল ক্ষেত্র, অর্থাৎ যাতে কোনো ব্যক্তি যেন দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা না হয়ে ওঠেন! ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। কেউই প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়; প্রত্যেককে যথাসময়ে নির্বাচনী কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জনতার রায় নিয়ে তাকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই আসল কাজ সম্পূর্ণ হলেই দেশ গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা করবে। এ জন্য দেশের নাম বা সংবিধানের মূল চার নীতি বদলানোর প্রয়োজন নেই। 

মুক্তিযুদ্ধ এ দেশের অস্তিত্বের সারাৎসার– মুক্তিযুদ্ধ থেকে উদ্ভূত প্রতিটি অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয়। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা মুক্তিযুদ্ধের প্রতিও প্রত্যেককে দায়বদ্ধ করে। যিনি রাজনীতিক, তিনি যে বয়সেরই হোন না কেন, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতাই তাঁর রাজনীতির উৎসমুখ।

মাহবুব আজীজ: উপসম্পাদক, সমকাল; সাহিত্যিক
mahbubaziz01@gmail.com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণঅভ য ত থ ন স প র শ কর র জন ত ক র জন ত ত ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই আন্দোলনকে ‘তথাকথিত’ বলায় ঢাবি ছাত্রদল সভাপতির দুঃখপ্রকাশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত আন্দোলন’ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতির ‘র’ও বোঝেনা বলায় সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস।

সোমবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাবির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শাখা ছাত্রদল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। 

সোমবার (২১ এপ্রিল) ১১টার দিকে নিজের ফেসবুকে এক বিবৃতি দিয়ে বক্তব্যের দুটি অংশ অসাবধানতাবশত বলেছেন দাবি করে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

‘আল্লামা ইকবাল ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক সূত্রে গাঁথা’

‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ইসলামবিরোধী’

গণেশ চন্দ্র রায় তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, “ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে আমার দেওয়া বক্তৃতার দুইটি অংশ নিয়ে আজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা লক্ষ্য করছি। আমি বলতে চেয়েছিলাম যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক সময় রাজনীতির অনেক বিষয় নিয়ে মাথা ঘামায়নি। কেননা ফ্যাসিবাদের আমলে সে পরিবেশ ছিল না। কিন্তু অসাবধানতাবশত বলে ফেলেছি সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক সময় রাজনীতির ‘র’ নিয়েও মাথা ঘামায় না। আমি আমার বক্তব্যে অসাবধানতাবশত এ বাক্যটি বলেছি।”

তিনি বলেন, “আমি এ বাক্য দ্বারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা নিয়ে কখনোই প্রশ্ন তুলিনি। আমি আমার পুরো রাজনৈতিক জীবনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে এরকম মনোভাব কখনো কোথাও পোষণ করিনি। বরং আমি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট ধারণ করি এবং আজীবন তা ধারণ করার জন্য বদ্ধপরিকর।”

তিনি আরও বলেন, “আমার এই কথায় কেউ মনোক্ষুণ্ন হয়ে থাকলে, তাদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।”

একইসঙ্গে বক্তব্যের আরেকটি অংশে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন নিয়ে ‘তথাকথিত’ শব্দটি ব্যবহার করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমার আরও বেশি সচেতন হতে হবে। আমার অনাকাঙ্ক্ষিত এ কথাটি সেই আবেগের জায়গায় যদি আঘাত দিয়ে থাকে, আমি সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।”

তিনি আরো বলেন, “আমি আশা রাখবো আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আরো অধিক পরিমাণে রাজনীতি সচেতন হব। গঠনমূলক সমালোচনা ও তার যুক্তিযুক্ত জবাবের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাজনীতির সুস্থ চর্চাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”

এদিকে, জুলাই-আগস্টের গৌরবময় ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে ‘তথাকথিত আন্দোলন’ বলায় গণেশের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী শুরু হয় সমালোচনা। এ ব্যক্তব্যকে দায়িত্বজ্ঞানহীন, জাতীয় ঐক্য বিরোধী ও অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখা।

সোমবার (২১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে ঢাবি শাখা শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান বলেন, জুলাই বিপ্লব ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসর ব্যতীত বাংলাদেশের সব মত ও পথের মানুষকে একত্রিত করেছিল। পিলখানা থেকে শাপলার গণহত্যা, জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিচারিক হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন এবং অবিচারের ভয়াবহ সংস্কৃতি আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শক্তি এদেশে কায়েম করেছিল। তার বিপরীতে বাংলাদেশের মানুষ তার অধিকার ও বাকস্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের মাধ্যমে। 

তারা আরো বলেন, ছাত্রদলের এমন বক্তব্য শহীদদের রক্তকে অপমান, আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী গাজীদের সঙ্গে প্রতারণা। এটা ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগকে খাটো করে দেখার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী জনগণ ও ছাত্রসমাজের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও গণমুখী সংগ্রামকে আওয়ামী বাকশালীদের মতো অপমানসূচক শব্দ ব্যবহার করে হেয় প্রতিপন্ন করার ধৃষ্টতা দেখানো অন্যায্য ও অত্যন্ত নিন্দনীয়। ছাত্রদলের কাছ থেকে আমরা আরো দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আন্দোলন মনে হয় বিক্রি হয়ে যাচ্ছে: তাহির জামান প্রিয়র মা
  • জুলাই আন্দোলনকে ‘তথাকথিত’ বলায় ঢাবি ছাত্রদল সভাপতির দুঃখপ্রকাশ