কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ভ্যানচালক মজিবর রহমান শেখ (৬২) হত্যা মামলায় তার ছোট ভাই, ভাবি, ভাগ্নেসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) মধ্যরাতে উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ মুলগ্রাম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে তাদেরকে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমারখালী থানার ওসি মো.

সোলায়মান শেখ।

নিহত মজিবর রহমান শেখ উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের দক্ষিণ মুলগ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। 

আরো পড়ুন:

জুলাই বিপ্লবে শহীদের পরিবার ও আহতদের সহায়তা প্রদান

খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবদল নেতা নিহত

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নিহত মজিবরের ছোট ভাই মজনু শেখ (৫৫) ও তার স্ত্রী সায়েরা খাতুন (৪৫), ভাগ্নে অমিত হাসান (৩৬) ও চাচা নাসির শেখ (৪৫)।

মামলার বাদী শরিফা খাতুন জানান, বসতবাড়ির জমি ও পাওনা টাকার জেরে তার স্বামীকে হত্যা করে স্বজনরা। তিনি সঠিক বিচার দাবি করেন।

ওসি মো. সোলায়মান শেখ জানান, জমি সংক্রান্ত এবং পাওনা টাকার জেরে ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর ভ্যানচালক মজিবর রহমানকে মারধর করে জখম করেন স্বজনরা। পরে আহত মজিবরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১২ নভেম্বর তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ১৩ নভেম্বর মজিবর রহমানের স্ত্রী শরিফা খাতুন বাদী হয়ে পাঁচ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুরে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ: ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জনের নামে মামলা

শরীয়তপুরের ডামুড্যা থেকে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ব্যবসায়ী ফয়সাল সরদারের ভাই স্বাধীন সরদার বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় মামলাটি করেছেন। মামলায় চার পুলিশ সদস্যসহ সাতজনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামি করা হয়েছে।

ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে সাতজনের নাম উল্লেখ ও একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে চারজন পুলিশ সদস্য।

গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে ডামুড্যা বাজারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জুয়েল সরদার (৩২) ও ফয়সাল সরদারকে (২৪) অপহরণের পর নিয়ে যাওয়ার সময় চারজনকে আটক করে পিটুনি দেন জনতা। তাঁদের মধ্যে তিন পুলিশ সদস্য আছেন। এ ছাড়া এক পুলিশ সদস্যসহ চারজন পালিয়ে যান।

ওই মামলায় কৌশিক আহমেদ, কাউসার তালুকদার, রুবায়েত মীর ও জয় পোদ্দার নামে পুলিশের চার কনস্টেবলকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কৌশিক ও জয় পোদ্দার খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ, কাউসার তালুকদার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ও রুবায়েত মীর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত আছেন।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ডামুড্যা থানার পুলিশ জানায়, ভেদরগঞ্জ উপজেলার ইকরকান্দি এলাকার মোহাম্মদ জুয়েল সরদার ও ফয়সাল সরদার ডামুড্যা বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ওই দুই ব্যবসায়ী বাড়িতে ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ডামুড্যার দারুল আমান বাজার এলাকায় কয়েকজন লোক ওই দুই ব্যবসায়ীকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। তাঁরা ওই দুই ব্যবসায়ীর কাছে সারা দিনের বিক্রি করা টাকা চান। তাঁরা কোনো টাকা দিতে পারেননি। তখন অপহরণকারীরা তাঁদের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা চান। ওই ব্যবসায়ীরা ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হন।

ওই দুই ব্যবসায়ীকে নিয়ে মাদারীপুর শহরের লেকের পারে যান অপহরণকারীরা। সেখানে গিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অপহরণ চক্রকে ওই ব্যবসায়ীরা চার লাখ টাকা দেন। বাকি ছয় লাখ টাকা আদায় করার জন্য দিবাগত রাত একটার দিকে ওই চক্র ব্যবসায়ীদের নিয়ে ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যান। সেখানে দুই ব্যবসায়ী গাড়ির ভেতর থেকে চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। তখন স্থানীয় লোকজন গাড়িটি আটকে চারজনকে পিটুনি দেন। পরে ডামুড্যা থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

এ ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ২ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, দিবাগত রাত ১২টা ৫২ মিনিটের সময় ডামুড্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি মাইক্রোবাস থামানোর চেষ্টা করছেন কয়েক ব্যক্তি। তখন ওই মাইক্রোবাসটি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন অপহরণকারীরা। এ সময় আরও কিছু মানুষ সড়কের মধ্যে মাইক্রোবাসটি আটকে দেন। তখন ভেতর থেকে কয়েক ব্যক্তি বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তখন চারজনকে মারধর করেন।

অপহরণের শিকার ব্যবসায়ী ফয়সাল বলেন, ‘আমরা কাপড় ব্যবসায়ী। রাতে নামাজ পড়ার জন্য দোকান বন্ধ করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। দারুল আমান বাজারের কাছে মদন ব্যাপারীর বাড়ির সামনে পৌঁছালে হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস ও একটি মোটরসাইকেল আমাদের গতি রোধ করে। ওই গাড়ি থেকে চারজন নেমে আমাদের মাইক্রোবাসে তুলে ফেলেন। পরে হাতে পুলিশের হাতকড়া পরিয়ে দেন। টাকা চান। জানে বাঁচতে চাইলে ২০ লাখ টাকা দিতে বলেন। পরে আমরা ১০ লাখ টাকা দিতে রাজি হই। তবু আমাদের লোহার রড দিয়ে পেটান, কিল–ঘুষি মারেন।’

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য জড়িত, এমন অভিযোগে মামলা হয়েছে। তিনজন আটক হয়েছেন, একজন পালিয়ে গেছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাঁদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য চাকরিচ্যুত। অন্যরা বাহিনীতে আছেন। তাঁরা কীভাবে এখানে এলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিয়ানমারে ভূমিকম্প: ৬০ ঘণ্টা পর চারজনকে জীবিত উদ্ধার
  • বাসের বেপরোয়া গতি কেড়ে নেয় তিন সহোদরের প্রাণ
  • শরীয়তপুরে দুই ব্যবসায়ীকে অপহরণ: ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৭ জনের নামে মামলা