চারদিন পর মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠি আরাকান আর্মির হেফাজত থাকা দুটি পণ্যবাহী কার্গো বোট কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে ফেরত আসলেও এখনও একটি পণ্যবাহী বোট ছাড়েনি। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা।    

সোমবার সকাল ১০টায় আটক কার্গোর মধ্য দুটি বোট বাংলাদেশ-মিয়ানমার নাফ নদের জলসীমা নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে পৌঁছে। তবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আরও একটি পণ্যবাহী বোট আরাকান আর্মির হেফাজতে রয়েছে। সেখানে ৩০ হাজার বস্তা মালামাল রয়েছে।

ফেরত আসা দুটি বোটে ২৭ হাজার ৭২২ বস্তা মালামাল রয়েছে। সেগুলো বন্দরের কার্যক্রম শেষে খালাসের প্রস্তুতি চলছে।

টেকনাফ স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা দুটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ঘাটে পৌঁছেছে। এখনও একটি পণ্যবাহী বোট তাদের হেফাজতে রয়েছে। ফেরত আসা বোট দুটির কার্যক্রম শেষে মাল খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

জানতে চাইলে টেকনাফ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘তল্লাশির নামে চারদিন পর দুটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ছেড়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি। এখনও একটি পণ্যবাহী বোট সেখানে রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা টেকনাফে ব্যবসা গুটিয়ে নেবে। ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারে সেজন্য সরকারের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।’

স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেড় মাস পর গত শনিবার ইয়াংগুন থেকে কয়েকজন ব্যবসায়ীর পণ্যবাহী কার্গো বোট টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় নাফ নদের মোহনায় সে দেশের জলসীমানায় নাক্ষ্যংকদিয়া নামক এলাকায় তল্লাশির নামে পণ্যবাহী তিনটি ট্রলার আটকে দেয় আরাকান আর্মি। এর মধ্যে আচার, শুঁটকি, সুপারি, কপিসহ ৫০ হাজারের বেশি বস্তা পণ্য রয়েছে। এসব পণ্য স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শওকত আলী, ওমর ফারুক, মো.

আয়াছ, এমএ হাসেম, মো. ওমর ওয়াহিদ, আবদুর শুক্কুর সাদ্দামসহ অনেকের। সর্বশেষ সোমবার সকালে সাতুরু এবং এমবি হারিকিউ লেছ নামে দুটি পণ্যবাহী বোট ফেরত এসেছে। সেখানে ২৭ হাজার ২২২ বস্তা মালামাল রয়েছে।

এ বিষয়ে আমদানিকারক কায়েছ এন্টারপ্রাইজের মালিক নুরুল কায়েছ সাদ্দাম বলেন, ‘আরাকান আর্মির হাত থেকে দুটি পণ্যবাহী কার্গো বোট ফেরত এসেছে। আরও একটি বোট তাদের হেফাজতে রয়েছে। আমাদের সেখানেও বিভিন্ন পণ্য রয়েছে। এমনিতে রাখাইনে যুদ্ধের পর আমাদের ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। তার উপর এ ধরনের ঘটনা ব্যবসায়ীরা বিপাকে রয়েছে। ফলে এ ধরনের ঘটনা যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য সবার এগিয়ে আসা উচিত।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘পণ্যবাহী দুটি বোট ফেরত এসেছে। এ বিষয়ে আরও খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম আর ক ন আর ম র হ এখনও একট ব যবস য় র

এছাড়াও পড়ুন:

কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম

নব্বই দশকের জনপ্রিয় নায়ক নাঈম। তবে এখন অভিনয়ে নেই। নানা ইস্যুতে আছেন আলোচনায়। ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায় ‘চাচা, হেনা কোথায়?’  সংলাপটি কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। এ সংলাপকে কেন্দ্র করে আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। সংলাপ ও সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন

কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি। নিজের মানসম্মান নিয়ে বেঁচে আছি। সবাই আমাকে এবং আমার পরিবারকে ভালোবাসে। এ ভালোবাসা নিয়েই জীবন চলে যাচ্ছে। 

হঠাৎ করে ভাইরাল হলো ‘‘চাচা, হেনা কোথায়?’ সংলাপটি, এটার সঙ্গে তো আপনিও আলোচনায় এলেন...
দেখুন, ফিল্ম অনেক বড় বিষয়। প্রায় তিন দশক আগেও একটি সিনেমার ডায়ালগ নিয়ে মানুষ এখনও আলোচনা করছে। ‘চাচা, হেনা কোথায়? তার একটি দৃষ্টান্ত। গত এক মাস হলো আমি শুধু দেখছি, কীভাবে এটা পুরো দেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে। এটার দ্বারা প্রমাণ হয়, ভালো সিনেমা, ভালো সংলাপ ও ভালো শিল্পী কতটা দর্শকের মাঝে বেঁচে থাকেন। বিশেষ করে ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমার নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী বাপ্পারাজ-শাবনাজসহ পুরো টিমকে ধন্যবাদ জানাই। শাবনাজ যেহেতু এখন আমার জীবনসঙ্গী। সেই সূত্র ধরেই হয়তো আলোচনায়।

বাপ্পারাজ-শাবনাজ জুটি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
এটা তো পুরো দেশের মানুষের জানা। বাপ্পারাজের মতো অভিনেতা পাওয়া কঠিন। আমার স্ত্রী হিসেবে বলব না, ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমাসহ সব সময়ই ও ভালো অভিনয় করেছে। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। তারা দু’জনই এককথায় অসাধারণ অভিনয়শিল্পী। 

দর্শক তো এখনও আপনাকে অভিনয়ে চায়। অভিনয়ে ফেরার কোনো পরিকল্পনা আছে?
সেটা নির্ভর করবে নির্মাতা ও প্রযোজকের ওপর। তারা যদি আমার ইমেজ, স্টাইল ও প্রেজেন্টেশন নিয়ে ভেবে গল্প বানান আর আমার যদি ভালো লাগে, তাহলে অবশ্যই করব। একটা সময় আমি সিনেমা থেকে অনেক দূরে চলে গেছি। তবে আমি কখনও বলিনি যে, আমি অভিনয় করব না কিংবা সিনেমা নির্মাণ করব না। এখনও আমার ইচ্ছে করে ভালো গল্প নিয়ে একটা সিনেমা বানাব। সিনেমা তো আমার ভেতরে। আমি তো কাজ করতে চাই। ক্যামেরার পেছনে বা সামনে; একটা সময় অবশ্যই আমি করব। তবে সময়টা বলতে পারছি না। 

আমাদের সিনেমা শিল্পকে এগিয়ে আপনার কোনো পরামর্শ আছে কী? 
অনেক ধরনের মানুষ নিয়ে একটা সিনেমা বানাতে হয়। এখানে নির্মাতা, শিল্পী, টেকনিশিয়ানসহ অনেক বিষয় মাথায় রেখে চিন্তা করতে হয়। একটা  ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে কীভাবে; এটা নিয়ে আমার একটা চিন্তা থাকতে পারে। আমার একার উদ্যোগ বা চিন্তা দিয়ে হবে না। এ ক্ষেত্রে সবার সমান প্রচেষ্টা থাকতে হবে। তা হলে একটা ইন্ডাস্ট্রি আপনা আপনিই এগিয়ে যাবে।

আপনি তো সাংস্কৃতিক পরিবারের ছেলে...
হ্যাঁ, আমি নবাব স্যার সলিমুল্লাহর প্রপৌত্র। এজন্য আমি গর্ববোধ করি। উপমহাদেশে ১৯৩৮ সালে কিন্তু ঢাকার নবাব পরিবার থেকেই প্রথম সবাক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। তখন আমাদের পরিবার থেকেই ছিল নির্মাতা, নায়ক ও ক্যামেরাম্যান। অর্থাৎ আমি যে পরিবারে বড় হয়েছি, এটা ছিল একটা সাংস্কৃতিকমনা পরিবার।

সিনেমা হল সংকট নিয়ে কী বলবেন?
আমাদের ভালো সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে তো দর্শক সিনেমা হলে আসবে। ভালো সিনেমা না বানিয়ে দর্শকদের বলব আপনারা হলে আসছেন না কেন? এটা তো ঠিক না। আগে আমাদের ভালো সিনেমা বানাতে হবে। তাহলে দর্শক সিনেমা হলে আসবে। হল এমনিতে বাড়বে। এখানে সবার প্রচেষ্টা থাকতে হবে। কারও একার প্রচেষ্টায় হবে না।

সিনেমার স্বর্ণযুগ কি ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
অবশ্যই সম্ভব। ‘না’ বলে আমার কাছে কথা নেই। তবে টাইম লাগে। সবাই মিলে একযোগ হয়ে যদি একটা প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করাতে পারি, তাহলে সব সম্ভব।

ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র অনেকেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন কিন্তু আপনি গ্রামে চলে গেলেন কেন?
ঢাকায় আমার দাদার বাড়ি আর টাঙ্গাইল নানার বাড়ি। ছোটবেলা থেকে নানার বাড়িতেই আমি বড় হয়েছি। গ্রামের মাটির সঙ্গে তো প্রতিটা মানুষ জড়িত। আমরা বিভিন্ন বিভাগের মানুষ। কর্মজীবনে আমাদের ঢাকায় থাকতে হয়। ঈদের ছুটিতে আমরা কীভাবে বাড়ি চলে যায়! তো কোনো সময় আমি চিন্তাও করিনি যে বিদেশে স্থায়ী হবো। সব সময় ভেবেছি, এ দেশেতে আমার জন্ম, এ দেশের মাটিতে যেন আমার মৃত্যু হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি: রিজভী
  • কাজ না করে আবহাওয়ার দিকে তাকিয়ে কর্মকর্তারা
  • ভারতের কারণে অস্ট্রেলিয়ার পর দ. আফ্রিকাও গেল দুবাইতে
  • চারটি স্থলবন্দর বন্ধ করার সুপারিশ
  • অলাভজনক ও নিষ্ক্রিয় ৪ স্থলবন্দর বন্ধের সুপারিশ
  • অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন ৪ স্থলবন্দর বন্ধের সুপারিশ
  • টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে দেড় মাস ধরে বন্ধ সীমান্ত
  • কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম
  • বিনিয়োগকারী টানছে না শেয়ারবাজার
  • দুই বছরের কাজ শেষ হয়নি ছয় বছরেও