চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় বাড়ি থেকে বিএনপি কার্যালয়ে তুলে এনে দলেরই এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দাদনের গো মার্কেটে বিএনপি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযোগ, গাছুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য শাহাবুদ্দিন সুমনের নেতৃত্বে কয়েক জন এতে অংশ নেন। এ ঘটনায় নিহত মো.

জাহাঙ্গীর (৫৫) ওই এলাকার দৌল্যার গো বাড়ির আবদুল্লাহর ছেলে।

জাহাঙ্গীরের চাচা প্রত্যক্ষদর্শী মো. রহিম বলেন, বাড়ির সামনে চিৎকার শুনে এসে দেখি, শাহাবুদ্দিন সুমনের নেতৃত্বে চার-পাঁচজন জাহাঙ্গীরকে টেনেহিঁচড়ে মোটরসাইকেলে তোলার চেষ্টা করছে। কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে, টাকা পাব। একপর্যায়ে সুমন লাঠি দিয়ে জাহাঙ্গীরের মাথায় আঘাত করে। এর পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে দাদনের গো মার্কেটে বিএনপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। 

দলটির সঙ্গে মোটরসাইকেলে তিনিও বিএনপি অফিসে যান; জানিয়ে রহিম বলেন, আমি বারবার অনুরোধ করছিলাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে। সেটা না করে বিএনপি অফিসে নিয়ে সুমন ও তার সহযোগীরা জাহাঙ্গীরকে আরেক দফা মারধর করে। পরে অবস্থা খারাপ দেখলে জাহাঙ্গীরকে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। গাছুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর ভাতিজার মৃত্যু হয়।

গাছুয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন বলেন, জাহাঙ্গীর বিএনপির কর্মী। প্রবাসে থাকার সময় দলকে সে আর্থিক সহযোগিতা দিত। 

ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাসান বলেন, অফিসে নিয়ে দলেরই কর্মীকে হত্যার ঘটনায় বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। অপরাধীকে সম্মিলিতভাবে আইনের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।

সন্দ্বীপ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে ইতালি’

অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনসহ বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ইতালি সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা জানান।

সাক্ষাতে আসন্ন ৫-৬ মে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির বাংলাদেশ সফর, অবৈধ অভিবাসন ও মানবপাচার প্রতিরোধ, নিরাপত্তা খাতে পারস্পরিক সহায়তা; পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান এবং জনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতালি বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু।” তিনি উল্লেখ করেন, ইতালিতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী কর্মরত আছেন, যারা রেমিট্যান্স প্রেরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে এই সংখ্যাটি আরো বাড়বে এবং দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে।

রাষ্ট্রদূত জানান, সফরকালে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক ও প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ৫ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হবে এবং একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের সম্মতিক্রমে অবৈধ অভিবাসন রোধ, আন্তঃদেশীয় অপরাধ দমন এবং পুলিশ বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে ঘোষণা, সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশ সব সময় আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে বৈধ চ্যানেলে জনশক্তি রপ্তানিতে আগ্রহী। আমরা অবৈধ অভিবাসনের বিপক্ষে এবং যারা দালালের মাধ্যমে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) মো. শামীম খান, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব (রাজনৈতিক-১) মো. জসীম উদ্দিন খান এবং ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসের অভিবাসন সংযুক্ত কর্মকর্তা জিউসেপ্পে দি জিওভান্নি উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ