Samakal:
2025-04-23@21:25:45 GMT

ট্রাম্প ও টিকটক

Published: 20th, January 2025 GMT

ট্রাম্প ও টিকটক

দ্বিতীয় মেয়াদে অভিষেকের আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা ঘটনার জন্ম দিয়েছেন। রোববার ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর আগের দিন ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক আইনি নিষেধাজ্ঞায় যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হয়ে গেলেও ট্রাম্পের আশ্বাসের ভিত্তিতে আবার চালু হয়েছে। 

বলা বাহুল্য, চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটক নানা কারণেই আলোচনায়। ‘নিরাপত্তাজনিত’ নিষেধাজ্ঞা পেয়েছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভারতসহ অনেক দেশ থেকে। যুক্তরাষ্ট্রে যদিও ১৭ কোটি মানুষ টিকটক ব্যবহার করে, ২০২৩ সাল থেকেই নিষেধাজ্ঞার আলোচনা চলছে। খোদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থানও টিকটকের বিরুদ্ধে ছিল। এবার নিষিদ্ধ হওয়ার পর তিনি ৯০ দিনের সাময়িক ছাড় দেওয়ার কথা বললেন। এমনকি টিকটকের সিইও শিও জি চিউ ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে সংবাদমাধ্যমের খবর।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম মেয়াদ (২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত) থেকেই নানা কারণে আলোচিত। অন্যদিকে টিকটকও দেশে দেশে ব্যাপক আলোচতি ও সমালোচিত। তবে প্রথম মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই সামাজিক মাধ্যমকে জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে দেখেছিলেন এবং ২০২০ সালেই নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। এর পর যুক্তরাষ্ট্রে আইনি লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয় টিকটক। পরের বছর জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর টিকটক বন্ধে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে ব্যবস্থা নেন। এর পরও প্রশাসনিক ও আইনি লড়াই চলতে থাকে। কিন্তু ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর অবস্থান পাল্টিয়ে টিকটক রক্ষায় ভূমিকা পালন করেন। এমনকি টিকটক যাতে নিষিদ্ধ না হয়, সে জন্য নানামুখী তৎপরতা চালান।

অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২৪ সালের এপ্রিলে ‘পাবলিক ল ১১৮-৫০’ নামে আইনে স্বাক্ষর করেন। সেখানে আমেরিকা সুরক্ষার বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তার আলোকেই ২০২৫ সালে এসে টিকটক পুরোপুরি নিষিদ্ধ কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। বিকল্প হিসেবে টিকটককে আমেরিকার কোনো কোম্পানির কাছে বিক্রির কথা ছিল। সে অনুযায়ী ১৮ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীরা এই অ্যাপে ঢুকলে দেখেন, ‘আইনগতভাবে টিকটক নিষিদ্ধ করা হয়েছে’। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরই ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটক ‘রক্ষার’ ঘোষণা দেন। ট্রাম্পের কাছ থেকে পাওয়া ৯০ দিন সময়ে টিকটকের বাঁচা-মরার লড়াই কোন দিকে যায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। 
ট্রাম্পের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টও আছে। গত বছরের ২ জুন প্রথমবারের মতো তিনি টিকটকে পোস্ট করেন। যদিও তিনি ২০২০ সালে টিকটকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ হিসেবে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সামাজিক মাধ্যম ট্রিলারে যোগ দিয়েছিলেন। 

শুধু টিকটক নয়; বিশ্বে পরিচিত অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমের সঙ্গেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু তিক্ত ও মজার অভিজ্ঞতা আছে। টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউবের সঙ্গেও বিরোধে জড়ান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভুয়া ভিডিও পোস্ট করেছেন বলে ২০২১ সালে টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব ট্রাম্পের সেই ভিডিও মুছে দেয়। এখন অবশ্য তিনি প্রায় সবটাতে ফিরে এসেছেন। তাঁর অধিকাংশ তৎপরতাই সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে পওয়া যায়। 

ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কী করেন, সেদিকে তাকিয়ে বিশ্ব। বিশ্বব্যাপী তাঁর বিরোধিতা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রে যে জনপ্রিয়তা রয়েছে, দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়াই তার প্রমাণ। সামাজিক মাধ্যমের জনপ্রিয়তাও তার সাক্ষ্যবহ। তিনি তাঁর পুরোনো প্রকল্প ফের সামনে এনেছেন। অভিবাসী নিয়ে তাঁর অবস্থান বিষয়েও অনেকে শঙ্কিত। টিকটকের বিপক্ষে থাকা ট্রাম্প যদি প্ল্যাটফর্মটি রক্ষায় ভূমিকা পালন করতে পারেন, হয়তো তিনি এখন যেসব বিষয়ের বিরোধিতা করছেন, সেগুলোর পক্ষেও তাঁকে দাঁড়াতে দেখা যেতে পারে।  

মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল
    mahfuz.

manik@gmail.com 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ট কটক র ব ট কটক ব

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি সিন্ডিকেটে জড়িত শেখ রেহানা-সালমানসহ প্রভাবশালীরা

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ প্রভাবশালীরা জড়িত ছিলেন। 

সোমবার প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দেওয়া স্মারকলিপিতে এ অভিযোগ করেছেন জনশক্তি ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, অতীতের মতো যেন আর সিন্ডিকেট না হয়। সিন্ডিকেট ভাঙতে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক সংশোধন করতে হবে।
 
সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দিতে স্মারকলিপিটি প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়াকে দেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, সিন্ডিকেট ভাঙলে মাত্র দেড় লাখ টাকায় শ্রমিক পাঠানো সম্ভব। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হলেও, আবারও সিন্ডিকেট করার পায়তারা চলছে। 

সিন্ডিকেট নামে পরিচিতি পাওয়া মালয়েশিয়ার বাছাই করা ১০ এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগে অতীতের অনিয়ম হলেও, ২০২১ সালে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার একই পদ্ধতিতে কর্মী পাঠাতে রাজি হয়। ২০২২ সালে প্রথমে ২৫ এজেন্সি এবং পরবর্তীতে তিন ধাপে আরও ৭৬ এজেন্সি কর্মী পাঠানোর কাজ পায়। এগুলো সিন্ডিকেট নামে পরিচিত। 

প্রথম ২৫ এজেন্সিতে ছিল তৎকালীন মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দুই এজেন্সি। ছিল আওয়ামী লীগ এমপি বেনজির আহমেদ, আলাউদ্দিন নাসিম, জাতীয় পার্টির মাসুদউদ্দিন চৌধুরীর তিন প্রতিষ্ঠান। বাকি ২০টির অন্তত আটটি আওয়ামী লীগ নেতাদের মালিকানাধীন। 

৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হলেও, সিন্ডিকেট নামে পরিচিত এজেন্সিগুলো কর্মী প্রতি গড়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা নেয়। স্মারকলিপিতে অভিযোগ করা হয়, অতীতে কর্মী হয়রানীর নজির থাকার পরও শেখ রেহানা, সালমান এফ রহমানসহ প্রভাবশালীদের যোগসাজশে দ্বিতীয়বারের সিন্ডিকেট অনুমোদন দেওয়া হয়।

মালয়েশিয়া বিদেশি কর্মী নিয়োগের ‘ফরেন ওয়ার্কার সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-এফডব্লিওসিএমএস’র নিয়ন্ত্রক ছিল বেস্টিনেট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এর অন্যতম মালিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমিনুল ইসলাম নুর। বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক ছিলেন রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যাথারসিসের মালিক রুহুল আমিন স্বপন। 

গত বছরের মে মাসে সমকালের অনুসন্ধান অনুযায়ী, এফডব্লিওসিএমএসে কর্মীর নিবন্ধন ফি ১০০ রিঙ্গিত হলেও, টাকা পরিশোধে ‘মাইগ্রাম’র ভার্চুয়াল রিচার্জ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পাঁচ হাজার রিঙ্গিত করে নেওয়া হয়। সিন্ডিকেটে ঢুকতেও আগাম ঘুষও দিতে হয়েছিল এজেন্সিগুলোকে। প্রতি কর্মী নিয়ন্ত্রণের সময়ে ‘ঘুষের ব্যালেন্স’ থেকে পাঁচ হাজার রিঙ্গিত করে কাটা হতো। আবার অটো রোটেশন পদ্ধতির কারণে অভিবাসন ব্যয় বৃদ্ধি পায়। পৌনে পাঁচ লাখ কর্মী পাঠিয়ে অন্তত ১৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়। কর্মী প্রতি এক লাখ ৫২ হাজার টাকা করে ঘুষ নেওয়া হয়।  

স্মারকলিপিতেও একই সংখ্যা উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, যখনই মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়, তখনই ওই সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্টের পর পলাতক রুহুল আমিন স্বপন এবং আমিনুল ইসলাম নুর আবারও সিন্ডিকেট গড়তে সক্রিয় হয়ে ওঠেছেন। তাদের কারণে ২০২৪ সালে বহির্গমন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও ১৭ হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেনি।

জনশক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বায়রার সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, সিন্ডিকেটের অনিয়মের কারণে অসংখ্য কর্মী মালয়েশিয়া গিয়ে চাকরি ও বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। সিন্ডিকেট নির্মূলে মালয়েশিয়া অন্যান্য কর্মী প্রেরণকারী দেশ থেকে যেভাবে এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ দেয়, বাংলাদেশ থেকেও সেভাবে কর্মী নিয়োগ দিতে হবে। মালয়েশিয়ার সরকারের পরিবর্তে নিয়োগকর্তা বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি বাছাই করবে। 

৪৫৩টি রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকের স্বাক্ষরসহ রয়েছে স্মারকলিপিতে। তাদের পক্ষে স্মারকলিপি জমা দেন বায়রার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি নোমান চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চবিতে ‘বাঁধন’ এর পথচলা শুরু
  • প্রেমিক মারা গেছেন, সব ঋণ শোধ করলেন চীনা নারী
  • গলা টিপে ধরা ও মারধরের অভিযোগে সাবেক অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের শাস্তি
  • সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারির কথা জানাল পুলিশ
  • নাগার পর এবার সামান্থাও বিয়ে করছেন 
  • জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি ৬ মে
  • মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আজহারের আপিল শুনানি ৬ মে
  • দীর্ঘদিনের প্রেমিকাকে বিয়ে করলেন অভিনেত্রী ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
  • মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি সিন্ডিকেটে জড়িত শেখ রেহানা-সালমানসহ প্রভাবশালীরা
  • জীবনের প্রথম ট্রফি জয় থেকে মাত্র দুই ম্যাচ দূরে হ্যারি কেইন