কার্যালয়ে তুলে এনে পিটিয়ে কর্মীকে হত্যা বিএনপি নেতার
Published: 20th, January 2025 GMT
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায় বাড়ি থেকে বিএনপি কার্যালয়ে তুলে এনে দলেরই এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে নেতার বিরুদ্ধে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দাদনের গো মার্কেটে বিএনপি কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ, গাছুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য শাহাবুদ্দিন সুমনের নেতৃত্বে কয়েক জন এতে অংশ নেন। এ ঘটনায় নিহত মো.
জাহাঙ্গীরের চাচা প্রত্যক্ষদর্শী মো. রহিম বলেন, বাড়ির সামনে চিৎকার শুনে এসে দেখি, শাহাবুদ্দিন সুমনের নেতৃত্বে চার-পাঁচজন জাহাঙ্গীরকে টেনেহিঁচড়ে মোটরসাইকেলে তোলার চেষ্টা করছে। কারণ জিজ্ঞেস করলে বলে, টাকা পাব। একপর্যায়ে সুমন লাঠি দিয়ে জাহাঙ্গীরের মাথায় আঘাত করে। এর পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে দাদনের গো মার্কেটে বিএনপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।
দলটির সঙ্গে মোটরসাইকেলে তিনিও বিএনপি অফিসে যান; জানিয়ে রহিম বলেন, আমি বারবার অনুরোধ করছিলাম হাসপাতালে নিয়ে যেতে। সেটা না করে বিএনপি অফিসে নিয়ে সুমন ও তার সহযোগীরা জাহাঙ্গীরকে আরেক দফা মারধর করে। পরে অবস্থা খারাপ দেখলে জাহাঙ্গীরকে রেখে সবাই পালিয়ে যায়। গাছুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পর ভাতিজার মৃত্যু হয়।
গাছুয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলাউদ্দিন বলেন, জাহাঙ্গীর বিএনপির কর্মী। প্রবাসে থাকার সময় দলকে সে আর্থিক সহযোগিতা দিত।
ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাসান বলেন, অফিসে নিয়ে দলেরই কর্মীকে হত্যার ঘটনায় বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। অপরাধীকে সম্মিলিতভাবে আইনের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।
সন্দ্বীপ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা
সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয় শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি সুদানের কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর লজিস্টিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে নৃশংস ড্রোন হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।’
সুদানের কোরদোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের ভবনটিতে গতকাল শনিবার এ হামলা হয়।
গুতেরেসের বিবৃতিতে বলা হয়, হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। হতাহত ব্যক্তিদের সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন।
গুতেরেস বলেন, ‘দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।’
হামলায় নিহত শান্তিরক্ষীদের সবাই বাংলাদেশি। তাঁরা ইউএন ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেইয়ের (ইউএনআইএসএফএ) হয়ে দায়িত্বরত ছিলেন। হামলায় আরও আট শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন।সুদানের সেনাবাহিনী ওই হামলার দায় র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) নামে দেশটির আধা সামরিক বাহিনীর ওপর চাপিয়েছে।
সুদানে দুই বছরের বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। দেশটির সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এ লড়াই চলছে।
আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, এ হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তাঁদের ধ্বংসাত্মক কৌশলের স্পষ্ট প্রকাশ।
সুদান সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ভিডিওতে একটি স্থান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উঠতে দেখা যাচ্ছে। তারা বলেছে, এটি জাতিসংঘের স্থাপনা।
বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হতাহত হওয়ার এ ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
দক্ষিণ কোরদোফানে আজ (শনিবার) শান্তিরক্ষীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।.আন্তোনিও গুতেরেস, জাতিসংঘ মহাসচিবযেখানে হামলা হয়েছে, সেই তেলসমৃদ্ধ অঞ্চল আবেই নিয়ে সুদান ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ২০১১ সালে সুদান থেকে আলাদা হয়ে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এর পর থেকে সেখানে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন মোতায়েন রয়েছে।
দুই দেশের সীমান্তে অবস্থিত আবেই বিশেষ প্রশাসনিক মর্যাদার অঞ্চল।
সুদানের আবেই অঞ্চলে একটি সড়কে দায়িত্ব পালন করছেন জাতিসংঘের একজন শান্তিরক্ষী