পূবালী ব্যাংক ও ইফাদ মোটরসের চুক্তি
Published: 20th, January 2025 GMT
পূবালী ব্যাংক পিএলসি এবং ইফাদ মোটরস লিমিটেডের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় পূবালী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডধারীরা ইফাদ মোটরসের নির্ধারিত বিক্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে রয়্যাল এনফিল্ড মোটরবাইক কেনার ক্ষেত্রে ২৪ মাস পর্যন্ত ইএমআই সুবিধা পাবেন।
সম্প্রতি এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন পূবালী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.
এ সময় পূবালী ব্যাংক পিএলসির হেড অব কার্ড বিজনেস ও উপ-মহাব্যবস্থাপক এন এম ফিরোজ কামাল; হেড অব কার্ড মার্কেটিং ও সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. আসাদুল্লাহ খান এবং ইফাদ অটোস লিমিটেডের সিএফও সোহাদেব কে দাসসহ উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রবাসে ছুটিহীন মে দিবস
আমরা কমবেশি অনেকেই জানি মে দিবস কেন চালু হয়েছে। তাই এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে যেটা বলার আছে মে দিবস সম্পর্কে জানলেও এটা কয়জনের পালন করার সুযোগ রয়েছে? বা এতে আদৌ কি শ্রমিকদের কোন কল্যাণে এসেছে?
২০১৫ সালে আমি স্টুডেন্ট ভিসায় সাইপ্রাস যাওয়ার পর স্টাডির পাশাপাশি ওয়ার্কশপের কাজে যোগ দিই। প্রথম বছর মনে করেছিলাম ১লা মে সরকারি বন্ধ। মে দিবসের আগেরদিন বসকে বলেছিলাম আগামীকাল আমাদের ছুটি না?
সে হেসে বলল,“মে দিবস’ এটা আবার কি? এ সম্পর্কে তো আমি কিছু জানি না।” আসলেই ঐ দেশের প্রায় লোক মে দিবস সম্পর্কে অবগত নয়। অবগত হবার কথাও না, কারণ মে দিবসটি মূলত বিশেষ যে কারণে চালু করা হয়েছিল ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটির পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে ১২ ঘণ্টা ডিউটি নেই বললেই চলে। ৮ ঘণ্টার বাইরে যা করবে তা ওভারটাইম হিসেবে মজুরি পরিশোধ করা হয়। সেজন্য তারা মে দিবসটিকে এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। ফলে সরকারিভাবে সেদিন কোন ছুটি নেই।
তবে বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও এখনো ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি চালু রয়েছে। শুধু বিশেষ কিছু সেক্টরে ৮ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি। তাই হয়ত আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে মে দিবস নিয়ে এতটা মাতামাতি হয়।
বলছিলাম সাইপ্রাসের কথা— তখন বন্ধুদেরকে মন খারাপ করে বলছিলাম ভাই কী চাকরি করি মে দিবসেও বন্ধ নেই। তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “ভাই তোমার কাজ আছে বলে বন্ধের জন্য চিন্তা কর আর আমাদের যে কাজই নাই। মে দিবস এসব দিয়ে আমরা কী করব?”
আসলেই প্রবাসে একদিন কাজ না থাকা মানে অনেক পিছিয়ে পড়া। সাইপ্রাসে অন্যান্য সরকারি ছুটিগুলিতে বন্ধ দিলেও বেতন দেওয়া হয় না। এখানে দৈনিক ডিউটির উপর বেতন নির্ভর করে। তাই এখানে সরকারি ছুটি পাওয়া মানে লসটা নিজের। সুতরাং এই ‘মে দিবস’ কি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ? নাকি এটি নামেমাত্র?
এরপর যখন ২০২০ সালে আরব আমিরাতে আসলাম এখানেও দেখি একই অবস্থা। মে দিবসে শ্রমিকদের কোন ছুটি নেই। মধ্যেপ্রাচ্যের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী দেশ হলো সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখানে এসে দেখলাম মানুষের প্রতিটা সেকেন্ডের মূল্য আছে। যে যত বেশি কাজ করতে পারে ততবেশি আয়। আরব আমিরাতে যেহেতু এখন কাজের সুযোগ অনেক বেশি, তাই একজন মানুষ চাইলে মাসে ৩০ দিনই কাজ করতে পারে।
এখানে যারা কনস্ট্রাকশন সেক্টর বা বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও গ্রোসারিতে কাজ করে, তারা আদৌ জানে না মে দিবস নামে যে একটা দিবস আছে। কারণ, এ দিবসে কোন বন্ধ নেই এখানেও। এখানে কনস্ট্রাকশন সেক্টরগুলিতে সাধারণ ডিউটি হল ৮ ঘণ্টা। সপ্তাহে একদিন ছুটি রয়েছে। ৮ ঘণ্টার বাইরে ও বন্ধের দিন কাজ করলে তা হল ওভারটাইম। মে দিবসের নামে যদি বন্ধ দিয়ে মালিকপক্ষ ঐ একদিনের বেতন কাটে তাহলে এই মে দিবস কি শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য নাকি অকল্যাণের জন্য- সে প্রশ্ন থেকে যায়!
আবার যারা ব্যবসা করে আরব আমিরাতে, এখানে ব্যবসা করা মানে একদিনে অনেক খরচ একদিন যদি ব্যবসা বন্ধ থাকে তাহলে অনেক টাকা লোকসান এখানে যে অপ্রয়োজনে একদিন ব্যবসা বন্ধ রাখবেন সে সুযোগ নেই। সুতরাং বলা যায় এই মে দিবস কারো পক্ষে গেলেও আবার কারো বিপক্ষে চলে যায়। তাই হয়ত পুঁজিবাদী দেশগুলিতে মে দিবস নামেমাত্র থাকলেও এটি পালন করা হয় না।
বাংলাদেশে যারা মে দিবস নিয়ে বেশি মাতামাতি করছে তারাও বলতে পারবে না এটি তাদের কোন কাজে আসে। একজন রিকশা বা সিএনজি চালক বা সাধারণ দিন মজুর যদি একদিন কাজ করতে না পারে তার পরিবার না খেয়ে থাকবে। এই মে দিবস দিয়ে তার পেট চলবে না। তাই বলা যায় শুধু প্রবাস কেন; দেশেও ছুটিহীন এই মে দিবস।
লেখক : প্রবাসী
ঢাকা/এস